রাজ্যের ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পকে কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতে এ বার বসতে চলেছে ‘দুয়ারে শিল্প’ শিবির। ব্লকস্তরে এই ক্যাম্পগুলি সফল ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে করতে উপদেষ্টা হিসেবে প্রাইসওয়াটারহাউস কুপার্সকে নিয়োগ করেছে রাজ্য। তবে এর পোশাকি নাম ‘দুয়ারে উদ্যম ক্যাম্প’ করার প্রস্তাব এলেও, সেই দাবি খারিজ করেছে সরকার।
সাধারণত ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি সংস্থা কেন্দ্রের উদ্যম পোর্টালে নথিভুক্ত না হলে সরকারি প্রকল্পে ঋণ বা ভর্তুকি পায় না। মেলে না রাজ্য ও কেন্দ্রের অন্যান্য সুবিধাও। পশ্চিমবঙ্গের বহু সংস্থা সরকারি খাতায় নথিভুক্ত নয়। তাই প্রতিটি ব্লকে ক্যাম্পের এই উদ্যোগ। ক্ষুদ্রশিল্প দফতরের সচিব রাজেশ পাণ্ডের অবশ্য দাবি, ‘‘এ নিয়ে কিছু বলার মতো অবস্থা তৈরি হয়নি। এই নামে কোনও কিছু হচ্ছে, তা মোটেই বলা যাবে না।’’ তবে দফতর সূত্রের খবর, গত বছর ‘শিল্পের সমাধানে’ ক্যাম্পে হস্ত, তাঁতশিল্পকে সাহায্য করা হলেও, পিছনে চলে যায় ক্ষুদ্র শিল্প। তাই এ বার তাকে সামনে রেখে ‘দুয়ারে শিল্প’ ক্যাম্প করার কথা। পরিকল্পনা চূড়ান্ত। সম্ভবত অগস্টেই তা চালু হবে।
পাশাপাশি সূত্র জানাচ্ছে, ‘দুয়ারে সরকারের’ সঙ্গে নয়, আলাদা করেই এই শিবিরের আয়োজন করা হবে। ক্ষুদ্রশিল্প দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘এই ক্ষেত্রের সংস্থাগুলিকে সরকার যে সহায়তা দেয়, তা এখান থেকে পাওয়া যাবে। মূল লক্ষ্য উদ্যম পোর্টালে নথিভুক্তিও।’’ তিনি জানান, এ মাসেই ক্যাম্পের ঘোষণা হতে পারে।
শিবিরের জন্য ২৫ জুন ছোট শিল্পের সংগঠন ফসমির কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রাইসওয়াটারের প্রতিনিধিরা। কথা হয়েছে ক্যাম্প সফল করতে ও বেশি সংস্থাকে আনতে কী কী করতে হবে, তা নিয়ে। ফসমি-র সভাপতি বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রতিনিধিরা সাহায্য চেয়েছেন। সেই আশ্বাস দিয়েছি। রাজ্যজুড়ে আমাদের প্রায় ৫৫০০ সদস্যের মাধ্যমে ক্যাম্পের প্রচার করা হবে। লক্ষ্য, আরও বেশি সংস্থাকে নথিভুক্ত করানো। যাতে তারা ঋণ, মূলধন ইত্যাদি সুবিধা নিতে পারে।’’ আর প্রাইসওয়াটার সূত্র বলছে, শিবির যাতে সর্বার্থে সফল হয়, সেই নির্দেশ রয়েছে সরকারের উপর মহল থেকে। সেই মতো শুরুর দু’মাস আগেই কাজে নামা হয়েছে।
শিল্পের একাংশের মতে, রাজ্যে ছোট সংস্থাগুলির হাল বাস্তবে আশাপ্রদ নয়। তা বুঝেই আরও পেশাদারি মোড়কে বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে ‘দুয়ারে উদ্যম’ ক্যাম্পের প্রস্তুতি। তা কতটা সফল হয়, নজর সে দিকে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)