দারিদ্রের বোঝা কিছুটা হাল্কা হয়েছে পুরুলিয়ার। সম্প্রতি নীতি আয়োগের রিপোর্টে তারই প্রতিফলন। ‘ন্যাশন্যাল মাল্টিডায়মেনশনাল পভার্টি ইন্ডেক্স: এ প্রগ্রেস রিভিউ ২০২৩’-তে স্পষ্ট, পশ্চিমবঙ্গে দারিদ্র কমার নিরিখে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে পুরুলিয়া। এই জেলায় ২০১৫-১৬ সালে দারিদ্রের হার ছিল ৪৯.৬৯%। ২০১৯-২১ সালের তথ্য অনুযায়ী তা ২২.৮৫ শতাংশ বিন্দু কমে হয়েছে ২৬.৮৪%। একশো দিনের কাজের প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য তরজা চললেও গ্রামোন্নয়নের পর্যবেক্ষকদের একাংশের দাবি, মূলত ওই প্রকল্পের সফল প্রয়োগই সমাজের নিচুতলায় অর্থ জুগিয়েছে। যা জেলার অর্থনীতির চাকাকে কিছুটা এগিয়ে দিয়েছে।
পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে শিল্পাঞ্চল থাকলেও, বড় কলকারখানা নগণ্য। কৃষির বিকাশে প্রতিবন্ধক অপ্রতুল সেচ। ফলে যুব-সমাজের একাংশ পেটের দায়ে ভিন্ রাজ্যমুখী। করোনাকালে ফিরে আসা পরিযায়ীদের রুটি-রুজির জন্য একশো দিনের প্রকল্পে এই জেলাতেই প্রথম ‘মাটির সৃষ্টি’ কর্মসূচি নেওয়া হয়। তৎকালীন জেলাশাসক রাহুল মজুমদারের কথায়, ‘‘এটি ছিল পুরুলিয়ার জল, মাটি ও মানুষকে ধরে রাখার আদর্শ প্রকল্প। একটি কাজের মাধ্যমে একাধিক উপায় আয় বাড়ানো হয়েছে।’’ যেমন, কোথাও পতিত জমি খুঁড়ে জলাশয় করে প্রচুর শ্রমিককে কাজ দেওয়া গিয়েছে। পরে সেখানেই মাছ চাষ করে, পাশের জমিতে ফল-আনাজ ফলিয়ে, হাঁস-মুরগির খামার করে আরও অনেকের স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা হয়েছে। জেলার ২১১২ একর অনুর্বর জমিতে এমন ১৩৬টি প্রকল্প হয়।
কাশীপুর ব্লকের পাহাড়পুরে দিঘি কাটিয়ে ‘ডে-টুরিজম’ সেন্টার থেকে হাঁস-মুরগির খামার, মাছ চাষ থেকে গাছের চারা তৈরির নার্সারি শুরু হয়। সেখানে যুক্ত ১৪টি স্বনির্ভর দলের সদস্য সুমিত্রা মুর্মু, পানমণি সরেন, পূর্ণিমা সিং সর্দাররা বলেন, ‘‘শুধু মনসা পুজোয় হাঁস বেচে ৪৩ হাজার টাকা আয় করেছিলাম।’’ দাবি, ফলের চাষ বেড়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)