রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যানে গত অর্থবর্ষে ভারতে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি (এফডিআই) তলানিতে নামার তথ্য সামনে আসতেই প্রশ্নের মুখে পড়েছিল অর্থনীতি এবং কেন্দ্রের নীতি। মোদী সরকারকে কঠাগড়ায় তুলে আক্রমণ শানাতে শুরু করে বিরোধী শিবির। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার তড়িঘড়ি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রক দেখাল, ভারত এফডিআই টানায় কতটা সফল। কী ভাবে পূর্বতন ইউপিএ সরকারকে পিছনে ফেলে এগিয়েছে মোদী জমানা। বিজ্ঞপ্তিতে দাবি, তাদের লগ্নিবান্ধব নীতিই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১০০% বিদেশি লগ্নির রাস্তা খুলেছে। ফলে ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষের ৩৬০৫ কোটি ডলার থেকে বেড়ে গত অর্থবর্ষে (২০২৪-২৫) তা পৌঁছেছে ৮১০৪ কোটিতে। যা ২০২৩-২৪-এর ৭১২৮ কোটি ডলারের থেকেও ১৪% বেশি।
যদিও গত জানুয়ারি-মার্চে তার আগের অর্থবর্ষের একই সময়ের তুলনায় এফডিআই ২৪.৫% কমে হয়েছে ৯৩৪ কোটি ডলার। অক্টোবর-ডিসেম্বরেও তা ৫.৬% সঙ্কুচিত হয়। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, আরবিআই বলেছিল, গত অর্থবর্ষে ৯৬% কমে এফডিআই হয়েছে ৪০ কোটি ডলার। এতে সরকারের দিকে আঙুল ওঠার কারণেই এই পাল্টা বিজ্ঞপ্তি। যেখানে ছত্রে ছত্রে তাদের এফডিআই নীতির সাফল্য তুলে ধরার চেষ্টা রয়েছে। তুলনা টানা হয়েছে শেষ ১১ বছরের নিরিখেও। দাবি, মোদী জমানায় (২০১৪-২৫) ভারতে এফডিআই এসেছে ৭৪,৮৭৮ কোটি ডলার। যা তার আগের ১১ বছরের (২০০৩-১৪) ৩০,৮৩৮ কোটির থেকে ১৪৩% বেশি। ২৫ বছরের তুলনা করলেও মোট ১,০৭,২৩৬ কোটি ডলার এফডিআই-এর প্রায় ৭০%। এ দেশ এখন কল-কারখানায় উৎপাদনে বিদেশি লগ্নির কেন্দ্র। ১৮% বেড়ে তা ছুঁয়েছে ১৯০৪ কোটি ডলার।
যদিও সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, কেন্দ্রের তথ্যেই স্পষ্ট নেদারল্যান্ডস, জাপান, ব্রিটেন এবং জার্মানি থেকে এফডিআই কমেছে। তা নেমেছে পরিষেবা, শেয়ার লেনদেন, টেলিযোগাযোগ, গাড়িতে বাড়লেও, কম্পিউটার সফটওয়্যার-হার্ডওয়্যার, নির্মাণ (মূলত পরিকাঠামো), ওষুধে। আরবিআইয়ের তথ্য সামনে আসার পরে কংগ্রেসের দাবি ছিল, এতেই স্পষ্ট দেশের লগ্নি জগতে কী বিপুল অনিশ্চয়তা। তাই সকলে বিদেশে পুঁজি ঢালতে উৎসাহী। এ দিন ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রকের রিপোর্টও।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)