স্বাস্থ্য সচেতনতার হাত ধরে দেশে বাড়ছে চালের তুষ থেকে তৈরি তেলের চাহিদা। যার বিপুল জোগান রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। ফলে অন্যান্য শিল্পে যুক্ত রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা এ বার চারটি অশোধিত তুষ তেলকল বসাচ্ছে বর্ধমানে। লগ্নি হবে ৬০ কোটি। কাজ পাবেন অন্তত ৩০০জন।
তুষ বা ধানের খোসা মেলে মূলত চালকলে। রাজ্যে প্রায় ৫৫০টি আধুনিক চালকল থাকায় এর জোগান প্রচুর। রাজ্য শিল্প দফতরের এক কর্তা জানাচ্ছেন, পুরনো কলগুলি আধুনিক করা হচ্ছে বলে সরবরাহ বাড়ছে সেখান থেকে। অঢেল তুষ মেলায় তেলও তৈরি হচ্ছে বিপুল। সেই টানেই এ ক্ষেত্রে নতুন লগ্নি পাচ্ছে রাজ্য। ওই চার কারখানায় তুষ থেকে অশোধিত তেল বার করা হবে। শোধনের পরে খাওয়ার উপযোগী করে বেচা হবে বাজারে। ওই কর্তার দাবি, রাজ্যে বছরে ১০ লক্ষ টন তুষ পাওয়া যাচ্ছে। তা থেকে তেল উৎপাদনও বাড়ছে গড়ে ২০% হারে।
সেই কারণেই এক দিকে দেশের বেশ কিছু বড় ব্র্যান্ড বর্ধমানের বিভিন্ন শোধনাগার থেকে তুষ-তেল প্যাকেজিং করে নিজেদের নামে বাজারে বেচছে। অন্য দিকে, রাজ্যের বহু শিল্প সংস্থাও এ ক্ষেত্রে পুঁজি ঢালছে।
পূর্বাঞ্চলের তেল শিল্প ও বাণিজ্য সমিতির সভাপতি অশোক সেথিয়া বলছেন, শুধু দেশের অন্দরে চাহিদা বাড়া নয়, বিশ্ব বাজারেও তুষ থেকে তৈরি তেল রফতানির সুযোগ তৈরি হওয়া নতুন লগ্নি আসার কারণ। তাঁর দাবি, ভোজ্য তেল শিল্পে ইতিমধ্যেই কয়েক’শ কোটি টাকার লগ্নি হয়েছে এখানে। হলদিয়া, বর্ধমানে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু তুষ তেলকল। ৩৫টির মতো এখন রমরমিয়ে চলছে, দাবি সেথিয়ার।
প্রসঙ্গত, তুষ তেলে ভিটামিন-ই ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। অন্য ভোজ্য তেলের তুলনায় ফ্যাটি অ্যাসিডও কম। যে কারণে স্বাদে ও গন্ধে সরষের তেলের থেকে কিছুটা কম নম্বর পেলেও স্বাস্থ্য সচেতন গৃহস্থের ঘরে তুষ-তেলের চাহিদা বাড়ছে। এর ব্যবহার বাড়ছে মুখরোচক খাবার তৈরির শিল্পেও।