Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
tmc

এ বার জেলার দায়িত্বে শ্যামল

বৃহস্পতিবার রাজ্যের তরফে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কোতুলপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরাকে।

তিনটি মহকুমার জন্য দলের তরফে তিন জন ‘কো-অর্ডিনেটর’ নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতীকী চিত্র

তিনটি মহকুমার জন্য দলের তরফে তিন জন ‘কো-অর্ডিনেটর’ নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০ ০০:৪০
Share: Save:

বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সাংগঠনিক স্তরে ফের রদবদল ঘটল।
বৃহস্পতিবার রাজ্যের তরফে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কোতুলপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরাকে। শুভাশিস বটব্যালকে সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দলের চেয়ারম্যান করা হয়েছে। তিনটি মহকুমার জন্য দলের তরফে তিন জন ‘কো-অর্ডিনেটর’ নিয়োগ করা হয়েছে।
পরিবর্তন করা হয়েছে যুব তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পদেও। ওই পদে এত দিন দায়িত্বে ছিলেন রাজীব ঘোষাল। নতুন করে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বড়জোড়া পঞ্চায়েত সমিতির শিশু ও নারীকল্যাণ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ পদে থাকা অর্চিতা বিদকে। যুব তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অবশ্য রাজকুমার সিংহ-ই থাকছেন।
গত লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া জেলার দু’টি আসনই হাত ছাড়া হয় তৃণমূলের। তারপর থেকেই জেলায় সংগঠন শক্ত করতে নানা পদক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। নেতৃত্বে রদবদলও করা হয়েছে বেশ কয়েক বার।
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পরেই দলকে বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর দু’টি সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করা হয়। বাঁকুড়ার সভাপতি করা হয় শুভাশিসবাবুকে ও বিষ্ণুপুরের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় শ্যামলবাবুকে। কয়েকমাস পরেই ফের ‘এক জেলা নীতি’-তেই ফিরে আসেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি দায়িত্ব দেওয়া হয় শুভাশিসবাবুকে।
এ বার ফের সেই দায়িত্ব বদলকে কেন্দ্র করে দলে গুঞ্জন দানা বেঁধেছে। সভাপতি বদল নিয়ে দলের বহু জেলা নেতাই কোনও ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন না। তাঁদের দাবি, শুভাশিসবাবু বিভিন্ন এলাকার নেতাদের নিয়ে আলোচনায় বসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটানোর চেষ্টা করছিলেন। তবে ইদানীং দলের কয়েকজন জেলা নেতা ও বিষ্ণুপুরের দু’টি পঞ্চায়েতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসায় জেলা নেতৃত্ব বিড়ম্বনায় পড়েন। নেতৃত্বে বদল আনার পিছনে সে সব রয়েছে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে তৃণমূল কর্মীদের একটা বড় অংশের মধ্যে।
জেলা নেতৃত্বের একাংশের মতে, শুভাশিসবাবু জেলা চেয়ারম্যান থাকলেও দল পরিচালনার রাশ থাকবে শ্যামলবাবুর হাতে। তাঁরা জানাচ্ছেন, অতীতে রাজ্যের অন্যত্র তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান পদ থাকলেও দল পরিচালনা করতে দেখা গিয়েছে জেলা সভাপতিদেরই।
শ্যামলবাবু বলেন, “দল আমাকে জেলা সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছে। আমি নিজেকে উজাড় করে এই দায়িত্ব পালন করব।” শুভাশিসবাবু বলেন, ‘‘দলের দেওয়া দায়িত্ব আমি যথাযথ পালন করব।’’
রদবদলে এ বার নতুন সংযোজন তিন জন ‘কো-অর্ডিনেটর’। বাঁকুড়া মহকুমায় সুব্রত দরিপা, খাতড়া মহকুমায় সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু ও বিষ্ণুপুর মহকুমায় ইন্দাসের বিধায়ক গুরুপদ মেটেকে ‘কো-অর্ডিনেটর’ করা হয়েছে।
যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক পেজে সংগঠনের জেলা সভাপতিদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। অর্চিতাদেবী বলেন, “যুবদের সংগঠিত করতে দলের নির্দেশ মতো কাজ করব।” রাজীববাবু বলেন, “আমাকে সংগঠনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
তৃণমূলের এই সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র বলেন, “ওদের নেতৃত্ব বদল হলেও মুখগুলো একই রয়ে গিয়েছে। মানুষের আস্থা হারিয়ে তৃণমূল যে বিভ্রান্ত, এই ঘন ঘন রদবদলে সেটাই প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে।” তৃণমূল জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতরার জবাব, ‘‘আমাদের সংগঠন গোছানো হচ্ছে দেখে, বিজেপি নেতারা ভয় পেয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE