Advertisement
E-Paper

ফাটলে অশ্বত্থ, থরথর কাঁপুনি

মৃদু ভূমিকম্প হলে কেমন লাগে তা যদি কেউ ঠাহর করতে চান, সচ্ছন্দে গিয়ে দাঁড়াতে পারেন পলাশিপাড়া বাজারের কাছে দ্বিজেন্দ্রলাল সেতুতে।

কল্লোল প্রামাণিক

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৫১
পলাশিপাড়ার দ্বিজেন্দ্রলাল সেতু।

পলাশিপাড়ার দ্বিজেন্দ্রলাল সেতু।

মৃদু ভূমিকম্প হলে কেমন লাগে তা যদি কেউ ঠাহর করতে চান, সচ্ছন্দে গিয়ে দাঁড়াতে পারেন পলাশিপাড়া বাজারের কাছে দ্বিজেন্দ্রলাল সেতুতে।

জাতীয় সড়ক ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া বেতাই-পলাশি রাজ্য সড়কের উপরে এই সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি দীর্ঘদিন। মাঝের জোড়গুলি কবেই ফাঁক হয়ে গিয়েছে। ছোট-বড় গাড়ি চলতে গিয়ে চাকা ঠোক্কর খায়। আর কাঁপতে থাকে সেতু।

নদিয়ার উত্তরে জলঙ্গির উপরে এই সেতুর উদ্বোধন হয়েছিল ১৯৭৯ সালের ১ জুলাই তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী যতীন চক্রবর্তীর হাতে। পলাশিপাড়ার বাসিন্দা সিদ্ধার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সেতুর নানা অংশে বট-অশ্বত্থ থেকে শুরু করে নানা গাছগাছড়া গজিয়ে উঠেছে। শীতের ক’মাস ছাড়া বছরের বাকি সময় রাতে সেতুর উপরে বাস-লরি রাখাও রেওয়াজ হয়ে গিয়েছিল।’’ বিপদ আঁচ করে কয়েক মাস আগে পলাশিপাড়া থানার ওসি তা বন্ধ করার নির্দেশ দেন। তার পরেও কিছু বাস এখনও রাখা হচ্ছে।

আরও এক বড় বিপত্তি হয় যখন দশমীর দিন জলঙ্গিতে নৌকা বাইচ দেখার জন্য সেতুর রেলিংয়ের ধারে হাজার-হাজার মানুষ গিয়ে দাঁড়ান। রেলিংগুলিরও অবস্থা ভাল নয়। যদি সেতু ভাঙে, সত্তর ফুট নীচে গিয়ে পড়বে বহু লোক।

সেতুর বিভিন্ন জায়গায় গাছ যেমন গজিয়েছে, গার্ডওয়ালে ফাটল ধরেছে। সেতুর উপরে রাস্তাতেও বহু জায়গায় ফাটল, মরচে ধরা শিক বেরিয়ে এসেছে। কোথাও এমন অবস্থা, যে কোনও সময়ে পথচারীর পা আটকে গিয়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। রাতের দিকে বাড়তি বালি-পাথর বোঝাই লরি সেতু পারাপার করে। স্থানীয় বাসিন্দা উমাপদ মণ্ডল বলেন, “তেহট্টের নানা জায়গা থেকে পলাশি স্টেশন বা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে গিয়ে পড়ার রাস্তায় এই সেতু। শ’য়ে-শ’য়ে গাড়ি। আগে যা বহনক্ষমতা ছিল, এখন কি তা আছে?’’ স্থানীয় বাসিন্দা বিনায়ক বিশ্বাস বলেন, “বিকেলের দিকে একটু মুক্ত বাতাসের আশায় অনেকে সেতুর উপরে ঘুরতে আসেন। কিন্তু ইদানিং সেতুটির কাঠামো এত বেসামাল হয়ে গিয়েছে যে অনেকেই ভয় পান।”

বেতাই-পলাশি রুটের বাসচালক শঙ্কর ঘোষ বলেন, “দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে পারি, সেতুর অবস্থা দিন-দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। মাঝের যে প্লেটগুলো বসানো রয়েছে সেগুলো বরাবর নীচে গর্তের আকার ধারণ করেছে। ওই সমস্ত জায়গায় গাড়ির চাকা পড়লেই সেতু দুলে ওঠে। আমাদের তো আর কিছু করার নেই, রুজির টানে সেতু পেরিয়ে যাতায়াত করতেই হয়।” বাস চালক নীরেন কর্মকার বলেন, “সেতু দোলাটা আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু যাত্রীরা বাসে বসে আতঙ্কে ভোগেন।”

পূর্ত দফতর সূত্রে অবশ্যা দাবি করা হচ্ছে, প্রতি বছরই নিয়ম করে সেতু সংস্কার করা হয়। সেতুটির অবস্থা আদৌ খারাপ নয়। তেহট্টের মহকুমাশাসক সুধীর কোন্তমও দাবি করেন, পূর্ত দফতর ইতিমধ্যেই কালভার্টগুলি সংস্কারের কাজ শুরু করেছে। বড় সেতুগুলির অবস্থা দ্রুত খতিয়ে দেখে মেরামতি শুরু হবে। অবশ্যই তার আগে যদি সেতুভঙ্গ ঘটে না-যায়!

Flyover Collapse Palashipara Dwijendralal Bridge দ্বিজেন্দ্রলাল সেতু
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy