গত মাসে সারা দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৫.৬%। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এই পরিসংখ্যান এমনিতেই উদ্বেগজনক। কারণ প্রথমত, এপ্রিলের (৫.১%) তুলনায় মে মাসে (৫.৬%) তা মাথা তোলার পরে আর নামেনি। দ্বিতীয়ত, কাজের বাজারে পাঁচ শতাংশের উপরে থাকা বেকারত্ব যথেষ্ট চড়া। তবে মঙ্গলবার কেন্দ্রের পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি রূপায়ণ মন্ত্রকের রিপোর্ট প্রকাশের পরে চিন্তা আরও বেশি বেড়েছে শহরে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি এবং ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সিদের কাজের তথ্য দেখে।
কেন্দ্রের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, শহরে বেকারত্বের হার গত তিন মাস ধরে ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে চলেছে। এপ্রিলে ৬.৫ শতাংশের পরে পরবর্তী দু’মাসে তা ছিল যথাক্রমে ৬.৯% এবং ৭.১%। জুনে শহরে পুরুষ এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে বেকারত্বে হার ছুঁয়েছে যথাক্রমে ৬.৪% এবং ৯.১%। বরং গ্রামে তা ৫.১% থেকে নেমেছে ৪.৯ শতাংশে। রিপোর্টে দাবি, গ্রামাঞ্চলে মরসুম নির্ভর কিছু ক্ষেত্রে কাজ বৃদ্ধি পাওয়ায় অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে। না হলে দেশের সামগ্রিক ছবি আরও উদ্বেগজনক জায়গায় থাকতে পারত বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। আর একটি দুশ্চিন্তার জায়গা তরুণ-তরুণীদের কর্মহীনতা। যা নিয়ে মোদী সরকারের উদ্দেশে অনেক দিন ধরে আক্রমণ শানিয়ে চলেছে বিরোধী দলগুলি। রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, এই ক্ষেত্রেও বেকারত্ব ধারাবাহিক ভাবে বেড়েছে। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ওই হার যথাক্রমে ১৩.৮%, ১৫% এবং ১৫.৩%। শহরাঞ্চলেও এই বয়সিদের মধ্যে প্রবণতা এক। গত তিনটি মাসে ওই হার ১৭.২%, ১৭.৯% এবং ১৮.৮%। সারা দেশে পুরুষ এবং মহিলাদের বেকারত্বের হার অবশ্য এখন একই, ৫.৬%। মহিলাদের ক্ষেত্রে তা সামান্য কমেছে।
বিশেষজ্ঞ মহলের বক্তব্য, প্রত্যেক মাসে প্রভিডেন্ট ফান্ড, ইএসআই-এর সদস্য বৃদ্ধি-সহ বিভিন্ন তথ্য দিয়ে কর্মসংস্থানের সাফল্য প্রমাণের চেষ্টা করে কেন্দ্র। কিন্তু বাস্তব হল, প্রত্যেক মাসে কাজের বাজারে দেশের যুব সম্প্রদায়ের যত প্রতিনিধি পা রাখছেন, তত কাজ তৈরিই করা যাচ্ছে না। ফলে বেকারত্ব চড়া। আর তার ছবিই স্পষ্ট হচ্ছে খোদ সরকারি সমীক্ষায়। একাংশ আবার মনে করাচ্ছেন, ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে বেকারত্বের হার (৬.১%) ছিল চার দশকের সর্বোচ্চ। এখনকার হার তার চেয়ে খুব কম নয়।
জুনে বেকারত্ব
সারা দেশে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের ৫.৬%।
শহরে ৬.৯% থেকে বেড়ে ৭.১%।
গ্রামে ৫.১% থেকে কমে হয়েছে ৪.৯%।
মরসুমি কাজ বৃদ্ধির ফলে উন্নতি পরিসংখ্যানে।
দেশে ১৫-২৯ বছর বয়সিদের বেকারত্ব ১৫% থেকে বেড়ে ১৫.৩%।
শহরাঞ্চলে ১৭.৯% থেকে বেড়ে ১৮.৮%।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)