আগামী বছরের গোড়ায় গঙ্গার উপর নতুন সেতু তৈরির কাজ শুরু হতে চলেছে ফরাক্কায়। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রক ইতিমধ্যেই এই সেতু তৈরির ছাড়পত্র দিয়েছে।
আগামী জানুয়ারি থেকেই সেতু তৈরির কাজে হাত পড়বে বলে সড়ক পরিবহণমন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে। খরচ ধরা হয়েছে ৫১৬.৬২ কোটি টাকা। ফরাক্কা ব্যারেজ থেকে ৫০ মিটার উজানে চার লেনের ওই সড়ক-সেতু তৈরি করা হচ্ছে।
সেতুর কাজ শেষ হতে সময় ধার্য করা হয়েছে তিন বছর। চিনের একটি সংস্থার সঙ্গে দেশের একটি সংস্থা যৌথভাবে ওই সেতুর বরাত পেয়েছে। এই সেতু তৈরি হলে ফরাক্কা ব্যারেজের উপর চাপ প্রায় অর্ধেক কমে যাবে।
কেন্দ্রীয় জাতীয় সড়ক বিভাগের এক কর্তা জানান, নিউ ফরাক্কা রেল স্টেশনের সামনে থেকে সেতুর কাজ শুরু হবে। গঙ্গা পেরিয়ে মালদহের বৈষ্ণবনগরের লক্ষ্মীপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে গিয়ে মিশবে।
ফোর লেনের এই সেতুটিতে দুটি লেন, চওড়ায় ১২.৫ মিটার, লম্বায় ২.৪৬৮ কিলোমিটার। দু’দিকে সংযোগ সড়ক আরও তিন কিলোমিটারের। মোট সেতুটি দাঁড়াবে ৫.৪৬৮ কিলোমিটার। এতে কোনও রেল সেতু থাকবে না। ২০১৬ সালের অক্টোবরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় এই সেতু তৈরির ছাড়পত্র মেলে। দু’দফায় টেন্ডারের পর একটি বিদেশি সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হয় এ বছরের শুরুতে। ইতিমধ্যেই সেই সংস্থা প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে ফরাক্কায়।
ফরাক্কার বর্তমান সেতুটি দু’লেনের। এই সেতুকে কেন্দ্র করে যেহেতু ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক গড়ে উঠেছে তাই বর্তমান সেতুতে কোনও সংযোগ সড়কের প্রয়োজন পড়েনি। বর্তমান সেতুটি তাই লম্বায় ২.২৪৫ কিলোমিটার। ১৯৭৫ সালে এটি চালু হয় যার উপর দিয়ে বিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল রেল লাইনও।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বলছেন, যখন এই ফরাক্কা সেতু চালু হয় তখন ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কও ছিল দুই লেনের। যানবাহন চলাচলের সংখ্যাও ছিল হাজার তিনেক। এখন সেই জাতীয় সড়কে যানবাহনের সংখ্যা চার গুন বেড়েছে। ফোর লেনের সড়ক পথও তৈরি হয়েছে। কিন্তু ফরাক্কা ব্যারাজের সেতুটি দু’লেনের। ফলে যানজট ক্রমশ বাড়ছিল।
ফরাক্কা ব্যারাজের সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনীয়ার রাজেশ কুমার সিংহ জানান, দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগের একমাত্র সেতু হওয়ায় যানবাহনের চাপে ব্যারাজের ক্ষতি হচ্ছিল।
কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হক বলছেন, “এর ফলে এলাকার অন্তত বিশ হাজার স্থানীয় শ্রমিক কাজ পাবেন। আর্থিক দিক দিয়ে লাভবান হবে স্থানীয় মানুষ।”
একই কথা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি এজারত আলিরও, “শ্রমিকেরা কাজ পেলে এলাকার আর্থিক স্বচ্ছলতা বাড়বে। যেহেতু সেতুর কাজ শুরু হবে গঙ্গার দু’পাড় থেকেই তাই কাজের সুবিধা পাবেন দুই এলাকার মানুষই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy