Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Crime

তৃণমূল কর্মীর খুনে যাবজ্জীবন পাঁচ জনের

বুধবার বারাসত আদালতের বিচারক বিজয়েশ ঘোষাল এই সাজা ঘোষণা করেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২০ ০২:৩৫
Share: Save:

বাগুইআটির জগৎপুরে তৃণমূল কর্মী সঞ্জয় (বুড়ো) রায়কে খুনের ঘটনায় পাঁচ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল। বুধবার বারাসত আদালতের বিচারক বিজয়েশ ঘোষাল এই সাজা ঘোষণা করেন।

আদালত সূত্রের খবর, সাজাপ্রাপ্তেরা হল রঞ্জু ঘোষ, প্রবীর মণ্ডল, টুকাই বিশ্বাস, কালিদাস অধিকারী এবং বাপি রমন। ৯ জুলাই এই পাঁচ অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারির এই খুনের ঘটনায় সরগরম হয়েছিল রাজ্য-রাজনীতি। কারণ, বুড়ো ছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতা। খুনে অন্যতম অভিযুক্তদের মধ্যে এক তৃণমূল নেতাও ছিলেন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, তোলাবাজি, এলাকা দখল নিয়ে রেষারেষির জেরেই বুড়ো খুন হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। বুড়োর বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ
ছিল। এই মামলায় তথ্যপ্রমাণের অভাবে তিন জনকে আগেই বেকসুর খালাস করা হয়েছিল।

মামলার সরকারি আইনজীবী সন্দীপ ভট্টাচার্য জানান, ২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মোটরবাইকে চেপে দুই সঙ্গীর সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন সঞ্জয়। সেই সময়ে কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁদের পথ আটকে বাইক লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে। বাইকচালক এবং পিছনের আরোহী পালিয়ে যান। মাঝে বসা বুড়োকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। বুড়ো লুটিয়ে পড়লে তাঁর মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপ মারা হয়। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়।

বাইকে বুড়োর সঙ্গী প্রহ্লাদ মজুমদার লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। সাজাপ্রাপ্ত পাঁচ জন ছাড়াও বিশ্বজিৎ (বাবাই) বিশ্বাস, ইদুর গোপাল, এবং দীপঙ্কর সরকার ওরফে গ্যাসবাবুর
নামে এফআইআর দায়ের হয়েছিল। পুলিশ গ্রেফতারও করে তাদের। বাবাই ছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতা। এই খুন নিয়ে শুরু থেকেই রাজনৈতিক তরজা চরমে ওঠে। গ্যাসবাবু-সহ অন্য অভিযুক্তদের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। বাবাইকে গ্রেফতারের পরে তৃণমূল নেতাদের বিবাদ প্রকাশ্যে আসে। সেই সময়ে নাম না করে একাধিক জনপ্রতিনিধি একে অপরের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন।

খুনের উদ্দেশ্য কী? সরকারি আইনজীবীর মতে, কোনও রাজনৈতিক বিরোধের কথা সাক্ষীদের বয়ানে বা তদন্তে উঠে আসেনি। তিনি বলেন, “বিভিন্ন সময়ে সাক্ষীরা জানিয়েছেন, সঞ্জয় এলাকায় জনপ্রিয় ছিলেন। অন্য দিকে, সাজাপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে মদ এবং সাট্টার ঠেক চালানো-সহ একাধিক অভিযোগ ছিল। সঞ্জয় ছিলেন এ সবের বিরোধী। সাজাপ্রাপ্তদের একাধিক বার তিনি ওই কারবার বন্ধ করতে বলেছিলেন। সেই বিরোধ থেকেই সঞ্জয়কে খুন করে ওরা।”

অন্য অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবীর বক্তব্য, “বিচারক ওঁদের ‘বেনিফিট অব ডাউট’-এ মুক্তি দিয়েছেন। ওঁদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তার ভিত্তিতে আমরা হাইকোর্টে আবেদন করব। আবেদন করা হলে বিচার প্রক্রিয়ায় তাঁদের সহায়তা করতে হবে, এই শর্তেই মুক্তি দেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Lifer Arrest Barasat Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE