আজ মধ্য রাতে সংসদে রীতিমতো উৎসব করে জিএসটি চালু করবেন তিনি। আর তার কয়েক ঘণ্টা আগে নিজের খাসতালুক আমদাবাদ-গাঁধীনগরেই নরেন্দ্র মোদী দেখে গেলেন প্রবল জিএসটি বিরোধিতা।
এ দিন গাঁধীনগরে বস্ত্র শিল্পের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধন করলেন মোদী। আর দেশে বস্ত্রশিল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র পরিচিত গাঁধীনগর-আমদাবাদের বস্ত্র ব্যবসায়ীরাই জিএসটি-র বিরুদ্ধে আন্দোলনের পুরোভাগে।
দেশের বস্ত্রশিল্পে আরও লগ্নি আনতে, আরও কর্মসংস্থান তৈরি করতে স্মৃতি ইরানির বস্ত্র মন্ত্রক আজ থেকে তিন দিনের ‘টেক্সটাইল ইন্ডিয়া ২০১৭’-র আয়োজন করেছে। দেশে এমন বস্ত্রমেলা এই প্রথম। একাধিক ভারতীয় সংস্থার পাশাপাশি জাপান, কোরিয়া, ব্রিটেনের লগ্নিকারীরাও এতে যোগ দিয়েছেন। আর এ দিনই গুজরাতের বস্ত্র ব্যবসায়ীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, জিএসটি-তে তাঁদের উপর যে ভাবে কর চাপানো হয়েছে, তা তাঁরা মানবেন না। সুরাহা না মিললে খুব শিগগিরই অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘটে যাওয়ার কথা ভাববেন তাঁরা। বস্ত্র ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, জিএসটি-তে যে ভাবে করের হার ঠিক হয়েছে, তাতে সাধারণ ব্যবসায়ীরা মার খাবেন। তাঁতে তৈরি কাপড়, বস্ত্র, সুতো শিল্প ভেঙে পড়বে।
বস্ত্র ব্যবসায়ীদের তিন দিনের ধর্মঘট শেষ হয়েছে গত কাল। দেশের সিংহভাগ জামাকাপড়ের আঁতুড়ঘর আমদাবাদ-সুরাতের বাজার ২৭ থেকে ২৯ জুন বন্ধ ছিল। ব্যবসায়ী মহলের আশা থাকলেও আজ টেক্সটাইল ইন্ডিয়া-র মঞ্চ থেকে মোদী তাঁদের কোনও সুখবর দেননি। আর এতে ক্ষোভ বেড়েছে বস্ত্র ব্যবসায়ীদের।
আরও পড়ুন: কমেছে ভারতীয়দের গচ্ছিত টাকা, রিপোর্ট সুইস ব্যাঙ্কের
এ দিন অবশ্য মোদীর নির্দেশেই বিক্ষোভকারী ব্যবসায়ীদের কড়া হাতে দমন করার চেষ্টা করেনি পুলিশ। কারণটাও স্পষ্ট। এই বছরের শেষেই গুজরাতের বিধানসভা নির্বাচন। এবং সেখানে বিজেপির বাজি মোদীই। মোদীর নিজের কাছেও এটি সম্মানরক্ষার লড়াই।
গত ছ’মাসে তিনি ছ’বার এসেছেন গুজরাতে। আগামী কয়েক মাসে আরও ঘন ঘন আসবেন বলেই বিজেপি সূত্রের খবর। তার আগে দলের ভোটব্যাঙ্ক ব্যবসায়ী মহলকে চটানোর ঝুঁকি নিতে নারাজ মোদী। প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রের বক্তব্য, করের হার ঠিক করেছে জিএসটি পরিষদ। কিছু রদবদলের প্রয়োজন হলে তারাই করবে। তবে ব্যবসায়ীদের অভাব-অভিযোগ শুনতে কেন্দ্রীয় সরকার তৈরি।
জিএসটি-তে কোনও সুরাহা না দিলেও মোদী আজ বস্ত্র ব্যবসায়ীদের ক্ষোভে মলম লাগানোর সব রকম চেষ্টা করেছেন। বলেছেন, তাঁর সরকার বস্ত্র শিল্পে বিশেষ জোর দিচ্ছে। সেই কারণেই গত বছর এই শিল্পের জন্য ৬ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা হয়েছে। বস্ত্র শিল্পের দাবি মেনে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য নিয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রেও কর ছাড় দেওয়া হচ্ছে। খুলে দেওয়া হয়েছে বিদেশি লগ্নির দরজা।
তিন দিনের এই অনুষ্ঠানে সব মিলিয়ে হাজির হবেন ১১ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সংখ্যা থেকেই স্পষ্ট, মোদী সরকার এই অনুষ্ঠানকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে। এই অনুষ্ঠানে ১৩টি প্রদর্শনী হল জুড়ে দেড় হাজার দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ী, শিল্প সংস্থা নিজেদের পণ্য ও পরিষেবা তুলে ধরছেন। আড়াই হাজার বিদেশি লগ্নিকারী ও ১৫ হাজার দেশীয় প্রতিনিধি এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy