Advertisement
E-Paper

বিরোধিতা তীব্র হবে, ইঙ্গিত ফের সেই নকশালবাড়ি থেকে

আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগের একটা সময়ে বসন্তের বজ্রনির্ঘোষ শুনিয়েছিল যে নকশালবাড়ি, সেই নকশালবাড়ি থেকেই এত দিন পর এক দাবদাহের দুপুরে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক কণ্ঠস্বর উঠে এল।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩৭
একই দিনে দুই মহারথী উত্তরবঙ্গে, সরগরম কোচবিহার থেকে নকশালবাড়ি। —ফাইল চিত্র।

একই দিনে দুই মহারথী উত্তরবঙ্গে, সরগরম কোচবিহার থেকে নকশালবাড়ি। —ফাইল চিত্র।

আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগের একটা সময়ে বসন্তের বজ্রনির্ঘোষ শুনিয়েছিল যে নকশালবাড়ি, সেই নকশালবাড়ি থেকেই এত দিন পর এক দাবদাহের দুপুরে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক কণ্ঠস্বর উঠে এল। অতিবামপন্থী রাজনীতির আঁতুড়ঘর নকশালবাড়িকে ছুঁয়ে বাংলা অভিযান শুরু করলেন কট্টর জাতীয়তাবাদী অমিত শাহ। অমিত শাহের এই পদার্পণ কিন্তু প্রতীকী। তাৎপর্যের কেন্দ্রে আসলে পশ্চিমবঙ্গে এ যাবৎ আপাত-অশ্রুত এক কণ্ঠস্বর এবং আবার সেই নকশালবাড়ি থেকেই নতুন কণ্ঠস্বরটার উত্থানের অঙ্গীকার। সমাপতনই হোক বা অন্য কিছু, অমিত শাহের সভাস্থলের দেড়শো কিলোমিটার আশেপাশেই পাল্টা নির্ঘোষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে। তাই সব মিলিয়ে উত্তরবঙ্গ থেকেই চড়াইয়ের পথে এ রাজ্যের রাজনৈতিক আলোড়নটা।

নেতা কে হবেন, নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, গণতন্ত্র তা নিজেই খুঁজে নেয়। গণতন্ত্রে নাগরিকই বেছে নেন নিজের ভবিষ্যৎ। নির্বাচনের ফলাফলে নাগরিক শেষ পর্যন্ত যে বিষয়টির পরিচয় দেন, সে হল তাঁর বুদ্ধিমত্তা। কিন্তু ভারসাম্যহীন, একতরফা কোনও আস্ফালনে যদি সেই বুদ্ধিমত্তা আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে, তা হলে গণতন্ত্রের ধারণারই মৃত্যু ঘটে। যে কোনও গণতান্ত্রিক রণাঙ্গনেই নাগরিকের স্বাধীন চিন্তার প্রতিফলন কাঙ্ক্ষিত। তবে সেই স্বাধীন চিন্তা বা বুদ্ধির প্রয়োগের জন্য উপযুক্ত পরিবেশও জরুরি। সে পরিবেশ তখনই সুনিশ্চিত হয়, যখন শাসক এবং বিরোধীর রাজনৈতিক সক্ষমতায় ন্যূনতম ভারসাম্যটুকু অন্তত থাকে। উত্তরবঙ্গের এক টানটান দুপুর ইঙ্গিত দিল, কাঙ্ক্ষিত সক্ষমতায় পৌঁছনোর জন্য চেষ্টার কোনও ত্রুটি আর নেই এ রাজ্যের বিরোধী শিবিরে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিপুল জনাদেশ নিয়ে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ রাজ্যে বিরোধী কণ্ঠস্বর ক্রমশ দুর্বলই হয়েছে। বিরোধীর এই দুর্বলতার কারণ কী, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু বিরোধীর এই দুর্বলতা যে শাসকের জন্যও শুভ নয়, সে নিয়ে কোনও সংশয় নেই। সবল-সক্ষম বিরোধীর উপস্থিতিই শাসককে স্বধর্মে অবিচল রাখে। আর বিরোধী স্বর অকিঞ্চিৎকর হয়ে পড়লেই গণতন্ত্র কক্ষচ্যুতির দিকে এগোয়। অমিত শাহরা স্পষ্ট করে দিচ্ছেন, আসন্ন দিনগুলোয় বিরোধীর উপস্থিতি আর নেহাৎ অকিঞ্চিৎকর ঠেকবে না বাংলায়। অমিত শাহদের হাত ধরে হোক বা অন্য কারও সাহারায়, বিরোধী কণ্ঠস্বর যদি সত্যিই বলিষ্ঠ হয় আবার, নাগরিকের স্বাধীন চিন্তার প্রতিফলন অবশ্যই আরও সুনিশ্চিত হবে।

Anjan Bandyopadhyay Newsletter Amit Shah Opposition West Bengal BJP Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy