Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Investment

সামনেই অবসর, চিন্তায় রয়েছেন? অবসরের পরে সঞ্চয় করবেন কোন পথে?

খানিক পরিকল্পনা করে চললেই গোটা জীবনের সঞ্চয়কে সঙ্গী করে হেসেখেলে কাটিয়ে দেওয়া যায় অবসর পরবর্তী জীবন। কর্মজীবন থেকে বিরতি নেওয়ার পরে সারা জীবনের সঞ্চয়কে অবসরের সময়ে কী কী উপায়ে কাজে লাগানো যায়?

Saving strategy for retired person

অবসর পরবর্তী সময়ে সঞ্চয়ের দরজা খোলা রাখতে চাইলে কোন দুই প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারেন বিনিয়োগকারীরা? ছবি: ফ্রিপিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:৫১
Share: Save:

অবসর মানেই মাথা ভর্তি একরাশ চিন্তা! অনেকের কাছে অবসাদের আসর! আসলে কর্মজীবনের রোজনামচা থেকে স্বস্তি পেলেও অনেকেই ব্যক্তিগত জীবনে চলার পথে অবসাদে ডুবে যান। নেপথ্যে থাকে হাজার চিন্তা। যাঁদের পেনশন নেই, তাঁদের অবসর পরবর্তী সময়ে মাস গেলে বেতনের মতো সংসার চালানোর টাকা আসারও নিশ্চয়তা নেই। ফলে ভরসা করতে হয় সঞ্চয়ের উপর। জীবনের বাকি সময়টা কী ভাবে কাটবে, সে কথা ভাবতে ভাবতেই কেটে যায় সময়।

অথচ খানিক পরিকল্পনা করে চললেই গোটা জীবনের সঞ্চয়কে সঙ্গী করে হেসেখেলে কাটিয়ে দেওয়া যায় অবসর পরবর্তী জীবন। কিন্তু কী ভাবে? কর্মজীবন থেকে বিরতি নেওয়ার পরে সারা জীবনের সঞ্চয়কে অবসরের সময়ে কী কী উপায়ে কাজে লাগানো যায়? চলুন দেখে নিন —

প্রবীণ নাগরিক সঞ্চয় প্রকল্প

প্রবীণ নাগরিকদের কথা ভেবেই তৈরি করা এই প্রকল্প বেশ জনপ্রিয়। বর্তমানে এই প্রকল্পে ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমা রাখা যায়। ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের মাধ্যমে এই প্রকল্পে টাকা জমা রাখা যায়। প্রকল্পের মেয়াদ ৫ বছর। তবে ৫ বছর পরে তা পুনরায় ৩ বছরের জন্য বিনিয়োগ করা যেতে পারে। সুদের হারও তুলনামূলক ভাবে বেশি। বর্তমানে এই প্রকল্পে সুদের হার রয়েছে ৮.২ শতাংশ। সুদ বাবদ অর্থ প্রতি তিন মাস অন্তর আপনার সঞ্চয় অ্যাকাউন্টে জমা হবে। এই প্রকল্পে অ্যাকউন্ট খুলতে হলে নমিনি করা আবশ্যক।

এই প্রকল্প সম্পর্কিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নীচে আলোচনা করা হল।

১. প্রকল্প গ্রহণের ন্যূনতম বয়স: ৬০ বছর

২. প্রকল্প গ্রহণের সর্বোচ্চ বয়স: কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই

৩. প্রকল্পের মেয়াদ: ৫ বছর

৪. সর্বোচ্চ বিনিয়োগের পরিমাণ : ৩০ লাখ

৫. পেনশন: ত্রৈমাসিক

৬. বর্তমান সুদের হার: বাৎসরিক ৮.২০ শতাংশ

৭. প্রকল্প থেকে অকাল প্রস্থান: আপনি এই প্রকল্প থেকে ইচ্ছে মতো প্রস্থান করতে পারবেন। তবে প্রকল্প গ্রহণের ন্যূনতম ১ বছর পরে। সেই ক্ষেত্রে ১.৫ শতাংশ জরিমানা হবে। অর্থাৎ, আপনার মোট বিনিয়োগের ৯৮.৫ শতাংশ ফেরত পাবেন।

উদহারণস্বরূপ দেখে নেওয়া যাক কত বিনিয়োগে কত টাকা সুদ পাবেন:

Saving strategy for retired person

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

প্রধানমন্ত্রী ভায়া বন্দনা যোজনা

এই প্রকল্পের মেয়াদ ১০ বছর। বলে রাখা ভাল, এই প্রকল্পটি বিমাভিত্তিক। এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পটি সঞ্চালনা করে লাইফ ইনশিয়োরেন্স কর্পোরেশন (এলআইসি)। এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করলে মাসিক আয়েরও ব্যবস্থা আছে। বাজারচলতি অন্যান্য প্রকল্পের তুলনায় এর রিটার্ন বেশ ভাল। যে হেতু এই প্রকল্পটি বিমাভিত্তিক, সে হেতু সংশ্লিষ্ট সঞ্চয়কারীর বিশেষ কিছু সুযোগও আছে।

এই প্রকল্প সম্পর্কিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নীচে আলোচনা করা হল:

১. প্রকল্প গ্রহণের ন্যূনতম বয়স: ৬০ বছর

২. প্রকল্প গ্রহণের সর্বোচ্চ বয়স: কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই

৩. প্রকল্পের মেয়াদ: ১০ বছর

৪. সর্বোচ্চ বিনিয়োগের পরিমাণ: ১৫ লাখ

৫. পেনশন: মাসিক, ত্রৈমাসিক, অর্ধবার্ষিক, বার্ষিক এই চারটির মধ্যে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোনও একটি নির্বাচন করতে পারবেন।

৬. বর্তমান সুদের হার: বাৎসরিক ৭.৪ শতাংশ

৭. লোনের সুবিধা: প্রকল্পটি গ্রহণের ৩ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরে আপনার মোট বিনিয়োগের ৭৫% অবধি লোন নিতে পারবেন।

৮. প্রকল্প থেকে অকাল প্রস্থান: শারীরিক সমস্যা বা অতি প্রয়োজনীয় কারণবশত আপনি এই প্রকল্প থেকে প্রস্থান করতে পারবেন। তবে সেই ক্ষেত্রে ২ শতাংশ জরিমানা হবে অর্থাৎ আপনার মোট বিনিয়োগের ৯৮ শতাংশ ফেরত পাবেন।

উদহারণস্বরূপ দেখে নেওয়া যাক কত বিনিয়োগে কত টাকা পেনশন পাবেন:

Saving strategy for retired person

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

অবসর পরবর্তী সময়ে সঞ্চয়ের দরজা খোলা রাখতে চাইলে এই দুই প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারেন বিনিয়োগকারীরা। দুই প্রকল্পের ক্ষেত্রেই ভাল রিটার্নের সুযোগ রয়েছে। তবে এখানেই শেষ নয়। অবসরের পরে যদি জীবনকে উপভোগ করতে চান তা হলে অবশ্যই আগেভাগে পরিকল্পনা করা জরুরি। প্রয়োজনে কোনও ভাল সঞ্চয় উপদেষ্টার কাছে যান ও পরামর্শ নিন।

মনে রাখবেন, আপনার বয়স ৬০ বছর পার হওয়ার পরে খাতায়কলমে আপনাকে প্রবীণ বলে গণ্য করা হলেও আপনার সামনে কিন্তু আরও ২৫ থেকে ৩০ বছর জীবন রয়েছে। গোটা জীবন কাজ করার পরে এই সময়টা তো উপভোগ করতেই হবে। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরও ভাঙবে। অসুস্থতা বাড়বে। তাই জীবন উপভোগ করার সঙ্গে সঙ্গে বাকি সব রকম বয়সজনিত সমস্যার ব্যবস্থাও করতে হবে। সেই কারণেই সঞ্চয়কে সর্বদা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত। শেয়ার হোক বা ঋণপত্র কিংবা ফিক্সড ডিপোজিট— কোন খাতে কী অনুপাতে টাকা রাখবেন যাতে আপনার লাভ হয় ঠিকঠাক, সেই বিষয়টি অবসরের আগে থেকেই অঙ্ক কষে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়া উচিত। আর সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়েই আপনাকে উচিত উপদেশ দিতে পারে সঞ্চয় উপদেষ্টা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Investment savings retirement
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE