বেহাল: এই সেই স্কুল। ছবি: রণজিৎ নন্দী
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের তৈরি স্কুলকে অবলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে এ বার বদল আসছে পড়ানোর মাধ্যমেও। ২ জানুয়ারি থেকে ওই স্কুলে বাংলার পাশাপাশি শুরু হয়েছে ইংরেজি মাধ্যমও। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সম্প্রতি যে কয়েকটি বাংলা মাধ্যম স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু করা হচ্ছে, এটি তার অন্যতম। বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়ার অভাবে ধুঁকতে থাকা ঐতিহ্যশালী স্কুলের অস্তিত্ব রক্ষায় এই সিদ্ধান্ত।
বড়বাজারের কলাকার স্ট্রিটে বাংলা মাধ্যম শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছিল এটি। মূল উদ্যোক্তা ছিলেন পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তাঁর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ওই স্কুলের সুপারিন্টেনডেন্ট ছিলেন তিনি। বর্তমানে যেখানে স্কুলটি রয়েছে, সেই প্রসন্নকুমার ঠাকুর স্ট্রিটে ১৯২৩ সালে এটি স্থানান্তরিত হয়। দোতলা বাড়িটি ঠাকুর পরিবারের থেকে ভাড়া নেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল সূত্রের খবর, ১৯৫৪ সালে সেটি ঠাকুর পরিবারের তরফে কিনে নেওয়া হয়। ১০ নম্বর, পি কে টেগোর স্ট্রিটের দোতলা বাড়িটির প্রবেশপথে লেখা ‘মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন, ব শা’ অর্থাৎ বড়বাজার শাখা। সেই বিল্ডিং এখন পোড়ো বাড়ির আকার নিয়েছে। শতাব্দীপ্রাচীন ওই বাড়িটির পিছন দিকে দালানের কাঠামোয় গজিয়ে উঠেছে বড় গাছ। চুন, সুরকির পলেস্তরা খসে পড়ছে আশপাশে। উত্তর ও মধ্য কলকাতায় বিদ্যাসাগর কলেজ, মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন মেন, বৌবাজার শাখা এবং বড়বাজার শাখা— সবই গড়ে ওঠে বিদ্যাসাগরের উদ্যোগে। বিদ্যাসাগর ইনস্টিটিউশন নামে এক ট্রাস্টের অধীনে রয়েছে ওই সব প্রতিষ্ঠান। স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক প্রমথনাথ পালিত সম্প্রতি বলেছিলেন, ‘‘বিদ্যাসাগরের সৃষ্টিকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই। কিন্তু এখন আর বাংলা মাধ্যমে পড়ুয়ারা আসছে না। তাই সরকারি সাহায্য পেলে হিন্দি, ইংরেজি মাধ্যমে পরিবর্তন করা হবে।’’
সরকারি সিদ্ধান্তে খুশি সমিতিও। সর্বশিক্ষা মিশন ওই বিল্ডিং সংস্কারেও হাত দিয়েছে। মিশনের এক অফিসার জানান, দুটো শ্রেণিকক্ষ দ্রুত সংস্কার করা হচ্ছে। ২ জানুয়ারি সেখানেই চালু হবে প্রাথমিক মানের ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। নিয়োগ করা হবে নতুন শিক্ষকও।
স্থানীয় কাউন্সিলর ইলোরা সাহা বলেন, ‘‘এলাকার বহু দিনের দাবি ছিল, এখানে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল চাই। অবশেষ সেই দাবি মিটতে চলেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy