Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

জেসপ, ডানলপে এ বার সাসপেনশন অব ওয়ার্ক

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকা জেসপ ও ডানলপে এ বার সাসপেনশন অব ওয়ার্ক ঘোষণা করলেন সংস্থার মালিক রুইয়া গোষ্ঠী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও সাহাগঞ্জ শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৬ ০৪:০২
Share: Save:

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা।

দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকা জেসপ ও ডানলপে এ বার সাসপেনশন অব ওয়ার্ক ঘোষণা করলেন সংস্থার মালিক রুইয়া গোষ্ঠী। তা-ও আবার গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সংস্থা দু’টি অধিগ্রহণে রাজ্য বিধানসভায় বিল পাশ হওয়ার ঠিক এক মাসের মাথায়। কর্তৃপক্ষ তাঁদের বিজ্ঞপ্তিতে বিধানসভা নির্বাচনের মুখে এই ঘোষণা করে তার প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, শ্রমমন্ত্রী ও চারটি কর্মী ইউনিয়নকে। সংস্থা দু’টির কর্মী ইউনিয়নের দাবি, ২৭ মার্চ এই ঘোষণা করা হলেও প্রতিলিপি তাদের হাতে এসেছে মঙ্গলবার। প্রসঙ্গত, ২০১৪-র মে মাস থেকে দমদমের জেসপ কারখানায় উৎপাদন বন্ধ। হুগলির সাহাগঞ্জের ডানলপে ২০১১-র অক্টোবর থেকে। এই মুহূর্তে জেসপে কর্মী-অফিসার রয়েছেন ৫০৯ জন, ডালনপে ৪০০-র ওপর।

জেসপের সিটু অনুমোদিত জেসপ মজদুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অসিত সেন জানান, ‘‘এর জেরে কর্মীদের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। সাসপেনশনের বিরুদ্ধে রাজ্যের শ্রম দফতরের দ্বারস্থ হচ্ছি।’’

রাজ্যের একমাত্র টায়ার তৈরির সংস্থা হুগলির সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানায় মাঝে ঘটা করে কর্তৃপক্ষ কারখানার দরজা খুললেও আসলে উৎপাদন শুরুই হয়নি। শ্রমিকেরাও বকেয়া পাননি। রাজ্য সরকার বারে বারেই কর্তৃপক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন উৎপাদন চালু করার জন্য। কিন্তু এ যাবৎ তা কার্যকর হয়নি। কিন্তু কেন হঠাৎ এই নোটিস?

ওয়াকিবহাল মহলের ব্যাখ্যা, সম্প্রতি রাজ্য সরকারি কারখানাটি অধিগ্রহণের কথা ঘোষণা করে সেই সংক্রান্ত প্রক্রিয়াও শুরু করে। তবে এই বিল রাজ্য বিধানসভার শেষ অধিবেশনের শেষ দিনে পাশ হলেও সেটি এখনও আইনে পরিণত হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রের ইঙ্গিত, অধিগ্রহণ যেহেতু যৌথ তালিকাভুক্ত, তাই কেন্দ্রীয় আইনের সঙ্গে সংঘাতের জেরেই বিষয়টি আপাতত ঝুলে রয়েছে। কোনও বেসরকারি সংস্থা অধিগ্রহণের প্রশ্নে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লাগে। তার আগে শ্রমিকদের আস্থা ফেরাতে রাজ্য সরকার মাসে মাথাপিছু দশ হাজার টাকা অনুদান চালু করে। এক কিস্তি অনুদান ইতিমধ্যেই শ্রমিকেরা পেয়ে গিয়েছেন। হুগলি জেলার আইএনটিটিইউসি সভাপতি বিদ্যুৎ রাউত বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার যখন পদক্ষেপ করছে ডানলপ নিয়ে নতুন কিছু করার, তখন এই সিদ্ধান্ত কতৃর্পক্ষ কেন নিলেন তা পরিষ্কার নয়। তবে সরকার কঠোর হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে শ্রমিকদের জন্য পদক্ষেপ করবে। ইতিমধ্যেই শ্রমিকেরা ১০ হাজার টাকা অনুদান পেয়ে গিয়েছেন।’’

এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। জেসপ কর্তৃপক্ষ তাঁদের বিজ্ঞপ্তিতে অবশ্য অভিযোগ এনেছেন যে, দীর্ঘ দিন ধরেই দমদম কারখানায় বহিরাগতদের উপদ্রব চলছিল। আচমকা ধর্মঘট ও ৯০ দিনের ধর্নাও চলে ২০১২-র অগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে। ফলে হাতে থাকা বরাত জোগান দিতে না-পেরে সংস্থার আর্থিক অবস্থা পুরোপুরি বেহাল হয়ে প়ড়ে। ২০১৪-র মার্চে কারখানা চত্বরে একটি হত্যাকাণ্ডও ঘটে। সব মিলিয়ে তাঁরা ১৫ মে ২০১৪ থেকে উৎপাদন বন্ধ রাখতে বাধ্য হন বলে জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

suspension work notice dunlop
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE