Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কলকাতা ছাড়ছে বিস্তারা এয়ারলাইন্স

এই সিদ্ধান্তের পিছনে সংস্থায় কর্মরত তৃণমূল সমর্থক অস্থায়ী ‘গ্রাউন্ড স্টাফ’-দের অসহযোগিতা এবং তার জেরে কর্মীর অভাবই বড় কারণ বলে অভিযোগ বিস্তারার কর্তাদের। একই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ, কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ইন্ডিগো এবং স্পাইসজেটকে বাড়তি সুবিধে দিলেও বিস্তারাকে তা দেওয়া হচ্ছে না।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

সুনন্দ ঘোষ
শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৭ ০২:৪২
Share: Save:

কলকাতা থেকে যাত্রা শুরু মাত্র বছর দেড়েক আগে। আর, তার মধ্যেই ধাপে ধাপে শহর থেকে পাততাড়ি গোটানোর পথে হাঁটছে বিস্তারা বিমান সংস্থা। টাটাদের সঙ্গে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের এই যৌথ উদ্যোগ শহর ছাড়ার কারণ হিসেবে অভিযোগের আঙুল তুলেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের দিকেই।

এই সিদ্ধান্তের পিছনে সংস্থায় কর্মরত তৃণমূল সমর্থক অস্থায়ী ‘গ্রাউন্ড স্টাফ’-দের অসহযোগিতা এবং তার জেরে কর্মীর অভাবই বড় কারণ বলে অভিযোগ বিস্তারার কর্তাদের। একই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ, কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ইন্ডিগো এবং স্পাইসজেটকে বাড়তি সুবিধে দিলেও বিস্তারাকে তা দেওয়া হচ্ছে না।

কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিস্তারার পরিচালন পর্ষদের বৈঠক বসে, যেখানে হাজির ছিলেন রতন টাটাও। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১৫ জুনের মধ্যে বেঙ্গালুরুগামী দু’টি এবং গুয়াহাটির একটি উড়ান তুলে নেওয়া হবে। পোর্টব্লেয়ার এবং পুণের উড়ান বন্ধ করে দেওয়া হবে আগামী ২৪ জুনের মধ্যে। দিল্লিগামী দু’টি উড়ান তুলে নেওয়ার কথা ১ অগস্টের মধ্যে। যদিও সংস্থার বিবৃতিতে আপাতত তিনটি উড়ান তুলে নেওয়ার কথাই বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, টাটা সন্স ও সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের যৌথ উদ্যোগ বিস্তারার সাতটি উড়ান চলে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে। সংস্থা লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছে, কলকাতা থেকে তিনটি বিমান তুলে নিয়ে অন্যত্র চালানো হবে। যদিও বিস্তারার অন্য একটি সূত্রেরই খবর, ১ অগস্টের মধ্যে বাকি সব উড়ানও তুলে নেওয়া হবে। পাশাপাশি, তৃণমূল সূত্রেরই দাবি, দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান এবং ভাইস-চেয়ারম্যান যথাক্রমে হরেন্দ্র সিংহ ও বরুণ নট্ট স্থানীয় সাংসদ সৌগত রায় ও বিধায়ক ব্রাত্য বসুর নাম করে বিস্তারায় দাদাগিরি চালাচ্ছেন। শাসক দলেরই এক শ্রমিক নেতারও দাবি, ‘‘সংস্থাটি কার্যত দাদাগিরিতে বিরক্ত হয়েই ওই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।’’

বিস্তারা-কর্তারা তাঁদের অভিযোগে বলেছেন, গ্রাউন্ড স্টাফদের অসহযোগিতা তো আছেই। পাশাপাশি, তৃণমূলের সঙ্গে বনিবনা না-হওয়ায় তাঁদের গ্রাউন্ড স্টাফ দিতে গড়িমসিও করছে ইউনিয়ন। যে-সব নতুন গ্রাউন্ড স্টাফ চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের অনেকেই তৃণমূল ইউনিয়নের বাধায় বিমানবন্দরে ঢোকার পরিচয়পত্র পাচ্ছেন না। সব মিলিয়ে যথেষ্ট কর্মী পাচ্ছে না বিস্তারা। সঙ্গে অনৈতিক ভাবে চাকরি দেওয়ার জন্য চাপ রয়েছে বলেও অভিযোগ।

বিমান সংস্থার এই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন শাসক দলের শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী ও সাংসদ দোলা সেন। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘অন্য বিমান সংস্থায় সংগঠন থাকলেও বিস্তারা এবং ইন্ডিগোয় আমাদের কোনও ইউনিয়ন নেই। তাই, বাধা দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’ অভিযুক্ত বরুণ নট্টের দাবি, তাঁরা এই ধরনের কাজের বিরোধী। সেই সঙ্গে অবশ্য তিনি বলেন, ‘‘বিস্তারার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নেই। তবে ওরা যে সংস্থার কাছ থেকে কর্মী আউটসোর্স করে, তাদের সঙ্গে আমাদের খুবই ভাল সম্পর্ক। আমাদের বললে, একটা সমাধানসূত্র নিশ্চয় বার হত।’’

শহর থেকে উড়ান

বাগডোগরা-কলকাতা-নয়াদিল্লি (২টি)


কলকাতা-বেঙ্গালুরু (২টি)


কলকাতা-গুয়াহাটি


কলকাতা-পোর্টব্লেয়ার


কলকাতা-পুণে

বিবৃতিতে বিস্তারার দাবি, আপাতত বন্ধ হচ্ছে তিনটি উড়ান

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE