Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

সুর ভোলানোর চেষ্টা হয়েছিল, তাই আরও উচ্চকিত হল গানটা

গণতন্ত্রের সৌন্দর্যটা আরও এক বার উপলব্ধি করা গেল আজ। সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা, সরকারে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব, রাজ্যে রাজ্যে দলের জয়ধ্বজা, দেশপ্রেমের নামে চাগিয়ে তোলা উগ্র জাতীয়তাবাদের ঝড়— এত কিছু সত্ত্বেও স্বৈরাচারি পদক্ষেপটা করা গেল না। থমকে দাঁড়াতে হল নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০৩
Share: Save:

গণতন্ত্রের সৌন্দর্যটা আরও এক বার উপলব্ধি করা গেল আজ।

সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা, সরকারে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব, রাজ্যে রাজ্যে দলের জয়ধ্বজা, দেশপ্রেমের নামে চাগিয়ে তোলা উগ্র জাতীয়তাবাদের ঝড়— এত কিছু সত্ত্বেও স্বৈরাচারী পদক্ষেপটা করা গেল না। থমকে দাঁড়াতে হল নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে।

একটি হিন্দি টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচারে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ভারত সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক, সে নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করতে হয়েছে। দেশজোড়া প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল, সংবাদমাধ্যম সঙ্ঘবদ্ধ প্রতিরোধে নেমেছিল। শাসকের রক্তচক্ষু শাসিয়েছে যত, বিপ্রতীপে ঐক্য জমাট বেঁধেছে ততই। অবশেষে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে পৌঁছল লড়াই। আর শুনানির আগেই রণে ভঙ্গ দিলেন শাসক।

আসলে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র তার সংবিধানের কাছ থেকেই একাধিক রক্ষাকবচ পেয়েছে। নানা ঘাত-প্রতিঘাতের যাত্রাপথে সে সব রক্ষাকবচ আরও মজবুত হয়েছে। ভারতীয় গণতন্ত্রে, ভারতীয় সাংবিধানিক কাঠামোয় স্বৈরাচারের সংস্থান নেই। বরং অলিখিত, অনুচ্চারিত ভঙ্গিতে বজ্রমুষ্টি আরোপের চেষ্টা হওয়া মাত্রই বিপদঘণ্টা বাজিয়ে দেওয়ার সংস্থান রয়েছে একাধিক। ঘণ্টাগুলো বাজতে শুরু করেছিল একে একে। শাসককে তাই পদক্ষেপটা সামলে নিতে হল অন্তিম মুহূর্তে।

গণতন্ত্রের মূল সুরটা এই রকমই। সে সুর ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা মাঝেমধ্যেই হয়। আগে হয়েছে। এখনও হচ্ছে বোঝা যায় বেশ। কিন্তু সে সুরে আরও এক বার গলা সেধে ভারতভূমি বুঝিয়ে দিল, এ গান ভোলানো যাবে না সহজে। ভোলানোর চেষ্টা হলেই সমবেত সঙ্গীত হবে, স্বর আরও উচ্চকিত হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE