ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি সংস্থাকে ৫৯ মিনিটের মধ্যে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণে নীতিগত সায় দিতে নতুন প্রকল্প চালু করার কথা ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। এর জন্য নতুন পোর্টালও চালু হয়েছে। কেন্দ্রের এই ঘোষণায় প্রাথমিক ভাবে খুশি ছোট শিল্প মহল। যদিও একই সঙ্গে পুরনো অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তাদের প্রশ্ন, পোর্টাল চালু হলেও বাস্তবে সহজতর পদ্ধতিতে ঋণ মিলবে তো? বন্ধক ছাড়া ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রেই বা কতটা বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে?
অর্থ মন্ত্রকের দাবি, ঋণের প্রস্তাব খতিয়ে দেখতে আগে ২০-২৫ দিন সময় লাগত। নতুন প্রকল্পে শর্ত পূরণ করলে ওই পোর্টালের মাধ্যমে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণের ছাড়পত্র মিলবে ৫৯ মিনিটে। আর সপ্তাহখানেকের মধ্যে তা বণ্টন করা হবে।
কেন্দ্রের এই ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েও ছোট শিল্পের সংগঠন ফ্যাকসি-র প্রেসিডেন্ট হিতাংশু গুহ বক্তব্য, ‘‘প্রস্তাবটি খুবই ভাল। তবে ছোট সংস্থাকে সহজে ঋণ বণ্টন নিয়ে আগেও সরকারি স্তরে বহু পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত হয়েছে। তা সত্ত্বেও ঋণ পেতে ভুগতে হয়েছে তাদের। যেমন, ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমে বন্ধক ছাড়া ঋণ দেওয়ার কথা বলা হলেও, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা মেলে না।’’
আর এক সংগঠন ফসমি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট গৌতম রায় আবার বলেন, ‘‘স্থায়ী আমানত জমা দিলে অনেক সময়ে দ্রুত ঋণের অনুমোদন মেলে। কিন্তু যাঁদের বন্ধক দেওয়ার ক্ষমতা নেই তাঁদের কী হবে?’’
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ছোট সংস্থাকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলে আসছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। যুক্তি, ছোট সংস্থার মাধ্যমেই কর্মসংস্থান হয় সবচেয়ে বেশি। প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে গত ৩ বছরে ৬ লক্ষ কোটি টাকা বিলি করা হয়েছে তাদের।
ছোট শিল্পেরও বক্তব্য, ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলিই কর্মসংস্থানের মূল উৎস। সহজে ঋণ পেলে তাদের ব্যবসা বাড়বে। বাড়বে চাকরির সুযোগও। কিন্তু প্রশাসনের উপর মহলের নতুন ঋণ প্রকল্পের ভাবনা নীচের স্তর পর্যন্ত কতটা পৌঁছবে, সে ব্যাপারে দ্বিধা রয়ে গিয়েছে তাদের।
গৌতমবাবুর অভিযোগ, আবেদনপত্রে ভুল হলে আলোচনার সুযোগ না দিয়েই তা বাতিল করার ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, ‘‘ছোট সংস্থা সব কিছু না-ও জানতে পারে। এমন ক্ষেত্রে অন্তত সেই ভুল শুধরে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া জরুরি।’’
ব্যাঙ্কিং শিল্পের অবশ্য পাল্টা দাবি, অনেক সংস্থাই ঠিকমতো ঋণ শোধ করে না। ফলে অনুৎপাদক সম্পদ বাড়ে। ছোট সংস্থার অনুৎপাদক সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে সম্প্রতি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। এই সমস্যার কথা উড়িয়ে দেননি গৌতমবাবু। কিন্তু তাঁদের দাবি, বন্ধকহীন ঋণের সুরক্ষা কেন্দ্রই দেয়। কিন্তু তার পরেও সেই ঋণ পেতে সমস্যায় পড়ে শিল্প।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy