E-Paper

প্রধানমন্ত্রী মুদ্রাঋণে এগিয়ে মহিলারা, তিন নম্বরে পশ্চিমবঙ্গ

সম্প্রতি মুদ্রাঋণ নিয়ে স্টেট ব্যাঙ্কের রিপোর্ট জানাচ্ছে, সারা দেশে এই প্রকল্পের অধীনে ঋণ নেওয়া ব্যক্তিদের ৬৮ শতাংশই মহিলা।

অঙ্কুর সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:৩৮

দেশে ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পের প্রসারের লক্ষ্যে প্রায় এক দশক আগে প্রধানমন্ত্রী মুদ্রাঋণ যোজনা চালু করেছিল কেন্দ্র। সমীক্ষা বলছে, এই ঋণ নেওয়ায় পুরুষদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন মহিলারা। গত এক দশকে তাঁদের ঋণ নেওয়াও বেড়েছে দ্রুত হারে। সামগ্রিক ভাবে এবং মহিলাদের অংশীদারির নিরিখে এতে ভাল ফল করেছে পশ্চিমবঙ্গ। রয়েছে তৃতীয় স্থানে। প্রথম দুইয়ে যথাক্রমে বিহার এবং তামিলনাড়ু।

ব্যবসা চালুর জন্য শিশু (৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত), কিশোর (৫০,০০০-৫ লক্ষ টাকা) ও তরুণ (৫-২০ লক্ষ টাকা) এই তিনটি আলাদা বিভাগে মুদ্রাঋণ মেলে। এতে ঋণগ্রহীতা সুদের হারে ভর্তুকি পান। কেন্দ্রের তথ্য বলছে, ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে এই প্রকল্প চালুর পরে এখনও পর্যন্ত ঋণ নিয়েছেন ৫২ কোটির বেশি মানুষ। মোট ঋণ মঞ্জুর হয়েছে ৩৩ লক্ষ কোটি টাকার বেশি।

সম্প্রতি মুদ্রাঋণ নিয়ে স্টেট ব্যাঙ্কের রিপোর্ট জানাচ্ছে, সারা দেশে এই প্রকল্পের অধীনে ঋণ নেওয়া ব্যক্তিদের ৬৮ শতাংশই মহিলা। বিহারের ক্ষেত্রে ৪.২ কোটি মহিলা উদ‍্যোগপতি এর সুবিধা নিয়েছেন। তামিলনাড়ুতে তা ৪ কোটি এবং পশ্চিমবঙ্গে ৩.৭ কোটি। তবে মহিলাদের অংশীদারির নিরিখে এগিয়ে মহারাষ্ট্র ও ওড়িশা। এই দুই রাজ্যের মোট মুদ্রাঋণের ৭৯ শতাংশই গিয়েছে মহিলা পরিচালিত সংস্থায়। এ ক্ষেত্রেও তৃতীয় স্থানে বাংলা (৭৩%)।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, মুদ্রাঋণে মহিলাদের এই বিপুল অংশীদারিই প্রমাণ করে আর্থিক স্বাধীনতার দিকে দ্রুত এগোচ্ছেন তাঁরা। স্টেট ব্যাঙ্কের রিপোর্ট বলছে, ২০১৬-তে এই প্রকল্প চালুর বছর গড়ে মহিলাদের ঋণ নেওয়ার অঙ্ক ছিল ২২,৮৭২ টাকা। এ বছর মার্চে সেটাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২,৬৭৯ টাকায়। অর্থাৎ ১০ বছরের কম সময়ে ঋণের অঙ্ক প্রায় তিন গুণ বেড়েছে। বছরে বৃদ্ধির হার ১৩%।

অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি ঠিক আছে। কিন্তু বিহারের শীর্ষে থাকাটা অবাক করার মতো। তবে এই ধরনের সরকারি প্রকল্পের ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক অবস্থানও গুরুত্ব পায়।” যদিও অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরীর কথায়, “শেষ তিন-চার বছরে বিহার উদ‍্যম পোর্টালে নথিভুক্তিতে অনেক এগিয়েছে। তারই ফল বড় সংখ‍্যক সংস্থার ঋণ পাওয়া।”

রিপোর্ট আরও জানাচ্ছে, মুদ্রাঋণ নেওয়া ছোট-মাঝারি সংস্থায় মহিলাদের কর্মসংস্থানের হারও বেশি। এই ক্ষেত্রে প্রথম স্থানে রয়েছে তামিলনাড়ু। এখানে মেয়েদের কর্মসংস্থানের ১৫.৭ শতাংশই এই ধরনের সংস্থার মাধ্যমে হয়েছে। এর পরে রয়েছে মহারাষ্ট্র (১২.১%)। পঞ্চম স্থানে রয়েছে বাংলা (৬.৭%)। অজিতাভ বলেন, ‘‘মুদ্রাঋণের লক্ষ‍্যই ছিল মহিলা ও ছোট সংস্থাগুলির প্রসারে আর্থিক সহায়তার রাস্তা প্রশস্ত করা। সমীক্ষাও সেটাই দেখাচ্ছে।’’ অভিরূপের আবার বক্তব্য, মেয়েদের মধ্যে আর্থিক দিক দিয়ে এগিয়ে আসার প্রবণতা ১২-১৫ বছর আগেও খুব একটা বেশি দেখা যেত না। কিন্তু এখন সকলেই মহিলাদের স্বনির্ভরতায় জোর দিচ্ছেন। ফলে কর্মসংস্থান বা ঋণগ্রহণ সব কিছুতেই এগোচ্ছেন তাঁরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mudra Yojana

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy