Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

উত্তরবঙ্গের ছোট বাগান নিয়ে সমবায় গড়তে চায় টি বোর্ড

উত্তরবঙ্গের প্রায় ৪০ হাজার ছোট চা-বাগান নিয়ে সমবায় তৈরি করতে চায় টি বোর্ড। আমুলের আদলে এই সমবায় তৈরি করতে চায় টি বোর্ডের অধীন স্মল গ্রোয়ার্স ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টরেট (এসজিডিডি)। গুজরাতের সানন্দে আমুলের উদ্যোগে দুধ উৎপাদনে যে-বিপ্লব শুরু হয়েছিল, সেই আদলেই গোটা উত্তরবঙ্গে এই আন্দোলন শুরু করতে চায় এসজিডি ডি। কারণ, বছরে রাজ্যের চা উৎপাদনের ৪০ শতাংশেরও বেশি পাতা ছোট বাগান থেকে উৎপাদন হলেও এগুলি সংগঠিত নয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৪ ০২:২৪
Share: Save:

উত্তরবঙ্গের প্রায় ৪০ হাজার ছোট চা-বাগান নিয়ে সমবায় তৈরি করতে চায় টি বোর্ড। আমুলের আদলে এই সমবায় তৈরি করতে চায় টি বোর্ডের অধীন স্মল গ্রোয়ার্স ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টরেট (এসজিডিডি)।

গুজরাতের সানন্দে আমুলের উদ্যোগে দুধ উৎপাদনে যে-বিপ্লব শুরু হয়েছিল, সেই আদলেই গোটা উত্তরবঙ্গে এই আন্দোলন শুরু করতে চায় এসজিডি ডি। কারণ, বছরে রাজ্যের চা উৎপাদনের ৪০ শতাংশেরও বেশি পাতা ছোট বাগান থেকে উৎপাদন হলেও এগুলি সংগঠিত নয়। তাদের সরকারি স্বীকৃতিও নেই। সেই কারণে টি বোর্ডের নথিভুক্তও নয়। এই পরিস্থিতিতেই গড়া হয়েছে এসজিডিডি। এর প্রধান গঙ্গন বোরিয়া জানান, সমবায় তৈরির লক্ষ্যে তাঁরা জলপাইগুড়ি জেলায় চা-পাতা প্রক্রিয়া- করণের ৩টি কারখানা তৈরির জন্য ৪.৭ কোটি টাকা সহায়তা করেছেন। উদ্দেশ্য, কারখানাগুলিতে ছোট উৎপাদকেরা কাঁচা পাতা নিয়ে গিয়ে প্রক্রিয়া করানোর পরে নিজেরাই যাতে তা বিক্রি করতে পারেন।

ছোট বাগান মালিকদের সবচেয়ে বড় সমস্যা উৎপাদন খরচের চেয়ে পাতা বিক্রির দাম কম হওয়া। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (সিস্টা) সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী জানান, ছোট উৎপাদকেরা খরচের চেয়ে ৫৭% কম দামে পাতা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ নিয়ে এসজিডিডি প্রধান বলেন, “পাতার মান খারাপ হলে বড় বাগানগুলি তা কিনতে নিমরাজি হয়। ছোট বাগানগুলির নিজেদের সমবায় হলে পাতার মান উন্নত করার প্রতিও তাদের নজর থাকবে।”

ছোট বাগানগুলি যাতে উন্নত প্রথায় চাষ করতে পারে, তার জন্য এসজিডিডি ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গ ও অসমে মোট ৭৪ জন ডেভেলপমেন্ট অফিসার নিয়োগ করেছে। তাঁরা বাগানে ঘুরে ঘুরে চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে উত্তরবঙ্গে ক্ষুদ্র চা-বাগান প্রায় ৪০ হাজার, অসমে তা এক লক্ষের কাছাকাছি। এত কম সংখ্যক আধিকারিকের পক্ষে সর্বত্র পরামর্শ দেওয়া সম্ভব নয়। ছোট ছোট সমবায় তৈরির পরিকল্পনার পিছনে এটাও অন্যতম কারণ। বোরিয়া বলেন, “শুধু উত্তরবঙ্গেই প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার একর জমিতে এই বাগানগুলি তৈরি হয়েছে।”

ছোট বাগিচাগুলির দুর্দশা প্রসঙ্গে বিজয়গোপালবাবুর বক্তব্য, “বাম সরকার অন্তত ছোট বাগানকে স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করত। এই সরকার কিছুই করে না।” এ সব বাগান সরকারি স্বীকৃতিহীন বলে শ্রমিকেরাও দুর্গতির শিকার বলে মনে করেন উত্তরবঙ্গে চা-শ্রমিক সংগঠনের বামপন্থী নেতা চিত্ত দে। আদিবাসী বিকাশ পরিষদের বিক্ষুদ্ধ গোষ্ঠী তথা প্রোগ্রেসিভ টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি জন বার্লা, আদিবাসী বিকাশ পরিষদের ডুয়ার্স-তরাই আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি রাজেশ লাকড়া প্রমুখের দাবি, ছোট চা-বাগানের জমি আদিবাসীদের। তবে তাঁরাও মনে করেন আদিবাসীদের ওই সব জমি ফিরিয়ে দেওয়ার পরে বর্তমান মালিকদের সঙ্গে অংশীদারি ব্যবস্থায় বাগান চালানো যেতে পারে। এবং সেই সঙ্গে আমুলের আদলে সমবায় সফল হলে আদিবাসীদের জীবন ও জীবিকা উভয়ই সুনিশ্চিত হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE