Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মাথায় এ বার কেন্দ্রের ‘শক্তি’

শক্তিকান্ত দাসকেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ করল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। উর্জিত পটেলের পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই।

শক্তিকান্ত দাস। ছবি: পিটিআই।

শক্তিকান্ত দাস। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৪৬
Share: Save:

নোট বাতিলের সময় সাদা চুলের এই আমলাকে গোটা দেশ চিনে ফেলেছিল। মানুষের সমস্যা বুঝে নানা রকম নিয়ম বদল, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেওয়া— এ সব আর্থিক বিষয়ক সচিব হিসেবে তাঁকেই সামলাতে হয়েছিল।

সেই শক্তিকান্ত দাসকেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ করল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। উর্জিত পটেলের পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই। এবং আর পেশাদার অর্থনীতিবিদ নয়, শীর্ষ ব্যাঙ্কের প্রধান পদে পোড়খাওয়া আমলার উপরেই ভরসা রাখল কেন্দ্র।

মোদী জমানাতেই রঘুরাম রাজন প্রথম দফার মেয়াদ ফুরোনোর পরে আর গভর্নর পদে থাকতে চাননি। তার জায়গায় আসা উর্জিত প্রথম দফার মেয়াদ শেষের ৯ মাস আগেই পদত্যাগ করলেন। এমআইটি থেকে গবেষণা করা, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রঘুরাম বা লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স, অক্সফোর্ডের প্রাক্তনী উর্জিতের তুলনায় শক্তিকান্ত দাস স্রেফ ইতিহাসে এমএ। ফলে তাঁর নিয়োগে অনেকেই ভ্রু কুঁচকেছেন।

সরকারি সূত্রের অবশ্য যুক্তি, অর্থনীতিবিদ না হলেও শক্তিকান্ত বরাবরই তামিলনাড়ু ও কেন্দ্রীয় সরকারে আর্থিক দফতর সামলেছেন। তিনি ইউপিএ আমলে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। আবার বর্তমান অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিরও ঘনিষ্ঠ তিনি। আর্থিক বিষয়ক সচিবের পদ থেকে অবসরের পর জি-২০-তে ভারতের শেরপা বা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। ওড়িশার এই অফিসার এখন পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সদস্য।

কেন্দ্রের আমলা মহলের একাংশের মতে, শক্তিকােন্তর আসল উপযোগিতা অন্য জায়গায়। তা হল তাঁর ঐকমত্য তৈরির ক্ষমতা। কেন্দ্রের সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সংঘাতের আবহে তাঁর এই ক্ষমতা কাজে দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, জেটলির অর্থ মন্ত্রক যখন লোকসভা ভোটের আগে খয়রাতি করতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে থাকা উদ্বৃত্ত অর্থের ভাগ চাইছে, তখন সেই জেটলির অধীনে সচিব হিসেবে কাজ করা শক্তিকান্তের পক্ষে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বাধীনতা বজায় রাখা সম্ভব হবে তো?

নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্তের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘শক্তিকান্ত অসাধারণ টিম লিডার, ঐকমত্য তৈরিতেও দারুণ। উনি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বাধীনতা বজায় রেখেই আর্থিক বৃদ্ধিতে নজর দেবেন।’’

এ দিকে উর্জিতের পদত্যাগের পরের দিনই কেন্দ্রীয় সরকার নতুন গভর্নর নিয়োগ করে ফেলায় আর একটি প্রশ্ন উঠেছে। তা হল, সরকার কি উর্জিতের পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা আগে থেকেই জানত? একটি সূত্রের দাবি, উর্জিত আগেই পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তাঁকে বিধানসভা ভোট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলা হয়। যদিও সরকারের কেউই এর সত্যতা স্বীকার করেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shaktikanta Das RBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE