E-Paper

কুম্ভে টানা বন্ধ ট্যানারি, গন্তব্য ফের পশ্চিমবঙ্গ

এর আগে কসাইখানা নিয়ে সরকারি কড়াকড়ির জেরে উত্তরপ্রদেশে প্রায় ৩০০ ট্যানারি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এ বার তারা আরও চাপে।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:২৪

গোরক্ষকদের তাণ্ডব তো ছিলই। তার উপরে উত্তরপ্রদেশ সরকারের নির্দেশে কসাইখানা নিয়ে কড়াকড়ি শুরু হওয়ায় কাঁচামালে টান পড়েছিল সে রাজ্যের ট্যানারিগুলির। সেই সময়ে তাদের অনেকেই পশ্চিমবঙ্গে পা রাখার কথা ঘোষণা করেছিল। আর এ বার কুম্ভমেলার জন্য তিন মাস ট্যানারি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। ফলে কলকাতামুখী হচ্ছে আরও ট্যানারি।

এর আগে কসাইখানা নিয়ে সরকারি কড়াকড়ির জেরে উত্তরপ্রদেশে প্রায় ৩০০ ট্যানারি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এ বার তারা আরও চাপে। কুম্ভ মেলা উপলক্ষে ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ মার্চ, তিন মাস সমস্ত ট্যানারি বন্ধ রাখতে বলেছে বিজেপি সরকার। অভিযোগ, ট্যানারির বর্জ্য থেকে দূষণ পৌঁছচ্ছে ত্রিবেণী পর্যন্ত। যেখানে কুম্ভ মেলার পূণ্যস্নান। গত বার কসাইখানার উপরে নিষেধাজ্ঞার পরে পশ্চিমবঙ্গে লগ্নি করতে আসেন উত্তরপ্রদেশের অনেক চর্ম ব্যবসায়ী। এখনও তাঁদের জন্য জমি দেখার কাজ চলছে। এ বারে কুম্ভ মেলার জন্য ট্যানারি বন্ধের নির্দেশ পেয়ে ফের কলকাতায় এসে ট্যানারি ভাড়া নিতে শুরু করেছেন তাঁরা। কেউ তা কিনেও নিচ্ছেন।

লেদার এক্সপোর্ট কাউন্সিলের পূর্বাঞ্চলীয় কর্তা রমেশ জুনেজা বুধবার বলেন, ‘‘কানপুর থেকে অনেক চর্ম ব্যবসায়ীই যোগাযোগ করছেন। কেউ ভাড়া নিতে চাইছেন, কেউ সরাসরি ট্যানারি কিনতেও চাইছেন।’’ কানপুরের চর্ম ব্যবসায়ী পারভেজ আলম আবার বলছেন, ‘‘আমাদের অনেকের আত্মীয় কলকাতায় একই ব্যবসা করেন। ফলে ভাড়া না নিয়ে, না কিনেও অনেকে আত্মীয়ের ট্যানারিতে তিন মাস উৎপাদন বজায় রাখছেন।’’

সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় কানপুরের ব্যবসায়ীরা, যাঁরা বিদেশে জুতো রফতানি করেন। এই তিন মাস কাজ না হলে সেই বাজারই হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ নিয়ে ৪ অক্টোবর যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ব্যবসায়ীরা। লাভ হয়নি। পারভেজ নিজেও রফতানি করেন। তাঁর দাবি, তিন মাস ট্যানারি বন্ধ থাকলে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতি হবে। সব মিলিয়ে রাজ্যের ক্ষতি হবে কয়েকশো কোটি। কানপুরের ব্যবসায়ী মহম্মদ আদিলের কথায়, ‘‘শুধু ব্যবসায়ী নন। বহু শ্রমিকের ক্ষতি হবে। এখানে বেশির ভাগ শ্রমিকই দৈনিক মজুরিতে কাজ করেন। তাঁরা তিন মাস কর্মহীন হয়ে পড়বেন।’’

এই মওকায় রাজ্যের অনেক ধুঁকতে থাকা ট্যানারি মালিকই লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন। কলকাতার চর্ম ব্যবসায়ী এস জাভেদ নিজের ট্যানারি বিক্রি করে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতায় চামড়ার মান ভাল। কানপুরের ব্যবসায়ীরা এখানে এলে তাঁদেরও সুবিধা হবে। আর আর্থিক ভাবে লাভ হবে রাজ্যের।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Busi Tannery Uttar Pradesh West Bengal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy