Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ফেড রিজার্ভ সুদ বাড়ালেও শঙ্কা এড়িয়ে উঠল সূচক

আমেরিকার শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভের সুদ বাড়ানোর খবর যে ভারতের শেয়ার বাজারে কোনও বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারবে না, তা কিছু দিন ধরেই বলে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা। বাস্তবে ঘটলও তাই।

মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ।

মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ০২:৫২
Share: Save:

আমেরিকার শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভের সুদ বাড়ানোর খবর যে ভারতের শেয়ার বাজারে কোনও বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারবে না, তা কিছু দিন ধরেই বলে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা। বাস্তবে ঘটলও তাই। মার্কিন মুলুকে সুদ বৃদ্ধির ঘটনাকে পাশে সরিয়ে রেখে, বৃহস্পতিবার এক লাফে সেনসেক্স বাড়ল ৩০৯.৪১ পয়েন্ট। দাঁড়াল ২৫,৮০৩.৭৮ অঙ্কে। ডলারে টাকার দামও ৩১ পয়সা বেড়েছে। দিনের শেষে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৬৬.৪২ টাকা, যা গত তিন সপ্তাহে সর্বোচ্চ।

বুধবার ফেড রিজার্ভ ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ বাড়ানোর কথা জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের এমডি-সিইও আশিসকুমার চহ্বাণ জানান, ‘‘আগামী মাসগুলিতে বাজারে অস্বাভাবিক ওঠা-পড়া দেখা যাবে না বলেই মনে হয়। কারণ, এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাশিত ছিল বলেই তা মোকাবিলা করার আগাম পরিকল্পনা ছকে নিয়েছেন লগ্নিকারীরা।’’ প্রসঙ্গত, বাজারে আশঙ্কা ছিল, আমেরিকা সুদ বাড়ালে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি ভারতের বাজার থেকে পুঁজি ফেরাবে। কারণ এক দিকে, স্বদেশে লগ্নি করা তাদের পক্ষে লাভজনক হবে। আর অন্য দিকে, নিজেদের দেশে করা ঋণে সুদের খরচ মেটাতে গুনতে হবে বাড়তি খরচও। কিন্তু এ বার ভারতের শেয়ার বাজার মহলের আশা, ফেড মাত্র ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ বাড়ানোয় প্রভাব তেমন বেশি হবে না।

অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, ‘‘সুদ বাড়বে কি বাড়বে না, এ নিয়ে জল্পনার শেষ হল। নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে এ বার মানিয়ে নিতে হবে লগ্নিকারীদের।’’ কেন্দ্রের অর্থনীতি বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাস জানান, ভারত প্রস্তুতই ছিল। ফেড সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এর পর বরং ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির পক্ষে নীতি ঠিক করা সহজ হবে। মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যম এর মন্তব্য, ‘‘ভারতের অর্থনীতি তুলনায় বেশি সুরক্ষিত। তাই সুদ বাড়ার প্রভাবও এখানে যথেষ্ট কম।’’ এক কথায় কেন্দ্র মনে করছে, ফেডের সিদ্ধান্ত যুঝতে পারবে ভারত। এর জন্য উপযুক্ত ‘রক্ষাকবচ’ তার রয়েছে। ফলে প্রভাব হবে সামান্যই। এমনকী তাদের ধারণা, বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির তরফে বড় মাপের তহবিল সরিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনাও নেই।

একই মত বাজার বিশেষজ্ঞদের। স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখের মতে, ‘‘আমেরিকায় সুদ বাড়তে পারে বলে দীর্ঘ দিন ধরে জল্পনা চলছিল। ফলে বিষয়টি গা সওয়া হয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া, সুদ যতটুকু বেড়েছে, তাতে লগ্নি তুলে নিয়ে বিনিয়োগকারীরা সে দেশের ঋণপত্রে লাগাবে, এই আশঙ্কা অমূলক।’’ অবশ্য বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ঠিক কী করবে, তা নিয়ে এখনও আশঙ্কা রয়েছে বাজারের একাংশে। সংবাদ সংস্থার খবর, ওই সব সংস্থা গত বুধবারও ভারতে ৫০০ কোটি টাকার বেশি শেয়ার বেচেছে। তবে কমলবাবুর বিশ্বাস, ‘‘তারা শীঘ্রই আবার ভারতের বাজারে ফিরে আসবে।’’

আমেরিকায় সুদ বৃদ্ধির কারণে নয়, ভারতীয় সংসদে পণ্য-পরিষেবা কর বিল পাশ নিয়ে জটিলতায় বরং বেশি চিন্তিত বিশেষজ্ঞ মহলের অধিকাংশই। কারণ, তাঁদের মতে, বাজার চাঙ্গা হওয়ার ক্ষেত্রে এই বিল পাশ হওয়া বিশেষ জরুরি।

ভারতে এ নিয়ে টানা চার দিন বাড়ল বাজার। সূচক উঠল মোট ৭৬০ পয়েন্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

interest rate sensex hike federal reserve
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE