মোবাইলে কথা বলতে গিয়ে মাঝপথে বারবার ফোন কেটে যাওয়া বা ‘কল-ড্রপ’-এর সমস্যা মেটাতে কেন্দ্রের কাছে আলাদা টাওয়ার নীতি তৈরির দাবি জানাল টেলিকম শিল্পমহল। তাদের মতে, টাওয়ারের সংখ্যা কম থাকা এবং মেট্রো ও প্রথম সারির শহরগুলিতে প্রায় ১০ হাজার টাওয়ার অচল হয়ে পড়াই এই সমস্যার জন্য দায়ী।
তিতিবিরক্ত গ্রাহকেরা অবশ্য কল ড্রপ সমস্যায় টেলিকম সংস্থাগুলির দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। টেলিকম শিল্পমহল অবশ্য পাল্টা দাবি করেছে, টাওয়ার বসাতে না-পারার জন্যই এই সমস্যা। এই পরিপ্রেক্ষিতে টেলিকম সংস্থাগুলির শীর্ষ কর্তারা সোমবার একযোগে সাংবাদিক বৈঠক করে হুঁশিয়ারি দিলেন, সমস্যাগুলির সমাধান না-হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। টাওয়ার বসানোর জন্য কেন্দ্রের কাছে জাতীয় নীতি প্রণয়নেরও দাবি তুলেছেন তাঁরা। এ দিকে, কল-ড্রপের সমস্যা খতিয়ে দেখে তা সমাধানের জন্য প্রতি সপ্তাহে রিপোর্ট দিতে সম্প্রতি সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে টেলিকম দফতর।
কল-ড্রপ নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই টানাপড়েন চলছে। গ্রাহক পরিষেবা ক্রমশ খারাপ হওয়ায় হস্তক্ষেপ করতে হয় কেন্দ্রকেও। কেন এই সমস্যা হচ্ছে, পরিকাঠামোগত ত্রুটি আছে কি না, সে সব খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষ সমীক্ষা চালাতে টেলিকম দফতরকে নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। এত দিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ট্রাই-এর তত্ত্বাবধানে এই সমীক্ষা হত।
টেলিকম শিল্পের দাবি, বিকিরণ মাত্রা থেকে অসুস্থতার আশঙ্কা-সহ বিভিন্ন কারণে তারা টাওয়ার বসাতে বাধা পাচ্ছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে পরিষেবা। এ দিন যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে আইডিয়া সেলুলারের এমডি হিমাংশু কাপানিয়া বলেন, ‘‘জাতীয় স্তরে একটি টাওয়ার-নীতি জরুরি যা দেশের সর্বত্রই প্রযোজ্য হবে। শুধুমাত্র নির্দেশিকাই যথেষ্ট নয়।’’
তবে আজ ভোডাফোন ইন্ডিয়া-র এমডি তথা সিইও সুনীল সুদের বক্তব্য, টেলিকম মন্ত্রীও তাঁদের সঙ্গে সহমত হয়েই জানিয়েছেন, আরও টাওয়ার প্রয়োজন। এবং টাওয়ার থেকে বিকিরণ মাত্রার কোনও আশঙ্কা নেই বলেও জানিয়েছেন প্রসাদ। সুদ বলেন, ‘‘এ জন্য বিভিন্ন রাজ্য ও স্থানীয় পুরসভাকে নীতি আনার অনুরোধ করেছেন মন্ত্রী। আরও টাওয়ার না-বসালে সমস্যা চলবেই।’’ পাশাপাশি আরও বেশি স্পেকট্রামও জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি। সমস্যা এড়াতে সরকারি ভবনেও টাওয়ার নির্মাণের দাবি তুলেছে শিল্পমহল।
ভারতী এয়ারটেলের এমডি তথা সিইও গোপাল ভিত্তলের দাবি, পরিষেবার মান বাড়াতে টেলিকম শিল্পমহল বিপুল লগ্নি করেছে। আগামী দিনেও নতুন বিনিয়োগে তাঁরা পিছপা নন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, এ দেশে গত ২০ বছরে প্রায় ৭.৫০ লক্ষ কোটি টাকা লগ্নি করেছে সংস্থাগুলি। আরও প্রায় ১.০৯ লক্ষ কোটি টাকা স্পেকট্রাম কিনতে ব্যয় করেছে তারা। এ ছাড়া পরিকাঠামো খাতে ২০১৪-’১৫ সালে লগ্নির অঙ্ক ১.৩৪ লক্ষ কোটি টাকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy