Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
World Bank

রফতানি এবং লগ্নি নিয়ে সতর্কবার্তা বিশ্ব ব্যাঙ্কের

বিশ্ব ব্যাঙ্ক তাদের রিপোর্টে প্রশংসা করেছে ভারতে পরিকাঠামোয় সরকারি খরচ বৃদ্ধির ও শিল্পকে সুরাহা দেওয়ার পদক্ষেপের। অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে আগের বছরের নিরিখে জিডিপি বেড়েছে ৯.৭% হারে।

গত নভেম্বরে ছুঁয়েছে ২৪০০ কোটি ডলার। চলতি খাতে ঘাটতি ন’বছরে সর্বোচ্চ, জিডিপি-র ৪.৪%।

গত নভেম্বরে ছুঁয়েছে ২৪০০ কোটি ডলার। চলতি খাতে ঘাটতি ন’বছরে সর্বোচ্চ, জিডিপি-র ৪.৪%। প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩৯
Share: Save:

সম্প্রতি চলতি অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস আগের ৮%-৮.৫% থেকে কমিয়ে ৭% করেছে কেন্দ্র। সরকারের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরনের আবার আশঙ্কা, তা হতে পারে ৬.৫%। যেখানে গত অর্থবর্ষের বৃদ্ধি ছিল ৮.৭%। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমান, জিডিপি বাড়বে ৬.৮% হারে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব ব্যাঙ্ক ভারত নিয়ে তাদের পূর্বাভাস কিছুটা বাড়াল। তবে তার পরেও তা রয়ে গেল ৭ শতাংশের নীচেই। আগের ৬.৫ শতাংশের পরিবর্তে হল ৬.৯%। যদিও আগামী অর্থবর্ষে (২০২৩-২৪) বৃদ্ধি ৬.৬ শতাংশে নামতে পারে বলে মনে করছে তারা। তার পরের অর্থবর্ষে (২০২৪-২৫) আরও কম, ৬.১%। সেই সঙ্গে সতর্ক করে বলেছে, বিশ্ব অর্থনীতির শ্লথ গতি এবং বাড়তে থাকা অনিশ্চয়তা ধাক্কা দেবে এ দেশের রফতানি এবং লগ্নি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে।

এর আগে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারও (আইএমএফ) ভারতের বৃদ্ধির হার ৭.৪% থেকে কমিয়ে ৬.৮% করেছিল। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এই সব পূর্বাভাসই দেশের অর্থনীতি নিয়ে আশঙ্কা জিইয়ে রাখছে। বিশেষত জ্বালানি-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের দাম যেহেতু এখনও যথেষ্ট চড়া। বেকারত্ব উঁচুতে। সাধারণ রোজগেরেদের ক্রয়ক্ষমতা তলানিতে। রফতানি ধাক্কা খেয়েছে বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্কটের কারণে। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার দেশ-বিদেশের লগ্নিকারীদের ফের অর্থনীতির ভিত মজবুত বলে জানিয়েছেন। বৃদ্ধির চাকার গতি কমা নিয়ে প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে তুলে ধরেছেন আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাঙ্কের ইতিবাচক বার্তাগুলি।

বিশ্ব ব্যাঙ্ক তাদের রিপোর্টে প্রশংসা করেছে ভারতে পরিকাঠামোয় সরকারি খরচ বৃদ্ধির ও শিল্পকে সুরাহা দেওয়ার পদক্ষেপের। দাবি করেছে, অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে আগের বছরের নিরিখে জিডিপি বেড়েছে ৯.৭% হারে, যা চাহিদা বৃদ্ধিরই ইঙ্গিত। রিপোর্টে আশা, সাতটি সব থেকে বড় সম্ভাবনাময় এবং উন্নয়নশীল বাজারের মধ্যে ভারত দ্রুততম বৃদ্ধির অর্থনীতিই থাকবে।

মধ্যপ্রদেশে বিশ্ব লগ্নিকারী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মোদী নেট মারফত যোগ দিয়ে বলেন, ভারতীয় অর্থনীতির ভিত পোক্ত। আইএমএফ এ দেশকে সারা বিশ্বে একটি উজ্জ্বল বিন্দু হিসেবে দেখেছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কও বলেছে, আন্তর্জাতিক দুনিয়ার ঝড়-ঝাপ্টা সামলানোর ক্ষেত্রে অন্য অনেক দেশের তুলনায় এখানকার পরিস্থিতি ভাল। আট বছর ধরে একের পর এক সংস্কারের মাধ্যমে তাঁর সরকারও ভারতকে লগ্নির অন্যতম ঠিকানা হিসাবে গড়ে তুলেছে।

তবে বিশ্ব অর্থনীতি যে সঙ্কটে, সেই বার্তা স্পষ্ট। গত সপ্তাহে আশঙ্কার কথা শুনিয়েছিল আইএমএফ। জানিয়েছিল, আমেরিকা, ইউরোপ এবং চিনের মতো বৃহৎ অর্থনীতিগুলি শ্লথ হওয়ায় তার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে সর্বত্র। এ বার বার্ষিক রিপোর্টে একই কথা বলেছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। বিশ্ব অর্থনীতির মন্দায় পড়ার ঝুঁকি নিয়েও সাবধান করেছে। সেই জন্যই আগামী দুই অর্থবর্ষে ভারতের অগ্রগতি শ্লথ হওয়ার আশঙ্কা তাদের। ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম জানিয়েছে, বিশ্বের সামনে স্বল্প মেয়াদে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি জীবনযাপনের খরচ।

সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, চড়া মূল্যবৃদ্ধি, বাণিজ্য এবং চলতি খাতে চওড়া ঘাটতি, শ্লথ রফতানি, আয়ের ঢিমে তালে বৃদ্ধির মতো বিষয়কে আগামী অর্থবর্ষে সামলানোর পথ খুঁজে বার করতে হবে ভারতকে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের তথ্য, ২০১৯-এর পরে পণ্য বাণিজ্যে ভারতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। গত নভেম্বরে ছুঁয়েছে ২৪০০ কোটি ডলার। চলতি খাতে ঘাটতি ন’বছরে সর্বোচ্চ, জিডিপি-র ৪.৪%।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE