Advertisement
E-Paper

ডানলপ অধিগ্রহণের সম্ভাবনা ওড়াল সংসদীয় প্রতিনিধি দল

ডানলপের সাহাগঞ্জ কারখানা অধিগ্রহণ করা কেন্দ্রের পক্ষে আর আদৌ যুক্তিযুক্ত হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করল সংসদীয় প্রতিনিধি দল। একই সঙ্গে, ওই কারখানায় পুরোদস্তুর উৎপাদন শুরু করতে কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তুলল তারা। কর্তৃপক্ষের অবশ্য পাল্টা দাবি, সদিচ্ছা না-থাকলে, উৎপাদন শুরু না হওয়া সত্ত্বেও কারখানা খুলে শ্রমিকদের বকেয়ার কিছুটা অন্তত মেটানো হত না। তাঁরা জানান, আগের মালিকের বকেয়া মেটাতে আপত্তি নেই। কিন্তু তার উপর ‘লেট সারচার্জ’ দিতে রাজি নন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:৪৯
সোমবার সাহাগঞ্জ কারখানা পরিদর্শনে চন্দন মিত্র (বাঁ দিকে) ও সুলতান আহমেদ।-নিজস্ব চিত্র

সোমবার সাহাগঞ্জ কারখানা পরিদর্শনে চন্দন মিত্র (বাঁ দিকে) ও সুলতান আহমেদ।-নিজস্ব চিত্র

ডানলপের সাহাগঞ্জ কারখানা অধিগ্রহণ করা কেন্দ্রের পক্ষে আর আদৌ যুক্তিযুক্ত হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করল সংসদীয় প্রতিনিধি দল। একই সঙ্গে, ওই কারখানায় পুরোদস্তুর উৎপাদন শুরু করতে কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তুলল তারা।

কর্তৃপক্ষের অবশ্য পাল্টা দাবি, সদিচ্ছা না-থাকলে, উৎপাদন শুরু না হওয়া সত্ত্বেও কারখানা খুলে শ্রমিকদের বকেয়ার কিছুটা অন্তত মেটানো হত না। তাঁরা জানান, আগের মালিকের বকেয়া মেটাতে আপত্তি নেই। কিন্তু তার উপর ‘লেট সারচার্জ’ দিতে রাজি নন।

সোমবার সাহাগঞ্জ কারখানা পরিদর্শনে এসেছিলেন সংসদের বাণিজ্য সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা। যার মধ্যে ছিলেন চেয়ারম্যান চন্দন মিত্র, তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুলতান আহমেদ প্রমুখ। এই সফরের আগে গত সপ্তাহে আইএনটিটিইউসি দাবি তোলে যে, কারখানা বাঁচাতে তা হাতে নিক কেন্দ্র। কিন্তু কারখানা ঘুরে দেখার পর চন্দনবাবুর বক্তব্য, এখন যা পরিস্থিতি, তাতে কেন্দ্র বা রাজ্য কারও পক্ষেই তা হাতে নেওয়া বেশ ঝুঁকির।

তাঁর মতে, আগে কারখানাটি তা-ও অধিগ্রহণের উপযুক্ত ছিল। কিন্তু এখন তার অবনতি হয়েছে। যন্ত্রপাতি কার্যত বাতিলের মুখে। অভাব দক্ষ শ্রমিকেরও। তাই এখন সেখানে টাকা ঢালা কেন্দ্র বা রাজ্যের পক্ষে যথেষ্ট ঝুঁকির। চন্দনবাবুর অভিযোগ, কারখানার বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের মনে হয়েছে, তা চালুর বিষয়ে মালিক রুইয়া গোষ্ঠীর সদিচ্ছার অভাব যথেষ্ট। কমিটির সদস্য সুলতান আহমেদ-ও বলেন, “বাজারে এখনও ডানলপ টায়ারের চাহিদা আছে। অথচ উৎপাদনে কর্তৃপক্ষের আগ্রহ নেই। কেন, তা খতিয়ে দেখতে হবে।”

দেশে রবার শিল্পের হাল-হকিকৎ বুঝতে পশ্চিমবঙ্গ-সহ কয়েকটি রাজ্যে যাচ্ছেন ওই কমিটির সদস্যরা। সেই সূত্রেই এ দিন এক সময়ের নামী এই টায়ার কারখানায় পা। এর পর সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে চন্দনবাবু জানান, সরাসরি কারখানা অধিগ্রহণের ঔচিত্য নিয়ে কেন্দ্রকে কিছু বলার এক্তিয়ার তাঁর কমিটির নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশের রবার শিল্পের নিরিখে সাহাগঞ্জ কারখানা গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় সেটির পুনরুজ্জীবনের জন্য কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাব পেশ করবে কমিটি। তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে রাজ্যসভায়। তাঁর মতে, প্রাথমিক ভাবে কারখানা চালু প্রথম লক্ষ্য হলেও, সেখানে পড়ে থাকা খালি জমিতে বিকল্প শিল্পের চেষ্টা করা যেতে পারে। তা ব্যবহারের কথা ভাবা যেতে পারে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি শিল্পের জন্য।

দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পরে মাস দুয়েক আগে খাতায়-কলমে চালু হয়েছে সাহাগঞ্জ কারখানা। কিন্তু উৎপাদন শুরু হয়নি। চন্দনবাবু বলেন, “ইউনিয়নগুলি জানিয়েছে কারখানা খোলেনি। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১২ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। যাঁরা তেল দিয়ে যন্ত্র সাফ করেন। কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকলে, এমন ভাঁওতাবাজি হত না।” তা ছাড়া, বকেয়া না-পাওয়ার অভিযোগও জানিয়েছেন কর্মীরা।

চন্দনবাবু জানান, কর্তৃপক্ষের মতে উৎপাদন শুরু করতে ৫৭৪ কোটি টাকা লাগবে। এর মধ্যে ২৫০ কোটি নিজস্ব ব্যবহারের বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়তে। কিন্তু তাঁর বক্তব্য, রাজ্যের বিদ্যুৎ নিয়েই কারখানা চালানো সম্ভব। শ্রমিকপক্ষের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষই লোকজন দিয়ে কারখানার যন্ত্র সরিয়েছেন। কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, তাঁরাই কমিটিকে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা, চুরির ঘটনা বলেছেন। তার পরেও তাঁদের বিরুদ্ধে ওই কথা বলা দুর্ভাগ্যজনক।

চন্দনবাবু জানান, সংস্থার শেয়ার কেনাবেচা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তা নিয়ে সেবিকে চিঠি দেওয়া হবে। তাঁর অভিযোগ, বারবার বলা সত্ত্বেও দেখা করেননি পবন রুইয়া। সংস্থার অবশ্য দাবি, অসুস্থ রুইয়ার পক্ষে কলকাতা থেকে সাহাগঞ্জ যাতায়াতের ধকল নেওয়া অসম্ভব।

dunlop india sahaganj central observatory team
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy