সুপ্রিম কোর্ট সোমবার বকেয়া মকুবের আর্জি খারিজ করার পরে ভোডাফোন আইডিয়ার (ভি) ভবিষ্যৎ কী হতে পারে, তাই নিয়ে জল্পনা চড়ছে। যার কোনওটাই তেমন ইতিবাচক নয়। বিশেষজ্ঞদের কেউ বলছেন, সরকার কোনও ভাবেই ভি-র দায়িত্ব নিয়ে মাথাব্যথা বাড়াবে না। কারও মতে, সংস্থার বেসরকারি ক্রেতা পাওয়াও কঠিন। একাংশের দাবি, যে সংস্থা বছরের পর বছর চেষ্টা করেও বিশ্বের কোনও প্রান্ত থেকে লগ্নিকারী জোগাড় করতে পারেনি, দেউলিয়া হওয়ার অবস্থায় পৌঁছে তাদের পুঁজির হদিশ পাওয়া শক্ত। এই নিয়ে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে জিজ্ঞাসা করা হলে, কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে, মন্ত্রীর মুখে কুলুপ তাৎপর্যপূর্ণ। সরকার হাত ঝেড়ে ফেলতে পারে। এর আগে ভি-র প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা বকেয়া মকুব করে ৪৯% অংশীদারি হাতে নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় তারা আর আগ্রহ দেখাবে কি না, সন্দেহ আছে। আগ্রহ দেখালে, ভি হয়তো বেঁচে যেত। কিন্তু সরকার এর আগেই স্পষ্ট জানিয়েছে, বিএসএনএল ছাড়া আর কোনও টেলিকম সংস্থার দায়িত্ব তারা নিতে চায় না।
এয়ারটেলের প্রাক্তন সিইও সঞ্জয় কপূরের মতে, কেন্দ্রীয় সরকার ৪৯% থেকে অংশীদারি বাড়াবে না। বিএসএনএল এবং এমটিএনএল নিয়ে তারা খুব একটা স্বস্তিতে নেই। ফলে তৃতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থার বোঝা বইবে না। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি অন্য কোনও টেলিকম সংস্থা (জিয়ো, টাটা কিংবা এয়ারটেল) ভি-কে হাতে নেবে?
সঞ্জয়-সহ একাধিক বিশেষজ্ঞ এই সম্ভাবনার কথাও কার্যত উড়িয়েছেন। তাঁদের মতে, এই সংস্থাগুলির আর্থিক ভিত এখন পোক্ত। তবে তার জন্য তাদের ইতিমধ্যেই অনেক বড় অঙ্কের লগ্নি করতে হয়েছে। ফলে ভি-কে কিনে নিয়ে দাঁড় করাতে যে পরিমাণ পুঁজি ঢালতে হবে, তা করার অবস্থা নেই তাদের। অন্য দিকে, নতুন কোনও সংস্থা এই বিরাট বোঝা মাথায় নিয়ে ভারতের টেলিকম ক্ষেত্রের প্রতিযোগিতায় শামিল হতে চাইবে কি না, সে ব্যাপারেও সংশয় আছে। কারণ, এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বেই টেলিকম সংস্থাগুলি সহজে লাভের মুখ দেখতে পারছে না। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, ঋণ-বকেয়া-নগদের অভাবে জর্জরিত ভোডাফোনের অবস্থা যে ভাল নয়, সেটা মোটামুটি স্পষ্ট।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)