Advertisement
E-Paper

আমেরিকার নির্বাচনের দিকেই আপাতত তাকিয়ে বাজার

আবারও দেখা গেল, গোটা বিশ্ব মার্কিন রাজনীতি এবং অর্থনীতির উপর কতটা নির্ভরশীল। ডোনাল্ড ট্রাম্প, না হিলারি ক্লিন্টন— এই প্রশ্ন উত্তাল রেখেছে বিশ্বের প্রায় সব বাজারকে।

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৩৬

আবারও দেখা গেল, গোটা বিশ্ব মার্কিন রাজনীতি এবং অর্থনীতির উপর কতটা নির্ভরশীল।

ডোনাল্ড ট্রাম্প, না হিলারি ক্লিন্টন— এই প্রশ্ন উত্তাল রেখেছে বিশ্বের প্রায় সব বাজারকে। নির্বাচনের দিন যত এগোচ্ছে ততই বাড়ছে উত্তেজনা। ফলাফল কী হতে পারে সেই অনুমানে বাজার এরই মধ্যে একটি অবস্থান নিয়েছে। প্রকৃত ফলাফল হাতে এলে শেয়ার বাজারে তার কী প্রতিক্রিয়া হয়, সেটাই এখন দেখার।

এ তো গেল রাজনীতির দিক। বাজারকে ভাবাচ্ছে মার্কিন অর্থনীতিও। সে দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ সুদ বাড়াতে পারে, এই আশঙ্কা মাঝেমধ্যেই বাজারকে তুলছে-ফেলছে। নভেম্বরে ফেড রেট না-বাড়ায় সাময়িক স্বস্তি এলেও এটা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে যে, ডিসেম্বরে কিন্তু মার্কিন মুলুকে সুদ বাড়তে চলেছে। এটা হলে আরও একটি ধাক্কা আসবে বাজারে। অর্থাৎ দেশের ভিতরে পরিস্থিতি কিছুটা সদর্থক হলেও বিদেশের পরিস্থিতি বছরের শেষ দু’মাস বাজারকে স্বস্তি দেবে না। তা ছাড়া প্রথা অনুযায়ী ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলি সাধারণত বাজার থেকে হাত গুটিয়ে নেয়। অর্থাৎ আগামী দু’মাসে আশা করার মতো তেমন কিছু দেখা যাচ্ছে না। তবে ক্লিন্টন যদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হন, তা হলে অবস্থার কিছুটা হলেও উন্নতি হতে পারে।

বিশ্ব বাজারের অস্থিরতা সম্প্রতি সেনসেক্সকে কম-বেশি ২,০০০ পয়েন্ট টেনে নামিয়েছে। এটা আবারও দেখা গেল যে, প্রথমত, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কিছুটা আশাব্যঞ্জক হওয়া সত্ত্বেও বাইরের প্রভাবে শেয়ার বাজার কেমন চুপসে যায়। দ্বিতীয়ত, বিদেশি লগ্নির উপর আমরা কতটা নির্ভরশীল। দেশের নিজস্ব লগ্নির পরিমাণ এবং লগ্নিকারীর সংখ্যা না-বাড়লে আমরা বিদেশের উপরেই নির্ভরশীল থেকে যাব।

বিশেষজ্ঞদের আশা, মার্কিন ভোটের হাওয়া কেটে গেলে বাজার আবার ঊর্ধ্বমুখী হবে। টাটাদের বোর্ডরুম বিবাদও বাজারকে কিছুটা টেনে নামিয়েছে। সমস্যা যে দ্রুত মেটার নয়, তারও আঁচ পাওয়া যাচ্ছে সাইরাস মিস্ত্রির পদক্ষেপ থেকে। যা ঘটছে, তা টাটা গোষ্ঠী এবং শেয়ার বাজারের জন্য কিন্তু আদৌ শুভ নয়। যত দ্রুত এই সংঘাত মিটে যায়, ততই মঙ্গল সকলের জন্য। এর আগে রিলায়্যান্স গোষ্ঠীতে আমরা এই ধরনের বিবাদ দেখেছি।

আসা যাক দেশের অর্থনীতির কথায়। ভাল মন্দ মিলিয়েই কোম্পানি ফলাফল প্রকাশের মরসুম চলছে। বেশির ভাগ ফলাফল প্রকাশিত হয়ে যাবে আগামী ৭-৮ দিনের মধ্যে। এখনও পর্যন্ত ভাল ফল দেখিয়েছে গাড়ি শিল্প। তেমনই খারাপের তালিকায় আছে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। তবে উন্নতির ছোঁয়া লেগেছে সিমেন্ট শিল্পে। এটা ভাল লক্ষণ।

স্টেট ব্যাঙ্ক, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক-সহ কয়েকটি ব্যাঙ্ক এবং গৃহঋণ সংস্থা গত সপ্তাহে সুদ কমিয়েছে গৃহঋণের উপর। স্টেট ব্যাঙ্ক কমিয়েছে ১৫ বেসিস পয়েন্ট। এর ফলে ৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নতুন ঋণের উপর সুদের হার দাঁড়াল ৯.১৫ শতাংশ। মহিলাদের ক্ষেত্রে ৯.১০ শতাংশ। একই হারে সুদ কমিয়েছে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক। এই ব্যাঙ্কের নতুন সুদের হার দাঁড়াল যথাক্রমে ৯.২০ এবং‌ ৯.১৫ (মহিলা) শতাংশ। গৃহঋণে সুদ হ্রাস নির্মাণ শিল্পের পক্ষে ভাল। এর ফলে উপকৃত হবে ইস্পাত এবং সিমেন্ট শিল্পও।

ঋণের পাশাপাশি সুদ কমছে জমাতেও। স্টেট ব্যাঙ্ক ২ বছর পর্যন্ত মেয়াদে সুদ দিচ্ছে ৭ শতাংশ। সুদ কমিয়েছে আরও কয়েকটি ব্যাঙ্কও। এইচডিএফসি প্রিমিয়াম ডিপোজিটে মাসিক আয় প্রকল্পে (৪৪ মাস মেয়াদে) সুদ দেওয়া হচ্ছে ৭.৬৫ শতাংশ। প্রবীণ নাগরিকেরা পাবেন ৭.৯০ শতাংশ। এ ছাড়া প্রবীণ নাগরিকেরা ডাকঘরে সরকারি সিনিয়র সিটিজেন্স সেভিংস প্রকল্পে সুদ পেতে পারেন ৮.৫ শতাংশ। বর্তমান বাজারে সুরক্ষিত জায়গায় এটাই সর্বোচ্চ সুদ।

গত এক মাসে শেয়ার বাজার বেশ অনেকটাই পড়েছে। দেশের অর্থনীতি যেহেতু তুলনামূলক ভাবে ভাল অবস্থায়, সেহেতু এই পতনকে সাময়িক বলেই ধরা হচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিকে কম দামে ভাল শেয়ার কেনার সুযোগ হিসেবে দেখতে হবে। যাঁদের ৮০সি ধারায় লগ্নির মাধ্যমে কর সাশ্রয় করতে হবে, তাঁরা মার্চ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা না-করে এখনই কম দামের সুযোগ নিয়ে ইএলএসএস প্রকল্পে লগ্নি করতে পারেন। অতিরিক্ত সাশ্রয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লগ্নি করতে পারেন এনপিএস অর্থাৎ নিউ পেনশন সিস্টেমে।

World economy US presidential election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy