মোবাইল মারফত ছড়িয়ে পড়া ইন্টারনেটের জাল আর আঞ্চলিক ভাষা। এ বার এই দুইয়ের হাত ধরেই ব্যবসা বাড়ানোর কৌশল ছকছে অনলাইন পর্যটন শিল্প।
সাম্প্রতিক তথ্য পরিসংখ্যান বলছে, দেশের এক কোটিরও বেশি মানুষ এই মুহূর্তে মোবাইলের মাধ্যমে নেট ব্যবহার করেন। আর এটাই দ্রুত বদলে দিচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে চলা পর্যটন ব্যবসার মুখ। সংশ্লিষ্ট মহলেরও দাবি, মোট অনলাইন বুকিং-এর ৩৩% ব্যবসা এখন মোবাইলের মাধ্যমেই আসে।
অন্য দিকে, এই মোবাইল ইন্টারনেটের কারণেই আঞ্চলিক ভাষার গুরুত্ব অনেকটা বেড়ে গিয়েছে।
এই যুক্তিতেই ভারতের প্রথম সারির অনলাইন ভ্রমণ সংস্থা মেকমাইট্রিপ ডট কম কর্তৃপক্ষের দাবি, ২০১৫ সালে নেট জগতে আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহারকে ঘিরেই তৈরি হবে ব্যবসায়িক কৌশল। সংস্থার অন্যতম কর্তা রাজেশ ম্যাগাও-র দাবি, বিশ্বের যাবতীয় তথ্যভাণ্ডারের দরজা খুলে দিচ্ছে হাতের মুঠোয় ধরা ছোট্ট যন্ত্রটি। বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি শহরে, যেখানে বড় শহরের মতো অন্যান্য নাগরিক সুযোগ-সুবিধা কম। যে কারণে দ্রুত বাড়ছে অনলাইন ব্যবসা। আর সেই বাজারে দখল বাড়াতেই এ বার আঞ্চলিক ভাষাকে হাতিয়ার করা জরুরি বলে মনে করেন তিনি। গুজরাতি, বাংলা, তামিল, তেলেগু ও মালয়ালম ভাষাভাষির জন্য ২০১৫ সালেই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন চালু করতে চায় মেকমাইট্রিপ ডট কম। তাদের দাবি, গত অক্টোবরে হিন্দি অ্যাপস বাজারে ছেড়ে বিপুল সাড়া মিলেছে।
আন্তর্জাতিক ভ্রমণ সংস্থা ট্রিপঅ্যাডভাইজার ইন্ডিয়ার কর্তৃপক্ষেরও দাবি, অনলাইন ভ্রমণ ব্যবসা যে হারে বাড়ছে দেশে, সে ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ভাষার গুরুত্ব বাড়বেই।
সংশ্লিষ্ট মহলের আশা, আগামী দু’বছরে মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইন পর্যটন ব্যবসা ৫০% বাড়বে। থ্রিজি-সহ টেলিকম পরিষেবা বাড়ার সঙ্গে এই অঙ্কটাও লাফিয়ে বাড়বে।
কী ভাবে আঞ্চলিক ভাষার দৌলতে অনলাইন ভ্রমণ ব্যবসা বাড়বে? সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের মতে, ট্রেন বা প্লেনের টিকেট কাটার জন্য সাধারণ ইংরেজি জ্ঞানেই কাজ চলে যায়। কিন্তু হোটেল বুকিং-এ একটু বেশি খুঁটিনাটি জেনে নিতে চান ক্রেতারা। সে ক্ষেত্রে অধিকাংশ ক্রেতাই নিজের মাতৃভাষায় হোটেলের বিবরণ ও রিভিউ পড়তে স্বচ্ছন্দ্য বোধ করেন বলে দাবি বিশেজ্ঞদের। এখন ১০-১৫% হোটেল বুকিং অনলাইনে হয়। এবং অনলাইন ব্যবসার ৪০ শতাংশের বেশি এখন প্লেনের টিকেটের বাইরে অন্যান্য ব্যবসা থেকে আসে। আর এই ৪০ শতাংশের সিংহভাগ দখল করেছে হোটেল বুকিং। ফলে প্রযুক্তির সম্পূর্ণ সুযোগ নিতে আঞ্চলিক ভাষায় পরিষেবা দিতে এগিয়ে আসতেই হবে।
শুধুই অনলাইন ভ্রমণ ব্যবসায় নয়। নেটে আঞ্চলিক ভাষার গুরুত্ব বেশ কিছুদিন ধরেই বাড়ছে। স্থানীয় ভাষার উপরে জোর দিচ্ছে গুগ্ল। বছর পাঁচেক ধরে বাংলা ভাষা নিয়েও কাজকর্ম শুরু করে দিয়েছে তারা। বাংলায় প্রকাশিত বিভিন্ন তথ্য কী ভাবে নিজেদের প্রযুক্তির ছাঁচে ফেলে ইন্টারনেট বিশ্বে আনা যায়, তা নিয়ে পরীক্ষা নিরিক্ষা চালাচ্ছে তারা। গুগ্লের মতোই ছোট শহরের বাজার ধরতে আঞ্চলিক ভাষায় ই-মেল আদান-প্রদানের উপর জোর দিয়েছে ইয়াহু ইন্ডিয়া। বছর দুয়েক আগেই বাংলা, তামিল, হিন্দি, মারাঠি-সহ আটটি আঞ্চলিক ভাষায় ই-মেল চালু করেছে সংস্থা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy