E-Paper

সিম জালিয়াতিতে আইনি জটিলতায় পড়তে পারেন ভুক্ত ভোগীই! টেলি দফতরের বিবৃতি ঘিরে প্রশ্ন

ডটের বক্তব্য, বর্তমানে জাল পরিচয়পত্র দিয়ে মোবাইল সিম কিনে তা দিয়ে আর্থিক প্রতারণা-সহ নানা ধরনের দুষ্কর্ম করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৫ ০৭:৫৭
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

জালিয়াতদের খপ্পরে পড়ে এ বার সাধারণ গ্রাহককেও আইনি জটিলতার মুখে পড়তে হতে পারে বলে সতর্ক করল টেলিকম দফতর (ডট)। সোমবার তাদের বিবৃতি অনুসারে, যদি কারও নাম ও পরিচ‍য়পত্র দিয়ে কেনা সিম ব্যবহার করে কোনও অপরাধ করা হয়, তা হলে সেই গ্রাহককেও তার সাজা ভোগ করতে হতে পারে। সেই কারণেই নিয়মিত নিজের নামে অন‍্য কোনও সিম কার্ড কেনা হয়েছে কি না, তা সঞ্চার সাথি অ‍্যাপের মাধ‍্যমে দেখার পরামর্শ দিয়েছে তারা। এর পরেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গ্রাহকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, ভুয়ো ফোন-মেসেজের ফলে জালিয়াতদের খপ্পরে পড়ে এমনিতেই ভোগান্তির শেষ থাকে না। গোপন তথ্য চুরি থেকে শুরু করে কষ্টের সঞ্চয় হারাতে হয় বহু মানুষকে। এ বার ডটের বিবৃতি তাঁদের আরও চিন্তায় ফেলবে। বিশেষত, অন্যের অপরাধের সাজা নিরপরাধ মানুষকে কেন ভুগতে হবে, সেই প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা। মূলত জাল পরিচয়পত্র জমা দিয়ে সিম কার্ড কেনা আটকাতেই এই পদক্ষেপ বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু গ্রাহক সুরাহায় তার সমাধান তদন্তকারীরা বা নীতি প্রণেতারা কেন করবেন না, সেইদাবিও উঠছে।

ডটের বক্তব্য, বর্তমানে জাল পরিচয়পত্র দিয়ে মোবাইল সিম কিনে তা দিয়ে আর্থিক প্রতারণা-সহ নানা ধরনের দুষ্কর্ম করা হয়। সেই কারণে সমস্ত নাগরিকের তা নিয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। অন‍্যথায় এই ধরনের ঘটনায় নির্দোষ ব‍্যক্তিকেই আইনি জটিলতায় পড়তে হতে পারে। সেই কারণে যদি দেখা যায় কারও নিজের ছাড়া অন‍্য কোনও সিম কার্ড গ্রাহকের পরিচয়পত্র জাল করে কেনা হয়েছে, তা হলে তৎক্ষণাৎ বন্ধ করতে পদক্ষেপ করুন তিনি। অভিযোগ জানান সঞ্চার সাথী অ‍্যাপ ও ওয়েবসাইটের মাধ‍্যমে। অন‍্যথায় কোনও আইন না ভেঙেও দোষের ভাগীদার হতে হবে গ্রাহককে।

এরই পাশাপাশি সব সময়ে মোবাইল বা মোডেম ইত্যাদির মতো অন্য কোনও টেলি যোগাযোগ যন্ত্র কেনার সময় তার চিহ্নিতকরণ (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি অথবা আইএমইআই) নম্বর আসল কি না, সেটাও খতিয়ে দেখতে বলেছে টেলিকম দফতর। এই নম্বর প্রতিটি ফোনের ক্ষেত্রে আলাদা হয় এবং তা সরকারের কাছে নথিভুক্ত থাকে। এ জন্যও সাহায্য নেওয়া যাবে সঞ্চার সাথি অ্যাপ বা ওয়েবসাইটের। সন্দেহ থাকলে, সেই মোবাইল না কেনাই বাঞ্ছনীয় বলে মত তাদের। কোনও ভাবে আইএমইআই নম্বরে কারচুপি করলে জেল ও জরিমানাও হতে পারে বলে সতর্ক করেছে তারা।

সোমবারই টেলি নিয়ন্ত্রক ট্রাই জানিয়েছে, ‘ডিএনডি’ অ্যাপে গ্রাহকদের করা অভিযোগের ভিত্তিতে গত এক বছরে ২১ লক্ষের বেশি ফোন নম্বর বন্ধ ও কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এক লক্ষের বেশি সংস্থা ও ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে পদক্ষেপও করেছে তারা। আর্থিক বা অন্যান্য প্রতারণার ক্ষেত্রে সব নাগরিককে সতর্ক থাকতে বলেছে ট্রাই-ও। তাদের দাবি, শুধু ফোন নম্বর ব্লক করাই নয়। ভুয়ো ফোন এলে সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ জানান, তবেই কাজ হবে। তথ‍্য বলছে, ২০২৪-এ এই খাতে দেশের মানুষ হারান প্রায় ২৩,০০০ কোটি টাকা। অভিযোগ জমা পড়ে ৩৬ লক্ষের বেশি। যদিও একাংশের বক্তব্য, জালিয়াতি রুখতে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। কিন্তু প্রতারণার মুখে পড়ার পরে আবার সাজাও ভোগ করার যে বার্তা ডট দিয়েছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Department of Telecommunications DoT SIM Card

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy