রাত পোহালেই দোলযাত্রা। রঙের উৎসবে মেতে উঠবে ৮ থেকে ৮০। সেই উপলক্ষে দেদার বিকোচ্ছে আবির-পিচকিরি। সেই সঙ্গে বিক্রি বেড়েছে বিভিন্ন ধরনের শুকনো ফল এবং মিষ্টির। অর্থাৎ, এ বছরের দোলযাত্রায় ব্যবসায়ীদের পকেট যে ধীরে ধীরে ভরে উঠছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এর চমক দেশের আর্থিক বৃদ্ধিতেও দেখা যাবে বলে স্পষ্ট করেছেন বিশ্লেষকেরা।
রঙের উৎসবে কত টাকার কেনাকাটা করতে পারে আমজনতা, ইতিমধ্যেই তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ফেলেছে ‘কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স’ বা সিএআইটি। বণিক সংগঠনটির দাবি, এ বার ৬০ হাজার কোটি টাকার বেচাকেনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাব শেয়ার বাজারেও দেখা যাবে। কারণ, যে সব ভোগ্যপণ্য তাড়াতাড়ি বিক্রি হয়ে যায় (ফাস্ট-মুভিং কনজ়িউমার গুডস বা এফএমসিজি), বসন্ত উৎসবকে কেন্দ্র করে সে সবের চাহিদা ইতিমধ্যেই বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বার এই ধরনের পণ্যের বিক্রি ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদী সিএআইটি।
গত কয়েক বছর ধরেই দোলযাত্রার সময়ে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা চিনা পণ্য বর্জন করে দেশের মাটিতে তৈরি আবির, ভেষজ রং এবং পিচকিরি-সহ রং খেলার উপকরণ বিক্রিতে জোর দিয়েছেন। পাশাপাশি, পুজোর উপকরণ, চন্দনকাঠ এবং ফুলের বেশ ভাল চাহিদা রয়েছে। একটি বিবৃতিতে সিএআইটি জানিয়েছে, বসন্ত উৎসব উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রং খেলার উপকরণগুলির কিছুটা দাম বৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু তার পরও এগুলির বেশি চাহিদা থাকায় ব্যবসায়ীরা ভালই লাভ করতে পারছেন।
তাড়াতাড়ি বিক্রি হয়ে যাওয়া ভোগ্যপণ্যের মধ্যে শুকনো ফল, মিষ্টি, জামাকাপড়, ফুল, বিভিন্ন ধরনের উপহারসামগ্রী এবং প্রসাধনসামগ্রীর বেশ চাহিদা রয়েছে। বণিক সংগঠন সিএআইটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রং খেলার জন্য ‘হ্যাপি হোলি’ লেখা টি-শার্ট, কুর্তা-পাজামা এবং সালোয়ার-কামিজ কেনার দিকে আমজনতার বেশ ঝোঁক রয়েছে।
গত বছরের দোলযাত্রায় সারা দেশে মোট ভোগ্যপণ্য বিক্রির পরিমাণ ছিল ৫০ হাজার কোটি টাকা। সিএআইটির দাবি, এ বার শুধুমাত্র দিল্লিতেই ৮০ হাজার কোটি টাকার রঙের উৎসব সংক্রান্ত সামগ্রী বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন সংগঠনটির সেক্রেটারি জেনারেল তথা বিজেপি সাংসদ প্রবীণ খান্ডেলওয়াল। তাঁর কথায়, ‘‘সারা দেশে রঙের উৎসবকে কেন্দ্র করে একটা উন্মাদনা রয়েছে। সেটা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও প্রতিফলিত। এতে ছোট ব্যবসায়ী এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলি বেশ উপকৃত হবে।’’