প্রতীকী ছবি
থানায় খাতায়-কলমে রয়েছেন ৮৬ জন পুলিশকর্মী। অথচ ডিউটি করছেন মাত্র ৩৩ জন। একের পর এক পুলিশকর্মীর মধ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় চরম আতঙ্কে গোটা গরফা থানা।
লালবাজার সূত্রের খবর, শনিবার পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন থানা, ট্র্যাফিক গার্ড এবং পুলিশ ট্রেনিং স্কুল মিলিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১০৩ জন পুলিশকর্মী। তাঁদের মধ্যে ৫৩ জন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি ৫০ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে পাঁচটি থানার ওসি এবং অতিরিক্ত ওসি-র পাশাপাশি রয়েছেন বিভিন্ন থানা ও ট্র্যাফিক গার্ডের অফিসার, সাব-ইনস্পেক্টর, সার্জেন্ট এবং কনস্টেবলেরা। তবে আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে যেখানে সংক্রমণ বেশি ছড়িয়েছে, সে দু’টি জায়গা হল পুলিশ ট্রেনিং স্কুল এবং গরফা থানা। পিটিএস-এ একসঙ্গে ১৬ জন কমব্যাট ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। আর দক্ষিণ কলকাতার গরফা থানায় রবিবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৫। লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা গরফা থানা নিয়েই বেশি উদ্বিগ্ন।
সপ্তাহখানেক আগে গরফা থানার এক কনস্টেবল করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান। তার পর থেকে সেখানে সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবার ওই থানায় আক্রান্ত ছিলেন আট জন। শুক্রবার তা বেড়ে হয় ১৪। এ দিন ফের আর এক সাব-ইনস্পেক্টর করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পাশাপাশি, থানার অতিরিক্ত ওসি-ও করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।
ইতিমধ্যেই গরফা থানার দশ জন সাব-ইনস্পেক্টরের মধ্যে তিন জন করোনায় আক্রান্ত। আট জন এএসআই-এর মধ্যে এক জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে। ৩১ জন কনস্টেবলের মধ্যে ১১ জনের করোনা ধরা পড়েছে। থানায় ৩১ জন সিভিক ভলান্টিয়ার থাকলেও কনস্টেবলের মৃত্যুর পরে আতঙ্কে তাঁরা কেউই থানায় আসছেন না। ছ’জন হোমগার্ডের মধ্যে এক জন কোয়রান্টিনে। ছুটিতে ছ’জন পুলিশকর্মী।
এই পরিস্থিতিতে এত কম কর্মী দিয়ে থানার কাজ সামলানোই কঠিন হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছেন পুলিশকর্মীরা। আতঙ্কে তাঁদের কেউ কেউ অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছুটি নেওয়ার আবেদনও জানিয়েছেন। সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে থানার পুলিশ ব্যারাক পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। ব্যারাকে থাকা কনস্টেবল ও হোমগার্ডদের কয়েক জনকে থানা থেকে ৫০০ মিটার দূরে কায়স্থপাড়ায় কলকাতা পুরসভার অতিথিশালায় রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাকি কয়েক জনকে টালিগঞ্জ থানার ব্যারাকে রাখা হয়েছে। পুলিশকর্মীদের একাংশের দাবি, পুরো বাড়িটি সিল করে থানা অন্যত্র সরানো হোক।
এ ব্যাপারে ডিসি (এসএসডি) প্রদীপ যাদবকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। এসএমএস ও হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তারও উত্তর দেননি। তবে এই পরিস্থিতিতে থানা সামলানো যে কঠিন হয়ে পড়েছে, তা স্বীকার করে গরফা থানার ওসি সত্যপ্রকাশ উপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশকর্মীদের মধ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় গরফা থানার জন্য অতিরিক্ত বাহিনী মজুত করা হয়েছে। সংক্রমণের কথা ভেবে ওই অতিরিক্ত বাহিনীকে আপাতত অন্য থানা এলাকায় রাখা হয়েছে। নিয়মিত গরফ থানা জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। সবটাই লালবাজারের নজরে রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy