প্রমথ চৌধুরীকে লেখা চিঠিতে কালীঘাটের হরিদাস হালদারকে ‘পাকড়া’ করতে বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। হরিদাসের বই পড়ে তাঁর মনে হয়েছিল এ লেখা ‘হাল্কা ও উজ্জ্বল— লোকটার সাহসও আছে’। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক হরিদাস হালদারের এই বই প্রথম বেরোয় ১৩২২ বঙ্গাব্দে, তারও ক’বছর পরে আর একটি রঙ্গপুস্তক, বক্কেশ্বরের বেয়াকুবি। গোবর গণেশ-বক্কেশ্বররা বঙ্কিমী কমলাকান্তের প্রতিরূপ, তবে লেখার প্রসাদগুণে আলাদাও। গণেশের বিশেষত্ব তার দুই তির্যক চোখ, সে চোখে জগতের সব কিছুই বাঁকা। তাঁর চিন্তাশক্তিটিও বক্রগতি, ধর্মানুষ্ঠান আইন-আদালত বিদ্যাবুদ্ধি প্রেম-পরিণয়, সর্বত্র ধাবিত। ‘ব্যক্তি-আক্রমণহীন সামাজিক সচিত্র ব্যঙ্গ’পুস্তকটি ফিরে পড়ার সুযোগ পাওয়া গেল, সম্পাদককে ধন্যবাদ।
গোবর গণেশের গবেষণা
শ্রীহরিদাস হালদার,
সম্পা: পিনাকীকুমার গঙ্গোপাধ্যায়
২৫০.০০
প্যাপিরাস

পলাশির যুদ্ধ শেষ, নবাব সিরাজউদ্দৌলা নিহত। এ বার তাঁর উত্তরাধিকারীকে খুন করলেই নিশ্চিন্ত ষড়যন্ত্রকারীরা। কিন্তু কোথায় সে? সিরাজ ও তাঁর সেনাপতি মোহনলালের বোন আলেয়ার সেই সন্তান জন্ম নিয়েছে বোকাইনগরের জমিদার পরিবারে, তারা তাকে দত্তক নিয়েছিল। শোনা যায়, সিরাজের এই সন্তান— যিনি পরিচিত জমিদার যুগলকিশোর রায়চৌধুরী নামে— ছিলেন এক বর্ণময় চরিত্র। কিন্তু তাঁর বংশপরিচয় ঘিরে সর্বদা ঘনীভূত হয়েছে রহস্য। তাঁর উত্তরাধিকারীরাও বারে বারে পদবি পাল্টে সিরাজের উত্তরাধিকার-বিতর্ক থেকে দূরে থেকেছেন। তাঁদেরই এক জন, লালা শরদিন্দু দে-কে নিয়ে লেখা বইটি। সাম্যবাদী বিপ্লবী ছিলেন তিনি। পরাধীন ভারত, দেশভাগ হয়ে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের পথ ধরে এগিয়েছে বই।
উত্তরহীন উত্তরাধিকার
প্রসেনজিৎ চৌধুরী
১৭৫.০০
সহজপাঠ
“প্রতিটি ছবির নাও প্রথম অক্ষর/ শহরের নাম পাবে ভরে গেলে ঘর।” এই ছড়ার পর যে ছবিগুলি আঁকা, সেখানে পর পর রয়েছে ১ (চিহ্ন), লাট্টু, হাতুড়ি, বাঘ আর দরজা। ধাঁধার উত্তরটা অতএব— এলাহাবাদ। অন্য পাতায় পাতাজোড়া এস্কিমো, বেদুইন, সাঁওতাল আর তাঁদের তিন রকম ‘ঘর’-এর ছবি: ইগলু, তাঁবু আর কুটির— তবে মিলিয়েমিশিয়ে, ইংরেজিতে যাকে বলে ‘জাম্বল’। জট খুলে সরলসোজা করতে হবে ছোটদের। পাতায় পাতায় এমনই ছড়া আর ছবি, দুইয়ে মিলে আসলে ছোটদের মগজাস্ত্র শাণ দেওয়ার চমৎকার ব্যায়াম। আর লেখকের নামটি? বাদল সরকার। এবং ইন্দ্রজিৎ, বাকি ইতিহাস তথা থার্ড থিয়েটার-এর রূপকার যে এমন বইও লিখে গিয়েছেন, বাঙালি তা প্রায় ভুলতে বসেছিল। একষট্টি বছর আগে প্রকাশিত সেই বই ফিরে এল ফের, বাদল সরকারের শতবর্ষে।
ছবির খেলা
বাদল সরকার
১২৫.০০
শিশু সাহিত্য সংসদ

বইয়ের উপশিরোনাম ‘বাংলা সাহিত্যের গুগল’। লঘু চালে বলা হলেও সারবত্তা আছে— বাংলা সাহিত্যের পাঠক বা গবেষকই হোন, তাঁর ঠিকানা এই বাংলাই হোক বা সুদূর প্রবাস, কখনও না কখনও প্রয়োজন পড়ে কোনও প্রকাশনা বা পত্রিকার যোগাযোগের নম্বর, লেখক-সাহিত্যিকদের ঠিকানা ফোন ইমেলও। এই সবই, এবং আরও অনেক কিছু এই বইয়ের দু’মলাটে। যেমন, গ্রন্থ-বিপণির যোগাযোগ-তথ্য, বাংলাদেশের প্রকাশনার ঠিকানা, বই সংক্রান্ত নানা ওয়েবসাইট। ২০২৫-এর প্রতিটি মাস ধরে সাহিত্যিকদের জন্মদিন প্রয়াণদিন বা বিশেষ উদ্যাপনীয় দিবসের পঞ্জিটিও প্রস্তুত; শেষে রয়েছে প্রয়াণপঞ্জি-২০২৪। হিরণ মিত্রের করা সুদৃশ্য প্রচ্ছদ; সরস গ্রন্থ-ভূমিকা লিখেছেন বারিদবরণ ঘোষ।
সাহিত্যের ইয়ারবুক ২০২৫
সম্পা: বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য
৪০০.০০
পূর্বা

বাঙালির অপূর্ণতার বোধ বেশ খানিকটা ভুলিয়ে দিতে পেরেছেন সবুজ বিশ্বাস তথা ডা. জ্যোতির্ময় বিশ্বাস, প্রবাসী চক্ষু-চিকিৎসক। চোখ নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে চিকিৎসা বিজ্ঞানের চর্চা গবেষণা-সহ যে বিপুল কর্মযজ্ঞ চলেছে, সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তাঁর। তা বলে পেশাগত তুমুল ব্যস্ততার মধ্যেও বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে তাঁর গ্রন্থি এতটুকু আলগা হতে দেননি। তারই প্রমাণ আত্মস্মৃতির এই বইটি, যেখানে রোগী নিরাময়ের বিশদ বৃত্তান্তের পাশাপাশি প্রকাশ পেয়েছে জন্মভূমি-বঙ্গভূমি ও শহর কলকাতার প্রতি তাঁর নিখাদ ভালবাসা। বইয়ের প্রথম রচনাতেই জানিয়েছেন, তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময়ই কেটে যায় চক্ষুজনিত অস্বচ্ছতার মধ্যে। তবুও যাপিত জীবনের বিভিন্ন বিচিত্র মুহূর্ত ছুঁয়ে গিয়েছে তাঁর সংবেদী কলম।
চিকিৎসকের আত্মকথন
সবুজ বিশ্বাস
৭৫০.০০
পুনশ্চ
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)