পশ্চিমবঙ্গের তাজপুর বন্দরের ভবিষ্যৎ স্পষ্ট নয়। কিন্তু এখানে যে প্রক্রিয়ায় সেই বন্দর নির্মাণের কথা ভাবা হয়েছিল, ঠিক সেই আদলেই ভাদবানে কেন্দ্র ও মহারাষ্ট্র সরকার যৌথ উদ্যোগে একটি গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরি করছে। দুই পক্ষের অংশীদারি যথাক্রমে ৭৪% এবং ২৬%। মহারাষ্ট্র সরকারের বন্দর ও পরিবহণ দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব সঞ্জয় শেঠি জানান, ১৯৯৮ থেকে এই বন্দরের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। তার পরে আদালত, পরিবেশ-সহ বিভিন্ন পর্যায় পার করা গিয়েছে। ২০৩৪ থেকে বছরে ৩০ কোটি টন পণ্য সেখানে ওঠানামা করতে পারবে বলে দাবি তাঁর। ‘ইন্ডিয়া মেরিটাইম উইক ২০২৫’-এ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, ওই বন্দরে ৭৬,০০০ কোটি টাকারও বেশি লগ্নি হতে চলেছে।
তাজপুরে প্রস্তাবিত বন্দরের অংশীদারির কাঠামো একই। তা নির্মাণের জন্য কেন্দ্রের পক্ষে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও রাজ্যের একটি যৌথ উদ্যোগ (এসপিভি) তৈরি হয়েছিল। অংশীদারি সেই ৭৪% ও ২৬%। সেই এসপিভি এখন আর নেই। দ্বিতীয় বার দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু বন্দর সম্মেলনে এ ব্যাপারে আলোচনা করেনি কোনও পক্ষ।
সঞ্জয়ের দাবি, ২০২১-২২ থেকে ভাদবান বন্দরের কাজ সফল ভাবে চলছে। তাঁর কথায়, ‘‘পরিকল্পনার সময় থেকেই কেন্দ্র ও রাজ্য একযোগে কাজ করে আসছে। এমনকি সেই সময়ে রাজ্যে যে সরকার ছিল তারা রাজনৈতিক ভাবে কেন্দ্রের বিরোধী। কিন্তু তা সত্ত্বেও যাবতীয় সমস্যার সমাধানে গুরুত্ব দিয়েছে সব পক্ষ। সেখানেই রাজ্যের সাফল্য।’’ মহারাষ্ট্র সরকারের ওই আধিকারিক আরও জানান, শুধু এই বন্দরের কথা মাথায় রেখে রাজ্য নতুন নীতি এনেছে। যাতে ভবিষ্যতেও কোনও বন্দর তৈরিতে সমস্যা না হয়। এই বন্দরের জন্য একটি নতুন বিমানবন্দর এবং উপনগরী তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। সেখানেও লগ্নি হবে কয়েক হাজার কোটি টাকা। এই প্রসঙ্গে জাহাজ মন্ত্রকের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘যদি মহারাষ্ট্র সরকারের ২০% উদ্যোগীও বাংলার সরকার হত, তা হলে তাজপুর বন্দর ঘিরে জটিলতা তৈরি হত না।’’
বন্দর সম্মেলনে এই প্রকল্পকে তুলে ধরেছে মহারাষ্ট্র সরকার। করা হয়েছে বড় প্যাভিলিয়ন। দেশি-বিদেশি লগ্নিকারীদের সামনে সব রকম সুযোগ তুলে ধরেছেন আধিকারিকেরা। আদানি পোর্ট সই করেছে প্রায় ৫৩,০০০ কোটি টাকা লগ্নির চুক্তি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)