Advertisement
E-Paper

কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জনকে খুনের হুমকি দিল্লি থেকে, কলকাতা পুলিশে অভিযোগ দায়েরের পর

শুক্রবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ নিজের পার্টি অফিসে বসে জরুরি কাজ করছিলেন কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জন কুন্ডু। তখন একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে তাঁর মোবাইলে। সেখানে একটি পুরুষকণ্ঠ থেকে কর্কশ গলায় হিন্দিতে জানতে চাওয়া হয়, তিনি উল্টোডাঙা এলাকার পুর প্রতিনিধি কথা বলছেন কি না।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৫৩
KMC councillor Shanti Ranjan Kundu received death threats from Delhi

তৃণমূল কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জন কুন্ডু। —ফাইল চিত্র।

কলকাতা পুরসভা ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জন কুন্ডুকে দেওয়া হল প্রাণনাশের হুমকি। অভিযোগ পেয়ে ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। শুক্রবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ নিজের পার্টি অফিসে বসে জরুরি কাজ করছিলেন কাউন্সিলর। তখন একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে তাঁর মোবাইলে। সেখানে একটি পুরুষকণ্ঠ থেকে কর্কশ গলায় হিন্দিতে জানতে চাওয়া হয়, তিনি উল্টোডাঙা এলাকার পুর প্রতিনিধি কথা বলছেন কি না। উত্তরে শান্তি জানান, তিনিই ওই এলাকার পুর প্রতিনিধি। অপর প্রান্ত থেকে জানানো হয়, তাঁর সঙ্গে বিশেষ বোঝাপড়া রয়েছে ওই ব্যক্তির। পাল্টা শান্তি বলেন, ‘‘আপনার যদি কোনও প্রয়োজন থাকে, তা হলে সকালে কিংবা বিকেলে আমার অফিসে আপনি আসতে পারেন। আমি সেখানেই থাকি।’’ এ কথা বলেই ফোনটি কেটে দেন কাউন্সিলর। ‌

ফোন কেটে দেওয়ার পর ওই অচেনা নম্বর থেকে আবার ফোন আসে তৃণমূল কাউন্সিলরের কাছে। ফোন ধরামাত্রই কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জনকে ছাপার অযোগ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন ওই ব্যক্তি। সঙ্গে তাঁকে গুলি করে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেন। কাউন্সিলর জানতে চান, কেন তাঁকে এ ভাবে গালিগালাজ করার পাশাপাশি প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কোনও কথার জবাব না দিয়ে কাউন্সিলরকে প্রাণে মেরে তাঁকে জবাব দিতে চান বলেও ওই ব্যক্তি উল্লেখ করেন। সঙ্গে সঙ্গেই ফোন কেটে দেন কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জন। এর পর তিন বার ওই নম্বর থেকে ফোন আসে কাউন্সিলরের মোবাইল ফোনে। কিন্তু সেই ফোনগুলি আর ধরেননি তিনি।

এর পর স্থানীয় মানিকতলা থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জন। মানিকতলা থানার আধিকারিককে জানান, একটি অচেনা মোবাইল নম্বর থেকে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে ব্যাপক ভাবে তাঁকে গালিগালাজ করা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ামাত্রই সক্রিয় হয় মানিকতলা থানা। ঘণ্টাখানেক তদন্তের পর মানিকতলা থানা থেকে কাউন্সিলরকে জানানো হয়, ফোনটি এসেছিল দিল্লি থেকে। জানানো হয়, এর পর থেকে কোনও অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোনে মেসেজ বা ওটিপি এলে তা যেন কোনও ভাবেই ব্যবহার না করেন কাউন্সিলর। এ প্রসঙ্গে কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জন বলেন, ‘‘শুক্রবার আমার ওয়ার্ডে একটি শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। শিশুটির পরিবারের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত যোগাযোগ রয়েছে। তাই স্বাভাবিক কারণেই আমার মনমেজাজ খুব খারাপ ছিল। দুপুরে আমি যখন আমার অফিসে বসে কাজকর্ম করছিলাম, তখনই আমাকে ফোন করে গালিগালাজ করা হয়। সঙ্গে গুলি করে খুন করারও হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমি বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন।’’

কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, কাউন্সিলর হওয়ার পাশাপাশি শান্তিরঞ্জন উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তাই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে মানিকতলা থানা। শুক্রবার রাতে অভিযোগ প্রসঙ্গে কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জনের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা পুলিশের এক যুগ্ম কমিশনার পর্যায়ের আধিকারিক। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, শনিবার লালবাজার এসে কাউন্সিলর যেন প্রাণনাশের হুমকি সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়ে যান। উত্তর কলকাতার তৃণমূল সাংসদ তথা প্রবীণ তৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি এই বিষয়টি বিস্তারিত জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহে নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক সনৎ দে-কেও হোয়াট্‌সঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তিনিও ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

TMC Councilor Death Threat KMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy