মুদ্রাস্ফীতির কাঁটায় দিন দিন বাড়ছে সংসারের খরচ। সেই ব্যয় সামলে কী ভাবে করবেন সঞ্চয়? মুশকিল আসান ৩০-৩০-৩০-১০ ফর্মুলা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা। এতে কোন খাতে কতটা খরচ করা উচিত, রয়েছে তার রূপরেখা। তবে এটা অর্থনীতিবিদদের লেখা কোনও কঠোর সূত্র নয়। সংশ্লিষ্ট ফর্মুলাটির যথেষ্ট ব্যবহারিক প্রয়োগ আছে। এতে বাড়ি ভাড়া এবং সন্তানের শিক্ষার খরচের মতো জরুরি বিষয়গুলির পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দিয়েছেন তারা।
৩০-৩০-৩০-১০ ফর্মুলার গোড়াতেই রয়েছে আবাসনের খরচ। সেটা বাড়ি ভাড়া, গৃহনির্মাণ, গৃহঋণের মাসিক কিস্তি বা বাড়ি-ফ্ল্যাটের রক্ষণাবেক্ষণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের কথায়, এর জন্য একজন ব্যক্তির আয়ের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত খরচ করা উচিত। এতে মাথার উপর ছাদ যে সুরক্ষিত থাকবে, তা বলাই বাহুল্য।
দ্বিতীয় স্তরে থাকছে সংসার খরচ। এর মধ্যে মুদিখানার দোকান থেকে মাসিক জিনিসপত্র কেনা, চিকিৎসার বিল, স্কুলের ফি, গাড়ির জন্য পেট্রল, ফোন এবং ইন্টারনেটের বিল অন্তর্ভুক্ত। এতেও সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত খরচের পরামর্শ দিয়েছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা। উল্লেখ্য, এই খাতে ব্যয়ের অঙ্কে নানা কারণে কমবেশি হতে পারে। আর তাই গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার ক্ষেত্রে সে দিকে নজর রাখতে বলেছেন তাঁরা।
এই ফর্মুলা অনুযায়ী, মাসিক আয়ের পরবর্তী ৩০ শতাংশ অবশ্যই ভবিষতের জন্য সঞ্চয় করতে হবে। এর জন্য বিভিন্ন খাতে লগ্নি করা যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাঙ্ক এবং ডাকঘরের নিশ্চিত রিটার্নের একাধিক আর্থিক প্রকল্প। এ ছাড়া মিউচুয়াল ফান্ড, সোনা, স্টকে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। তবে এগুলিতে লগ্নি বাজারগত ঝুঁকিসাপেক্ষ। আর তাই মিলিয়ে-মিশিয়ে সব জায়গাতেই কমবেশি বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।
আর সব শেষে আয়ের মাত্র ১০ শতাংশ বিলাসিতার জন্য রাখতে বলা হয়েছে। তার মধ্যে থাকছে রেস্তরাঁয় খাওয়া-দাওয়া, বেড়াতে যাওয়া বা নেটফ্লিক্স ও অ্যামাজ়নের মতো ওটিটি প্ল্যাটফর্মের বিল। সংশ্লিষ্ট ফর্মুলায় এই খরচ মাসের শেষের দিকে পরিকল্পনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই পদ্ধতিতে আয়-ব্যয়ের সামঞ্জস্য সহজেই রাখা যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।