Advertisement
১১ মে ২০২৪
Coronavirus

আতঙ্কে পাল্টে যাচ্ছে চেনা পড়শির আচরণ

কিছু দিন আগে রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার একটি আবাসনে প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। কারণ, একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মীরা সেখানে এসে থাকছিলেন।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

কাজল গুপ্ত
শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২০ ০৬:০৬
Share: Save:

করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্বকেই হাতিয়ার করছেন সকলে। এমন পরিস্থিতিতে কেউ অন্য রোগে আক্রান্ত হলে কিংবা মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে কী করবেন এলাকার মানুষ? সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার নিরিখে এই প্রশ্ন তুলেছেন বিধাননগর পুর এলাকার বাসিন্দারা। পুরসভা ও পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, আতঙ্কিত না হয়ে তাদের জানালে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।

কিছু দিন আগে রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার একটি আবাসনে প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। কারণ, একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মীরা সেখানে এসে থাকছিলেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও বিধাননগরের এক পুরকর্তাকে ছুটে যেতে হয় সেখানে। পরে সেই পুরকর্তা জানান, অ্যাম্বুল্যান্সে করে কর্মীদের নিয়ে যাচ্ছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এলাকায় রটে যায়, ওই গাড়িতে করোনা-আক্রান্তদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

সল্টলেকের একটি আবাসনে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এক ব্যক্তি। তিনি করোনা রোগী নন জেনেও অধিকাংশ প্রতিবেশীই তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়াননি। স্থানীয় কয়েক জন যুবক অবশ্য এগিয়ে এসে শেষকৃত্যে সাহায্য করেন। মৃতের ছেলে জানান, অনেকে ফোনে যোগাযোগ করলেও সশরীরে আসতে চাননি। স্থানীয় এক যুবকের কথায়, ‘‘করোনাভাইরাস নিয়ে সকলেই আতঙ্কিত। সেই কারণেই হয়তো ইচ্ছে থাকলেও অনেকে সশরীরে হাজির থাকতে পারেননি।’’ ‌পড়শিদের একাংশ জানান, তাঁরা ফোনে পরিবারটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।

আর একটি ঘটনায় অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে কোনও ভাবে বাড়ি ফিরেছিলেন সল্টলেকের এক যুবক। খবর পেয়ে বাসিন্দারা বিষয়টি প্রশাসনকে জানান। এর পরেই ওই যুবককে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয় বলে জানান স্থানীয় কাউন্সিলর।

আবার উল্টো ঘটনাও ঘটেছে। সম্প্রতি একটি আবাসনে স্বামী-কন্যাহারা এক একাকী বৃদ্ধা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। খবর পেয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে পাঠান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁরা জানান, সেই হাসপাতাল বৃদ্ধার করোনা হয়ে থাকতে পারে ভেবে তাঁকে সরকারি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। সেই সরকারি হাসপাতাল জানায়, বৃদ্ধার পেটের রোগ হয়েছে। চিকিৎসার পরে আত্মীয়স্বজন এবং কলকাতা পুলিশের সহায়তায় বৃদ্ধা বাড়ি চলে আসেন। কিন্তু যে বাসিন্দা অ্যাম্বুল্যান্সে খবর দিয়েছিলেন, তাঁকে ওই বেসরকারি হাসপাতালের তোপের মুখে পড়তে হয়।

বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, লকডাউনে সকলেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন। তাই কেউ অসুস্থ হলে বা মারা গেলে প্রবল আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এলাকায়। তখন কী করণীয়, কেউ বুঝে উঠতে পারছেন না। বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলেন, ‘‘কেউ অসুস্থ হলেই আতঙ্কিত না হয়ে বরং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা হোক। সমস্যা হলে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। প্রশাসন যে কোনও রকম সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত।’’

আরও পড়ুন: অসুস্থদের বাড়ি ফিরতে সাহায্য

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE