Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Editorial News

জওয়াহিরির জন্য আসন সংরক্ষিত রইল মুর্খের স্বর্গে

ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ করেছে আল কায়দার অনুগামীরা। প্রকাশিত ভিডিয়োয় জওয়াহিরিকেই দেখা যাচ্ছে। কাশ্মীরকে ভারতের শাসন থেকে মুক্ত করার জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং জম্মু কাশ্মীর রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আপসহীন যুদ্ধে যাওয়ার আহ্বান রয়েছে জওয়াহিরির ভিডিয়ো বার্তায়।

আল কায়েদার প্রধান আয়মান আল জওয়াহিরি।—ছবি সংগৃহীত।

আল কায়েদার প্রধান আয়মান আল জওয়াহিরি।—ছবি সংগৃহীত।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯ ০০:৩০
Share: Save:

নতুন করে উচ্চারণ করার প্রয়োজন হয় না। সহস্র-লক্ষ বার ভারত এবং ভারতবাসী খুব স্পষ্ট উচ্চারণ করেছে কথাটা। তবু আরও এক বার বলি— কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এ বারের উচ্চারণটা আল কায়েদার প্রধান আয়মান আল জওয়াহিরির উদ্দেশে।

ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ করেছে আল কায়দার অনুগামীরা। প্রকাশিত ভিডিয়োয় জওয়াহিরিকেই দেখা যাচ্ছে। কাশ্মীরকে ভারতের শাসন থেকে মুক্ত করার জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং জম্মু কাশ্মীর রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আপসহীন যুদ্ধে যাওয়ার আহ্বান রয়েছে জওয়াহিরির ভিডিয়ো বার্তায়। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা পৃথিবীর সব মুসলিমের কর্তব্য— এমন বার্তাও দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে আল কায়দার প্রকাশ করা ভিডিয়োয়।

আয়মান আল জওয়াহিরিকে মুর্খ ছা়ড়া আর কিছু বলতে পারছি না। সারা বিশ্বের মুসলিমরা তার কথা শিরোধার্য করবেন, এমন ভাবনা জওয়াহিরির মাথায় কী ভাবে এল, তা ভেবে আশ্চর্য হতে হয়। তার চেয়েও বেশি বিস্মিত হতে হয়, বিশ্বখ্যাত সন্ত্রাসবাদীর জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা দেখে। প্রকৃত জ্ঞান থাকলে সে যে সন্ত্রাসবাদী হত না, তা তো বলাই বাহুল্য। কিন্তু গোটা বিশ্বে সন্ত্রাসের জাল বিছিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন যে দেখছে, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত সম্পর্কে ঠিকঠাক খবরাখবর তো অন্তত তার কাছে থাকা উচিত। জওয়াহিরির জানা নেই যে, ভারতের সামরিক বাহিনীতে মুসলিম সদস্যের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। জওয়াহিরির জানা নেই যে, কাশ্মীরি তরুণরাই দলে দলে নাম লেখাচ্ছেন ভারতের সেনাবাহিনীতে। অতএব, সারা বিশ্বের মুসলিমরা তার কথায় ভারতীয় সেনাবাহিনীকে শত্রু হিসেবে ঘোষণা করে জেহাদে ঝাঁপিয়ে পড়বেন, এমনটা ভাবলে জওয়াহিরির জন্য আসন সংরক্ষিত রইল মুর্খের স্বর্গে। হাজার হাজার মুসলিম ভারতীয় সেনাবাহিনীকে নিজেদের পরিবার মনে করেন। কাশ্মীর যেমন ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, ওই মুসলিমরাও তেমনই ভারতের সামরিক পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। দশকের পর দশক ধরে এটাই সত্য ভারতে। জওয়াহিরিদের হাজার হাজার ভিডিয়ো বার্তাও এ সত্যকে মুছতে পারবে না।

ম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

আল কায়দা বা তালিবান বা ইসলামিক স্টেটের মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলো সন্ত্রাসের ব্যবসাকে বার বারই পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছে। কোনও এক প্রান্তে ব্যবসা গুটিয়ে আসার উপক্রম হলে অন্য কোনও প্রান্তে নতুন করে সন্ত্রাসের দোকান খোলার তোড়জোড় শুরু করা এই সব সংগঠনের চিরাচরিত কার্যপদ্ধতি। আর সেই ব্যবসায় সাফল্য পাওয়ার জন্য ধর্মকে মুখোশ হিসেবে ব্যবহার করা এদের সবচেয়ে প্রিয় কৌশল। এই কৌশল এবং এই কার্যবদ্ধতি অনুসরণ করে কাশ্মীরে কারবার জমানোর চেষ্টা এর আগেও বহু বার হয়েছে। সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ভারত সরকার এবং ভারতের পরাক্রমশালী সামরিক বাহিনী কোনও দিনই সে কারবারকে জমতে দেয়নি। ভবিষ্যতেও জমতে দেবে না। শপথে অবিচল থাকতে রক্তক্ষয় কম করতে হয়নি ভারতকে। রক্তক্ষয় এখনও চলছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সেই বলিাদনের মান রাখতে ভারত ভবিষ্যতেও রক্ত ঝরাতে প্রস্তুত। জওয়াহিরিদের জেনে রাখা উচিত, এ দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় যে রক্তধারা প্রবাহিত হয়েছে, তাতে হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সির রক্তের সঙ্গে মুসলিমের রক্তও মিশে রয়েছে। তাই কোনও মুখোশ পরেই ভারতের অখণ্ডতার প্রাচীর ধসানো যাবে না।

আরও পড়ুন: ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ কাশ্মীরে, ভিডিয়ো বার্তায় হুমকি দিল আলকায়দা প্রধান

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE