অতিমারির জেরে অর্থনীতি ধাক্কা খাওয়ায় মাথা নামিয়েছে রাজস্ব আদায়। অথচ করোনা মোকাবিলায় খরচ বেড়েছে। চওড়া হচ্ছে রাজকোষ ঘাটতি। তা পূরণ করতে গিয়ে বেড়ে চলেছে ধারের অঙ্কও। কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্যগুলিরও। ফলে তাদের মাথা পিছু ঋণও বাড়ছে বিপুল ভাবে। স্টেট ব্যাঙ্কের গবেষণা শাখা এসবিআই রিসার্চের সমীক্ষায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য। সেখানে জানানো হয়েছে, গত তিন বছরে (২০২০-২১ অর্থবর্ষ পর্যন্ত) দেশের ১৩টি বড় রাজ্যের মাথা পিছু গড় ধারের পরিমাণ বেড়েছে ১৬.৭%। সবচেয়ে বেশি চলতি অর্থবর্ষে। অথচ, মাথা পিছু আয় বেড়েছে ৭.১%।
এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে, রাজ্যগুলির অতিরিক্ত ঋণের ফাঁদে জড়িয়ে পড়া নিয়ে সম্প্রতি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। জানিয়েছিল, এ ভাবে ঋণের পরিমাণ বাড়তে থাকলে তাকে সামলাতে গিয়ে মূলধনী খরচ কমাতে হবে রাজ্যগুলিকে। তাতে আর্থিক বৃদ্ধি বাধা পেতে পারে। ধাক্কা খেতে পারে রাজ্যগুলির আর্থিক স্থিতিশীলতা।
এসবিআই রিসার্চের রিপোর্টে ব্যাখ্যা, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে রাজ্যগুলির সামগ্রিক ধার ছিল বাজেটের ২.৬%। পরের দু’টি বছরে প্রত্যাশিত জায়গায় পৌঁছয়নি রাজস্ব। সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছে অতিমারির সংক্রমণ সামাল দিতে লকডাউনের জেরে। ফলে ২০২০-২১ অর্থবর্ষের বাজেটে যা প্রত্যাশা করা হয়েছিল তার অনেকটাই পিছনে থেকে গিয়েছে রাজ্যের জিএসটি বাবদ আয়, তা কম হয়েছে ২১.২%। ভ্যাট এবং বিক্রয় কর খাতেও ১৪.৭% আয় কমেছে। মূল কারণ, অর্থবর্ষের প্রথম কয়েকটি মাসে জ্বালানির বিক্রি কমা। এই ঘাটতির বড় অংশ ধার করে মেটাতে হচ্ছে রাজ্যগুলিকে। যার ফলে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের ২.৮% থেকে চলতি অর্থবর্ষে তা বেড়ে হতে চলেছে ৪.৫%।
এরই মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য হল, চলতি অর্থবর্ষে সারা দেশের মাথা পিছু আয় ৭২০০ টাকা কমলেও কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের মাথা পিছু রাজ্য জিডিপি ১০,০০০ টাকা বেড়েছে। তবে ঘাটতি কমাতে চলতি অর্থবর্ষে ১১.৩% খরচ ছাঁটাই করতে হয়েছে রাজ্যগুলিকে।