Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Editorial News

কর্তব্য পালনের দায় আমাদের কাঁধেও রয়েছে

সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম কর্তৃপক্ষের তরফে যেটুকু যা প্রয়াস, তার অংশমাত্রও কি আমরা ব্যক্তি বা সমষ্টিগত স্তরে দেখাতে পেরেছি?

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৯ ০০:১০
Share: Save:

তাদের মঞ্চ যে গুজব ছড়ানোর নয়, আনন্দের জন্য, এই বার্তা বিজ্ঞাপনের আকারে বেশ কিছু দিন ধরেই দিচ্ছে হোয়াট্‌সঅ্যাপ। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই প্রচার যে তারা করেছে, এমনটা বললে সত্যের অপলাপ হবে। গোটা দেশ জুড়ে হোয়াট্‌সঅ্যাপ-সহ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যে ভাবে ফেক নিউজ থেকে শুরু করে নানান গুজব ইত্যাদি ছড়ানো হয়েছে বেশ কিছু মাস ধরেই, তাতে এই সংস্থাগুলোর ওপর চাপ একটা আসছিলই। কাজ কতটা হয়েছে, তা নিয়ে দেশব্যাপী সংশয়ের মধ্যেই হোয়াট্‌সঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ একটা ফোন নম্বর দিয়ে জানালেন, যে কোনও খবরের ক্ষেত্রে সন্দেহ জাগলে সেখানে যেন সাধারণ মানুষ ফোন করে নেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম কর্তৃপক্ষের তরফে যেটুকু যা প্রয়াস, তার অংশমাত্রও কি আমরা ব্যক্তি বা সমষ্টিগত স্তরে দেখাতে পেরেছি? ভুয়ো গুজবের জেরে এ দেশেরই বিভিন্ন প্রান্তে বহু মৃত্যুর ঘটনার পরেও আমরা নিজেরা সতর্ক হয়েছি এতটুকু? যদি হতাম, তা হলে আরও এক বার সেই পুরনো কায়দাতেই সম্প্রতি দঙ্গিণবঙ্গ জুড়ে যে ভাবে ভুয়ো গুজব ছড়াল এবং ঘটল পিটিয়ে মৃত্যুর ঘটনাও— সেটা সম্ভব হত না। আমরা নিজেরাই দায়িত্বজ্ঞান ভুলতে বসেছি। সমাজকে সুষ্ঠু রাখার যাবতীয় দায় রাষ্ট্র অথবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাঁধে চাপিয়ে আমরা ভাবতে চেয়েছি, আমাদের ভূমিকা নিতান্তই ক্রীড়নকের, তার বেশি কিছু নয়। অন্যের দিকে আঙুল তুলতে তুলতে আমরা আয়নাটার দিকে তাকাতেই ভুলতে বসেছি।

ভুয়ো খবর অথবা গুজব এক ধরনের মতলববাজ লোকের মস্তিষ্কপ্রসূত এবং দুষ্টচক্র দ্বারা পরিচালিত হয়। সমাজের সুস্থিত অবস্থাকে নষ্ট করাটাই মূল লক্ষ্য থাকে এই চক্রের। ছেলেধরা সন্দেহের ভিত্তিতেই হোক বা কিডনি পাচারকারী অথবা ধর্মের নাম করে এনে সমাজের মধ্যে সন্দেহ ঢুকিয়ে দেওয়াটাই উদ্দেশ্য থাকে সেখানে, মূল লক্ষ্য টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া সমাজ। কে না জানে, একটা লাঠিকে ভাঙা শক্ত হয়, লাঠির বান্ডিলকে নয়। বিচ্ছিন্ন বিভক্ত মনকে কব্জা করা সহজ, ঐক্যবদ্ধ সমাজমানসকে নয়।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

অতএব সচেতন হতে হবে আমাদেরই। ফেসবুক বা হোয়াট্‌সঅ্যাপ অথবা সরকার কর্তব্য পালন করুক তাদের, আমাদেরও বোঝা দরকার, কর্তব্য পালনের দায় আমাদের কাঁধেও রয়েছে। কাঁধটাকে এখন চওড়া করার সময়।

আরও পড়ুন: ভুয়ো খবর জানাবে হোয়াটসঅ্যাপই

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE