Advertisement
E-Paper

ডুয়ার্সের চায়ের রফতানি বাড়াতে চায় গুডরিক

বিদেশের বাজারে ব্যবসা বাড়াতে এ বার ডুয়ার্সের বাগানের চা আরও বেশি পরিমাণে রফতানি করতে চায় গুডরিক। আর এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে চলতি বছরেই সেখানকার ১০ লক্ষ কেজি সিটিসি চা রফতানিকে পাখির চোখ করছে তারা। বিদেশে দার্জিলিং বা অসমের চায়ের নামডাক থাকলেও, তরাই-ডুয়ার্সের সিটিসি চায়ের মূল গন্তব্য দেশের বাজারই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৪ ০১:১২

বিদেশের বাজারে ব্যবসা বাড়াতে এ বার ডুয়ার্সের বাগানের চা আরও বেশি পরিমাণে রফতানি করতে চায় গুডরিক। আর এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে চলতি বছরেই সেখানকার ১০ লক্ষ কেজি সিটিসি চা রফতানিকে পাখির চোখ করছে তারা।

বিদেশে দার্জিলিং বা অসমের চায়ের নামডাক থাকলেও, তরাই-ডুয়ার্সের সিটিসি চায়ের মূল গন্তব্য দেশের বাজারই। কিন্তু ব্যবসা কিংবা মুনাফার অঙ্ক বাড়াতে হলে যে শুধু দেশের বাজারের উপর নির্ভর করলে চলবে না, তা বুঝছে চা শিল্পমহল। সেই কারণেই বিদেশে ডুয়ার্সের চায়ের জন্য নতুন বাজার খোঁজার উপর জোর দিচ্ছে ব্রিটেনের ক্যামেলিয়া গোষ্ঠীভুক্ত গুডরিক। একই সঙ্গে, ডুয়ার্সের বাগানে বাড়তি বৈশিষ্ট্য যুক্ত অর্থোডক্স চা তৈরির পথে হাঁটতে চাইছে তারা। তৈরি করতে চাইছে গ্রিন টি-ও।

সম্প্রতি সংস্থার এমডি এবং সিইও অরুণ সিংহ জানান, গত বছর ডুয়ার্সের বাগানের নামমাত্র চা রফতানি করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু এ বার তাঁদের লক্ষ্য সেখান থেকে ১০ লক্ষ কেজি সিটিসি চা রফতানি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশ, মিশর, ইরান এবং রাশিয়ায় এই চায়ের বাজার যথেষ্ট সম্ভাবনাময় হতে পারে বলে তাঁর অভিমত। রফতানির জন্য নির্দিষ্ট গুণগত মান বজায় রেখে চা উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনে রেনফরেস্ট অ্যালায়েন্সের মতো উপদেষ্টার সাহায্য নেওয়ার কথাও জানান তিনি। উল্লেখ্য, এখন ডুয়ার্সের ১২টি বাগানে প্রায় দেড় কোটি কেজি সিটিসি চা তৈরি করে গুডরিক।

একই সঙ্গে, ডুয়ার্সের একটি বাগানে ৫০০ টন অর্থোডক্স চা তৈরিরও পরিকল্পনা করেছেন অরুণবাবুরা। ২০১৪-’১৫ অর্থবর্ষে গ্রিন-টি তৈরির জন্য ডুয়ার্সে একটি নতুন কারখানা গড়ার কাজেও হাত দিয়েছেন তাঁরা। এ দেশেই জম্মু, অমৃতসরের মতো জায়গায় এই চায়ের ভাল বাজার রয়েছে।

প্রায় আড়াই যুগ আগে রাশিয়ায় রফতানি হওয়া ভারতীয় চায়ের ১০-১২ শতাংশই (বছরে এক কোটি কেজিরও বেশি) যেত তরাই-ডুয়ার্স থেকে। গোড়ার দিকে সেখানে অর্থোডক্স চায়ের আধিপত্য থাকলেও, পরে সিটিসি চায়ের চাহিদা বাড়ে। প্রথমে অসমের সিটিসি চায়ের চাহিদাই সেখানে বেশি ছিল। পরে অবশ্য শিলিগুড়িতে নিলাম কেন্দ্র চালু হওয়ায় ধীরে ধীরে সেখানে জায়গা করে নেয় তরাই-ডুয়ার্সের চা।

কিন্তু পূর্বতন সোভিয়েত রাশিয়া ভেঙে যাওয়ার পর এই ছবি অনেকটাই বদলে যায়। তখন সরকারি ভাবে চা কেনা বন্ধ হয়। তা হতে শুরু করে বেসরকারি ভাবে। আর তখন সেখানে আধিপত্য বাড়ে দক্ষিণ ভারতীয় চায়ের। পাশাপাশি, ওই সময় আবার নানা কারণে ভারতীয় চায়ের (বিশেষত সিটিসি চা) গুণমান পড়তে থাকে। বাজার হারায় তরাই-ডুয়ার্সের চা-ও। বেশি দামের জন্য বাজার পড়তে থাকে ভারতীয় অর্থোডক্স চায়েরও। ক্রমে সেখানে এই দু’ধরনের চায়ের বাজার দখল করে যথাক্রমে শ্রীলঙ্কা ও কেনিয়া।

এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার বাজারকে ফের পাখির চোখ করার কথা জানিয়েছে ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন (আইটিএ)। টি বোর্ডের সহযোগিতায় শীঘ্রই তাদের প্রতিনিধি দলের রাশিয়া যাওয়ার কথা। ফলে শ্রীলঙ্কা ও কেনিয়ার আধিপত্য ভেঙে আইটিএ যখন আবার নতুন করে সেখানে ভারতীয় চায়ের বাজার দখলের জন্য ঝাঁপাতে চাইছে, তখন সেই সূত্রে সুযোগের নয়া দরজা খোলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তরাই-ডুয়ার্সের চা বাগানগুলির সামনে। পাশাপাশি, আলাদা ভাবে ডুয়ার্সের চা রফতানিতে উদ্যোগী হচ্ছে গুডরিকও।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৩-তে গুডরিকের ব্যবসা বেড়েছে ৭.৪ শতাংশ। কর পূর্ববর্তী মুনাফা পৌঁছেছে ৪৮.৬ কোটি টাকায়। ৪৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছে সংস্থাটি।

goodricke tea production
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy