E-Paper

নতুন শ্রমবিধি চালু করতে চায় কেন্দ্র, হুঁশিয়ারি দিল ১০ ইউনিয়ন

মোদী সরকার চায় এ বছরের মাঝামাঝি দেশজুড়ে একসঙ্গে নতুন শ্রমবিধি কার্যকর করতে। এর বিরোধিতায় সরব হয়েছে সিটু, আইএনটিইউসি, এইচএমএস-সহ ১০টি সংগঠন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৫ ০৭:০২
সংঘাতের রাস্তায় যেতে চলেছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি।

সংঘাতের রাস্তায় যেতে চলেছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি। —প্রতীকী চিত্র।

নতুন শ্রমবিধিগুলি চালু করা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতের রাস্তায় যেতে চলেছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি। মোদী সরকার চায় এ বছরের মাঝামাঝি দেশজুড়ে একসঙ্গে নতুন শ্রমবিধি কার্যকর করতে। এর বিরোধিতায় সরব হয়েছে সিটু, আইএনটিইউসি, এইচএমএস-সহ ১০টি সংগঠন। ইতিমধ্যেই বিধি কার্যকর না করতে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে তারা। শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংশোধন না করে নতুন নিয়ম চালু করতে চাইলে ধর্মঘট-সহ বড় আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছে। আবার পশ্চিমবঙ্গ-সহ বেশ কিছু রাজ্য শ্রমবিধি চালু কররে না বলে জানিয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, যে সমস্ত রাজ্যে তা চালু হবে না, সেখানেও কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিতে নতুন বিধি কার্যকর হবে।

উল্লেখ্য, পুরনো শ্রম আইনগুলিকে মিলিয়ে চারটি শ্রম বিধি এনেছে মোদী সরকার। ২০১৯-এ তারা সংসদে পাশ করায় মজুরি সংক্রান্ত বিধি। শিল্প সম্পর্ক (ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশন্স), সামাজিক সুরক্ষা (সোশ্যাল সিকিয়োরিটি) এবং কর্মস্থলে কর্মীদের সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও কাজের পরিবেশ (অকুপেশনাল, সেফ্‌টি, হেলথ এবং ওয়ার্কিং কন্ডিশন) সংক্রান্ত বিধি তিনটি পাশ হয় ২০২০-তে। তবে তার পর থেকেই কেন্দ্রীয় শ্রমিক ইউনিয়নগুলি সেগুলির বিরোধিতায় সরব।

শ্রম কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ তালিকাভুক্ত। ফলে কেন্দ্র নতুন শ্রম আইন তৈরি করলেও, তা কার্যকর করতে রাজ্যের সায় জরুরি। তাই নতুন বিধির নিয়ম তৈরির কাজ মার্চের মধ্যে সারতে ফের রাজ্যগুলিকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্র। এ নিয়ে তিন বার। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, কর্নাটক, তামিলনাড়ু-সহ কিছু রাজ্য স্পষ্টই জানিয়েছে তারা সেগুলি চালু করবে না। এ রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক আগেই বলেছিলেন, নতুন বিধি না মানার বিষয়টি চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রকে জানিয়েছেন।

সিটু-র সাধারণ সম্পাদক তপন সেনের বক্তব্য, ‘‘বিধিগুলির একাধিক ধারা শ্রমিক স্বার্থের বিরোধী। তাই মানতে পারব না। কেন্দ্র জোর করে চালু করতে চাইলে ধর্মঘট-সহ দেশজুড়ে আন্দোলন হবে।’’ আইএনটিইউসি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি অশোক সিংহ বলেন, ‘‘করোনাকালে সংসদে যথেষ্ট আলোচনা না করেই বিল পাশ করানো হয়। ট্রেড ইউনিয়নগুলির সঙ্গেও কথা বলা হয়নি।’’

আইএনটিটিইউসি রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘এখন শ্রমিক সংখ্যা ১০০ পর্যন্ত হলে কারখানা বন্ধ করতে সরকারের সায় লাগে না। নতুন বিধিতে তা ৩০০। এতে সিংহভাগ সংস্থারই বন্ধের জন্য সায় লাগবে না। মালিকরা অবাধে ছাঁটাই করতে পারবেন। শুক্রবার শ্রম সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে বৈঠকে শ্রমবিধির ক্ষতিকারক দিক তুলে ধরব।’’ এআইউটিইউসি-র সহ-সভাপতি দিলীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিধি চালু হলে নতুন ইউনিয়ন নথিবদ্ধ করা কার্যত অসম্ভব হবে। দিনে ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ না করার অধিকার হারাবেন শ্রমিকেরা।’’ সব মিলিয়ে শ্রমবিধি নিয়ে জটিলতা বহাল।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Trade Unions CITU INTUC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy