Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Delhi Diary

দিল্লি ডায়েরি: ঘরের মাঠে হার, গদি নিয়ে চিন্তায় বোম্মাই

বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে ভাবে সুযোগ পেলেই মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বদল করতে শুরু করেছে, তাতে তাঁর গদি নিয়ে যে নিশ্চয়তা নেই, বোম্মাই তা বিলক্ষণ জানেন।

প্রেমাংশু চৌধুরী ও অগ্নি রায়
শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২১ ০৫:১২
Share: Save:

ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার। চাকরি করতেন বড় সংস্থায়। কিন্তু বাবা কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলে কথা। ছেলে বাসবরাজের রাজনীতি ছাড়া মনে শান্তি মিলবে কী ভাবে? জনতা পরিবার থেকে শুরু করে বিজেপি। এখন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী। ভেবেছিলেন, যখন তাঁর মুখ্যমন্ত্রিত্বের ১০০ দিন পূর্ণ হবে, ঠিক তখনই কর্নাটকে দুই উপনির্বাচনে বিজেপির জয়ের খবর আসবে। কিন্তু বিধি বাম। তাঁর ঘরের মাঠ, হনগলের আসনেই বিজেপি হেরে ভূত। একেবারে লিঙ্গায়েত অধ্যুষিত কেন্দ্র— বিজেপির প্রধান ভোটব্যাঙ্ক। বোম্মাই এত দিন বলতেন, শুধু লিঙ্গায়েতরাই নয়, ভোক্কালিগা থেকে দলিত, জনজাতির মানুষ সবাই বিজেপিকে ভোট দেন। কিন্তু তাঁর ঘরের মাঠে বিজেপির হারের পরে বোম্মাই কেমন থম মেরে গিয়েছেন। ২০২৩-এ তাঁর কর্নাটকে বিধানসভা ভোট। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে ভাবে সুযোগ পেলেই মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বদল করতে শুরু করেছে, তাতে তাঁর গদি নিয়ে যে নিশ্চয়তা নেই, বোম্মাই তা বিলক্ষণ জানেন।

দায়: সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই।

দায়: সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই।

শুভেচ্ছায় সর্ষের তেল

দিল্লি-সহ উত্তর ভারতে দীপাবলির সময় বন্ধু-আত্মীয়ের বাড়িতে উপহারের ঝুড়ি নিয়ে গিয়ে শুভেচ্ছা জানানোটাই রেওয়াজ। সেই উপহারের ঝুড়িতে মিষ্টি, নানা খাবার, কাজু-কিশমিশের মতো শুকনো ফল, ফলের রস বোঝাই থাকে। সব দোকানেই দীপাবলির সময় এই উপহারের ঝুড়ি বিক্রি হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় কৃষি সমবায় বিপণন সংস্থা (নাফেড)-ও এই রকম উপহারের ঝুড়ি বিক্রি করে। অন্য সময় নাফেড-এর কথা সরকারের মনে পড়ে কি না, জানা নেই। তবে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেলে বাজারে সস্তায় পেঁয়াজ বিক্রির জন্য নাফেড-এর ডাক পড়ে। এ বার নাফেড-এর দীপাবলির উপহারের ঝুড়িতে দেখা গেল মিষ্টি, কাজু, আখরোটের সঙ্গে জায়গা পেয়েছে মহার্ঘ সর্ষের তেল। ২০০ টাকার বেশি লিটারের সর্ষের তেলের বোতল পেলে দীপাবলিতে আত্মীয়স্বজনরা খুশি হবেন বলেই নাফেড কর্তাদের বিশ্বাস।

গোলমেলে পোস্টার

দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকার এখন পালন করছে ‘ভিজিল্যান্স অ্যাওয়ারনেস’ সপ্তাহ। সেই সূত্রে বিভিন্ন মন্ত্রক কর্মীদের জন্য তৈরি করেছে বিভিন্ন প্রচার স্লোগান, ছবি। রেলভবনের দোতলায় এ রকমই একটি পোস্টার নিয়ে অফিসারদের মধ্যে চাঞ্চল্য। দেওয়ালে লাগানো কার্টুনে দেখা যাচ্ছে আকাশ থেকে টাকার মণ্ড পড়ছে এবং তা এক ব্যক্তির ব্রিফকেসে ঢুকে যাচ্ছে। সঙ্গে বার্তা, “বেআইনি অর্থ ক্যানসারের মতো। আপনি যা পছন্দ করেন, ওই অর্থ এক সময় তার সব কিছুই ধ্বংস করে দেবে।” রেলকর্মীরা নজর করে দেখেন, অর্থের মণ্ডে ভারতীয় টাকার বদলে আমেরিকার ডলারের ছাপ! রেল অফিসাররা নিজেদের মধ্যে মজা করে বলছেন, তা হলে তো ওই ছবিটি তাঁদের ক্ষেত্রে অপ্রাসঙ্গিক!

অশ্বিনীর পাশ-ফেল

আইএএস পরীক্ষায় গোটা দেশে ২৭তম স্থানে ছিলেন। তার আগে কানপুর আইআইটি থেকে এমটেক ডিগ্রি, পেনসিলভানিয়ার ওয়ার্টন স্কুল থেকে এমবিএ। কিন্তু ইলেকট্রনিক্স ও কমিউনিকেশনস ইঞ্জিনিয়ারিং ও রাজনীতির সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং যে আলাদা বস্তু, তা বুঝি তরুণ মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এ বার টের পেলেন। রাজ্যসভায় জিতে এসেই মোদী সরকারের মন্ত্রী হয়েছিলেন অশ্বিনী। একেবারে ক্যাবিনেট মন্ত্রী। এক সঙ্গে তিনটি দফতর। রেল, যোগাযোগ, ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি। মন্ত্রী হয়েই প্রথমে সংসদে পেগাসাস নামক আড়ি পাতার যন্ত্র নিয়ে সাফাই দেওয়ার গুরুদায়িত্ব পড়েছিল। সেই সাফাইয়ে সংসদে অচলাবস্থা কাটেনি। সুপ্রিম কোর্টেও তাঁর জবাব হালে পানি পায়নি। অতঃপর প্রথম রাজনৈতিক দায়িত্ব পড়েছিল দাদরা ও নগর হাভেলির লোকসভা উপনির্বাচন সামলানো। কিন্তু সেখানেও তরী ডুবল। শিবসেনা ওই আসনে জিতে মহারাষ্ট্রের বাইরে প্রথম খাতা খুলল। বৈষ্ণবকে বেজার মুখেই ঘরে ফিরতে হল।

চিন্তিত: মন্ত্রিসভার সদস্য অশ্বিনী বৈষ্ণব।

চিন্তিত: মন্ত্রিসভার সদস্য অশ্বিনী বৈষ্ণব।

মাতৃভাষায় শপথ

রাজ্যসভার দু’জন নতুন সাংসদ শপথ নিলেন তাঁদের মাতৃভাষায়। তৃণমূল কংগ্রেসের সুস্মিতা দেব বাংলায় এবং বিজেপির সেলভা গণপতি তামিলে। এর আগেও যে ১৪ জন শপথ নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ১০ জন শপথ নেওয়ার জন্য মাতৃভাষার শরণাপন্ন হলেন। এই প্রবণতায় খুবই খুশি রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু। তিনি বরাবরই সভাসমিতিতে মাতৃভাষার চর্চা বাড়ানোর জন্য তাগাদা দিন। তাঁর কথায়, মাতৃভাষায় শপথ নেওয়ার বিষয়টি দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Delhi Diary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE