Advertisement
E-Paper

ইএলএসএস প্রকল্পে বিনিয়োগের এটাই আদর্শ সময়

একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। ২৪ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে আবার ঊর্ধ্বগতি পেয়েছে সেনসেক্স। তিন দিন নামার পরে সূচক আবারও স্বস্তি দিল সপ্তাহ শেষে। গত সপ্তাহের শেষ দু’দিনে প্রায় ৪০০ পয়েন্ট বেড়ে সেনসেক্স উঠে এল ২৪,৬১৭ পয়েন্টে।

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:২৯

একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। ২৪ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে আবার ঊর্ধ্বগতি পেয়েছে সেনসেক্স। তিন দিন নামার পরে সূচক আবারও স্বস্তি দিল সপ্তাহ শেষে। গত সপ্তাহের শেষ দু’দিনে প্রায় ৪০০ পয়েন্ট বেড়ে সেনসেক্স উঠে এল ২৪,৬১৭ পয়েন্টে।

এই ওঠা-পড়ায় অবশ্য দীর্ঘমেয়াদি লগ্নিকারীদের কোনও সুবিধা হচ্ছে না। গত দেড় বছর ধরে বাজার ঘোরাফেরা করছে একটি গণ্ডির মধ্যে। বড় গলায় উন্নয়নের কথা বলা হলেও বাস্তবে তা দেখা যাচ্ছে না। অনেক পরিসংখ্যানই পরস্পর-বিরোধী। প্রশ্ন উঠেছে, দেশের জাতীয় আয় যদি ৭.৪% গতিতেই এগোয়, তবে অধিকাংশ কোম্পানি কী করে খারাপ ফলাফল প্রকাশ করে। মূল পরিকাঠামো শিল্পের প্রায় সব ক’টিরই অবস্থা বেশ খারাপ। খাদ্যপণ্য বাদ দিলে অন্য সব পণ্যেরই দাম নিম্নমুখী। দেশের উন্নয়নের ছবির সঙ্গে তা আদৌ খাপ খায় না। এই পরিস্থিতিতে গাড়ি শিল্প কিন্তু বেশ তেজী। মানুষের হাতে যথেষ্ট টাকা না-এলে এত গাড়ি বিক্রি হচ্ছে কী করে?

আসলে সবই যেন কেমন ওলট-পালট। একের সঙ্গে অন্যকে মেলানো যায় না। প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অক্টোবর-ডিসেম্বর এই তিন মাসে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রকাশিত ৯৫২টি সংস্থার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় মোট বিক্রি/আয় কমেছে ১.০৭%, লাভ কমেছে ১০. ৮৪%। এটা দেখে মনে হবে না, দেশ এগোচ্ছে। এই কারণেই একটি গণ্ডির মধ্যে ঘোরাফেরা করছে শেয়ার সূচক। অন্য দিকে নতুন ইস্যুর বাজারে দেখা যাচ্ছে বেশ তেজী ভাব। পরপর ভাল সাড়া পেয়েছে কয়েকটি নতুন ইস্যু। গত সপ্তাহে বাজারে আসা টিমলিজ সার্ভিসেসের ৪২৩ কোটি টাকার পাবলিক ইস্যুতে আবেদন জমা পড়েছে ৬৫.৮৯ গুণ বেশি। পরিস্থিতির সঙ্গে কিছুই মেলানো যায় না।

শেয়ার দর এক নাগাড়ে ঝুঁকে থাকায় ইক্যুইটি নির্ভর মিউচুয়াল ফান্ড প্রকল্পগুলির অবস্থাও ভাল নয়। তবে যে-সব প্রকল্পের হাতে যথেষ্ট নগদ টাকা আছে, তারা এই বাজারে বেশ সস্তায় লগ্নি করতে পারবে। একই কথা প্রযোজ্য বাজারে আসা নতুন ফান্ডগুলির ক্ষেত্রেও। কর সাশ্রয়ের জন্য জমাতে হবে মার্চ মাসের মধ্যেই। ঝুঁকে থাকা বাজারের সুযোগ নিয়ে ইএলএসএস প্রকল্পে লগ্নির জন্য এটি আদর্শ সময়। শিল্পে সুদিন না-ফেরায় এন পি এ-র ভারে অবশ্য নুয়ে পড়েছে বেশির ভাগ ব্যাঙ্ক। ২০১৪-’১৫ শেষে মোট অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা দাঁড়িয়েছে ৩,১০,৭৬২ কোটি টাকা। বেশির ভাগ সরকারি ব্যাঙ্কের লাভ কমে আসায় ব্যাঙ্ক শেয়ারের দামও এক রকম তলানিতে। ব্যতিক্রমীদের মধ্যে অন্যতম হল এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক। এই বেসরকারি ব্যাঙ্কটির আর্থিক ফলাফল এবং শেয়ারের দাম দুই-ই অটুট আছে। বাজারে মোট শেয়ার মূল্যের দিক থেকে তারা পিছনে ফেলেছে দেশের অগ্রণী স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া এবং আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ককে।

কোম্পানি ফলাফল প্রকাশ এখন প্রায় শেষের দিকে। ক্ষতির খতিয়ানে এ বার সবাইকে টেক্কা দিয়েছে অগ্রণী ইস্পাত নির্মাতা টাটা স্টিল। শেষ তিন মাসে এই ইস্পাত কোম্পানির একত্রিত লোকসান দাঁড়িয়েছে ২,১২৭ কোটি টাকা। আগের বছর একই সময়ে সংস্থার লাভ হয়েছিল ১৫৭ কোটি টাকা। এত বড় লোকসান ঘোষণার পরেও শুক্রবার টাটা স্টিল শেয়ারের দাম বেড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার ইস্পাতের ন্যূনতম আমদানি মূল্য বেঁধে দেওয়ার খবরে। সস্তার চিনা ইস্পাত আমদানিতে রাশ টানতেই এই সিদ্ধান্ত।

গত সপ্তাহে কয়েকটি ভাল খবর প্রকাশিত হলেও মোটের উপর আর্থিক ফলাফল কিন্তু ভাল নয়। ফল প্রকাশের পালা শেষ হবে ১৫ ফেব্রুয়ারি। এর পর বাজারের নজর যাবে বাজেটের উপর। এ বার যা পেশ হবে ২৯ ফেব্রুয়ারি। জল্পনা শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। সাধারণ মানুষ অবশ্য বাজেট থেকে এ বার বড় কিছু আশা করছেন না। যদি কিছু পাওয়া যায়, তবে তা বোনাস বলে গণ্য হবে। দেখতে হবে শিল্পের জন্য বাজেটে কী থাকে, শেয়ার বাজারকে চাঙ্গা করার কোনও দাওয়াই থাকে কি না। বাজেট দেখে তবেই রঘুরাম রাজন ঠিক করবেন, সুদ আর এক দফা কমানো হবে কি না।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy