Advertisement
E-Paper

অনাদায়ি ঋণ নিয়ে শীর্ষ ব্যাঙ্কের বিজ্ঞপ্তি খারিজ সুপ্রিম কোর্টে

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। যার বিরুদ্ধে একাধিক সংস্থা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৯ ০৫:১৭
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

দু’হাজার কোটি টাকা বা তার বেশি ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে দেউলিয়া আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের জারি করা বিজ্ঞপ্তিকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালত এক রায়ে জানিয়েছে, এই সব খেলাপিদের সকলকে একই মাপকাঠিতে বিচার করা ঠিক নয়। বরং প্রতিটি ঘটনা আলাদা আলাদা ভাবে বিশ্লেষণ করে দেউলিয়া আইন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। শুধু তাই নয়, এ জন্য নির্দেশ জারি করার আগে কেন্দ্রের অনুমোদনও জরুরি। এই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত, পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে আরবিআই। রায় খতিয়ে দেখব আমরাও।’’

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। যার বিরুদ্ধে একাধিক সংস্থা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে। এ দিন তারই রায় ঘোষণা করল শীর্ষ আদালত। বিশেষজ্ঞদের মতে, আদালতের বক্তব্য, ঋণ খেলাপিদের মধ্যেও ফারাক রয়েছে। কেউ ইচ্ছে করে ঋণ শোধ করে না, কেউ আবার বিভিন্ন দিক সামলাতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃত ভাবে ধার বাকি ফেলে। কিছুটা বাধ্য হয়েই। যেমন, বেশ কিছু বিদ্যুৎ সংস্থা রয়েছে, যাদের উৎপাদন কয়লার অভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে ঋণের কিস্তি ঠিক সময়ে শোধ করতে পারছে না।

রায়ের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ব্যাঙ্কিং রেগুলেশন আইনের ৩৫এএ ধারা অনুযায়ী রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ক্ষমতা রয়েছে অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যা মেটাতে ব্যবস্থা নেওয়ার। কিন্তু তা হতে হবে আলাদা আলাদা ঘটনা ভিত্তিক। ঋণ খেলাপির তকমা দিয়ে সমস্ত সংস্থাকে একই পঙ্‌ক্তিতে ফেলে দেউলিয়া আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার শীর্ষ ব্যাঙ্ককে দেয়নি ওই আইন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তবে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, এর ফলে দেউলিয়া আইনে অনুৎপাদক সম্পদ আদায়ের প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে কি? এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর পি আর রাজাগোপাল বলেন, ‘‘মনে হয় না এই রায় ব্যাঙ্কগুলির পক্ষে দেউলিয়া আইনে ব্যবস্থা নেওয়ায় বাধা সৃষ্টি করবে না।’’ যদিও বিদ্যুৎ-সহ একাধিক শিল্প অবশ্য ওই রায়ে স্বস্তি পাবে বলে মত দেউলিয়া আইন বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই। ইনস্টিটিউট অব কোম্পানি সেক্রেটারিজের প্রাক্তন সভাপতি ও দেউলিয়া আইন বিশেষজ্ঞ মমতা বিনানি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট ওই রায় না দিলে বিদ্যুৎ, জাহাজ এবং পরিকাঠামো শিল্পের আরও বহু সংস্থার এনসিএলটিতে যাওয়া অবধারিত ছিল। তারা এখন ঋণ শোধের জন্য প্রস্তুত হতে পারবে। সময় নেওয়া, ঋণ ঢেলে সাজা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনার সুযোগ পাবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।’’

তবে ওই রায় ঘিরে আরও বেশ কিছু প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে বিভিন্ন মহলে। যেমন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে যে-সব সংস্থার বিরুদ্ধে এনসিএলটিতে গিয়েছে ঋণদাতারা, সেগুলি কি খারিজ হবে? ট্রাইবুনালে যে সব খেলাপি সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাদেরই বা কী হবে?

বিনানির দাবি, ‘‘দেউলিয়া আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার শর্তই হল, সংস্থাটি সত্যিই ঋণ খেলাপি কি না। ফলে এনসিএলটিতে চলা মামলাগুলি যেমন চলছে তেমন চলবে বলেই মনে করি। আসলে ২,০০০ কোটি টাকা বা তার বেশি ঋণ খেলাপি যে কোনও সংস্থার বিরুদ্ধে নির্বিচারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে নির্দেশ দিয়েছিল, সেটিই বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট।’’

তা ছাড়া বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, যখন এনসিএলটি সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, তখন তা নেওয়া হয়েছে প্রচলিত আইন মেনেই। তা পরে বদলালেও, আগে নেওয়া ব্যবস্থা বাতিলের প্রশ্ন ওঠে না।

Supreme court Reserve Bank সুপ্রিম কোর্ট রিজার্ভ ব্যাঙ্ক
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy