অঘটন: তখনও সম্পূর্ণ নেভেনি পাটের বস্তায় লাগা আগুন। শনিবার, বরাহনগর জুটমিলে। ছবি: রণজিৎ নন্দী
একই সময়ে একসঙ্গে জুট মিলের পাঁচটি জায়গায় যান্ত্রিক গোলযোগ। আর তাতেই লাগে আগুন। কিন্তু চারটি জায়গায় আগুন নেভানো গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি সেলাই ও তাঁত ঘরে। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখার গ্রাসে চলে যায় বরাহনগর জুট মিলের ওই দু’টি বিভাগ। দমকলের আটটি ইঞ্জিন প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আনে। খবর পেয়ে পৌঁছে যান দমকলমন্ত্রীও।
আলমবাজারে গঙ্গার পাশেই রয়েছে ওই জুট মিল। কর্তৃপক্ষ জানান, কারখানার শেষ প্রান্তে প্রায় ৪০ হাজার বর্গফুট জায়গা জুড়ে রয়েছে ওই দু’টি বিভাগ। শনিবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ আচমকাই জুট মিলের বিভিন্ন দিকে পাঁচটি মেশিনে একই সঙ্গে বৈদ্যুতিক সমস্যার জেরে আগুনের ফুলকি বেরতে থাকে। শুকনো পাটে সেই ফুলকি পড়ে আগুন ধরে যায়। জুট মিলের নিজস্ব অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ব্যবহার করে তড়িঘড়ি তা নিভিয়ে ফেলেন কর্মীরা। কিন্তু তাঁতের মেশিন থেকে ধরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।
তাঁরা জানান, গঙ্গার প্রবল হাওয়ার জেরে আগুন কয়েক মিনিটের মধ্যে তাঁত ঘর থেকে ছড়িয়ে যায় সেলাই ঘরে। মজুত করে রাখা চটের স্তূপ দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। গ্যাস সিলিন্ডার, হাইড্র্যান্টের জল ব্যবহার করেও কর্মীরা আগুন নেভাতে ব্যর্থ হওয়ায় খবর যায় দমকলে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই বরাহনগর দমকল কেন্দ্র থেকে আসে দু’টি ইঞ্জিন। কিন্তু আগুনের তীব্রতা বাড়ায় উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গা-সহ শ্রীরামপুর, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ থেকে আরও ইঞ্জিন যায়। জুট মিলের ডিরেক্টর দামোদরপ্রসাদ ভট্ট জানান, সম্প্রতি তাঁত বিভাগে ২৪টি বিদেশি মেশিন এসেছে। তারও কয়েকটি পুড়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পুরো ক্ষয়ক্ষতির হিসাব না কষলেও পাটজাত দ্রব্য যা পুড়েছে তার মূল্যই প্রায় এক কোটি টাকা।’’
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে জুটমিলের অগ্নি-নির্বাপক ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি আগুন নেভানোর কাজের তদারকি করেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি বলেন, ‘‘আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে বলেছি। বড় আগুন হওয়া সত্ত্বেও তাড়াতাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। জুট মিলের নিজস্ব অগ্নি-নির্বাপক ব্যবস্থা কী রয়েছে তা-ও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।’’ এ দিন মন্ত্রীর সঙ্গে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বরাহনগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ দিলীপনারায়ণ বসু।
প্রাথমিক ভাবে দমকল ও জুটমিল কর্তৃপক্ষের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই মেশিনে সমস্যা হয়েছিল। তবে আগুনের জেরে অন্য বিভাগে কাজ বন্ধ করতে হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy