E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: ধর্ম নিয়ে মাতামাতি

। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ধর্মীয় উৎসবকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে স্থায়ী দুর্গা অঙ্গন তৈরি করতে হবে।”

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৫ ০৭:৩৫

গত ২১ জুলাই, কলকাতার ধর্মতলায় শহিদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত তৃণমূল কংগ্রেসের সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, বিভিন্ন জেলায় ‘দুর্গা অঙ্গন’ তৈরি করবে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ধর্মীয় উৎসবকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে স্থায়ী দুর্গা অঙ্গন তৈরি করতে হবে।”

এই ঘোষণার পরেই প্রশ্ন উঠেছে— রাজ্যের আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে সরকার কি শুধু ধর্মীয় প্রকল্পেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে? রাজ্যের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান খাতে যেখানে বিপুল ঘাটতি রয়েছে, সেখানে সরকারি তহবিল দিয়ে দুর্গার স্থায়ী উপাসনাস্থল বা পুজো পরিকাঠামো গড়ে তোলা যুক্তিসঙ্গত কি? দিঘায় জগন্নাথ দেবের বিশাল মন্দির নির্মাণ করে সরকারি কোষাগার থেকে বহু কোটি টাকা খরচ হয়েছে। সেই সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরে দুর্গাপুজোর সময় রাজ্য জুড়ে ক্লাবগুলিকে মোটা অঙ্কের টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে। এই সব সিদ্ধান্তে একটি প্রবণতা স্পষ্ট— রাজ্য সরকার ক্রমাগত ধর্মীয় আবেগ ও উৎসবকেন্দ্রিক কাঠামোর দিকে বেশি জোর দিচ্ছে। অথচ, বাস্তবে রাজ্যের গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত ডাক্তার নেই, স্কুলে শিক্ষকসঙ্কট রয়েছে, আর যুবকদের বড় অংশ বেকার।

বিজেপির রাম মন্দির নির্মাণ, বারাণসী-মথুরার মতো হিন্দুত্ব রাজনীতির মোকাবিলায় তৃণমূল কংগ্রেস এক ‘নরম হিন্দুত্ব’-এর পথ ধরেছে, যার মাধ্যমে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু ভোটারদের সন্তুষ্ট রাখতে চায়। এ দিকে, ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি অনুযায়ী, রাষ্ট্র কোনও বিশেষ ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা করতে পারে না। অথচ, রাজ্য সরকারের প্রকল্প ও ভাষণ এখন ক্রমেই ধর্মীয় প্রতীকের আশ্রয়ে জনমত নির্মাণে বেশি সক্রিয়। ‘দুর্গা অঙ্গন’ নির্মাণ তারই প্রতিচ্ছবি।

সরকারি শাসনের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত নাগরিকের মৌলিক অধিকার ও জীবনের মান উন্নয়ন। সেখানে দেবদেবীর নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় কি সত্যিই রাজ্যের বাস্তব প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হবে?

পিনাকী মুখোপাধ্যায়, কোন্নগর, হুগলি

ভোটের গেরো

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, এমনকি বিভিন্ন কলেজ থেকেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিএলও (বুথ লেভেল অফিসার) কাজে নিযুক্ত করছে। এটা ঠিক যে, ২০০৯-এর শিক্ষার অধিকার আইনের ২৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী, জনশুমারি, দুর্যোগে ত্রাণ বা নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ ছাড়া শিক্ষকদের ‘শিক্ষা বহির্ভূত অন্য কোনও কাজ’-এ নিযুক্ত করা যাবে না। কিন্তু সমস্যা হল, উচ্চ মাধ্যমিক কাউন্সিলের নির্দেশ, সেপ্টেম্বর থেকে দ্বাদশ শ্রেণির তৃতীয় সিমেস্টার এবং একাদশ শ্রেণির প্রথম সিমেস্টার শুরু করে পুজোর আগে শেষ করতে হবে। তার পর খাতা দেখা, রেজ়াল্টের কাজ তো আছেই। এত কিছু করে এক জন শিক্ষক/ শিক্ষিকার পক্ষে কমপক্ষে ৯০০-১০০০ জন ভোটারের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য যাচাই করা সম্ভব?

এমনিতেই জেলার বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। তার উপর ‘উৎসশ্রী’-তে যে শূন্যস্থান ছিল, তা এখনও পূরণ হয়নি। এ দিকে বিএলও-কে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ, যাচাই এবং তা কম্পিউটারে আপলোড করার মতো হরেক কাজ করতে হয়। আর, এই কাজ সর্ব ক্ষণের কর্মী ছাড়া কোনও মতেই সম্পূর্ণ করা সম্ভব নয়। শিক্ষকরা এই কাজে বেশি সময় দিলে তাতে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হবে না? নির্বাচন কমিশন, শিক্ষা অধিকর্তাদের বিষয়টি ভেবে দেখার আবেদন রইল।

আলতাফ আহমেদ, কলকাতা-৮২

বাসযোগ্য নয়

ব্রহ্মপুরের ভিতরে পঞ্চাননতলা থেকে উল্টো পিঠে কিছুটা হেঁটে এসে একটু ভিতরের দিকে ঢুকে গেলে এগারোটি ঘরের সঙ্গে দুটো ফ্ল্যাটবাড়ি রয়েছে। প্রায় পঞ্চাশ জনের মতো লোকের বাস ওই জায়গাটিতে। অথচ, প্রতি বছর বর্ষায় হাঁটু পর্যন্ত জলে ডুবে থাকে এই জায়গাটি। এখানকার কাউন্সিলরকে অনেক বার বলেও কোনও কাজ হয়নি। তিনি প্রতি বছর আসেন, কথা দিয়ে চলে যান। নোংরা নর্দমার জল পেরিয়ে রোজ কাজকর্মে বেরোতে হয় বাসিন্দাদের। তাতে ত্বকে সংক্রমণের মতো সমস্যা লেগেই আছে। অ্যাম্বুল্যান্স আসার জন্যও রাস্তা উপযুক্ত নয়। কোনও গাড়ি ভাড়া করলেও এখানে আসতে চায় না। এই দুর্ভোগ নিয়েই দিন কাটছে বাসিন্দাদের। এর শীঘ্র প্রতিকারের জন্য আবেদন রইল।

অর্পিতা মজুমদার, কলকাতা-১৫৪

জালিয়াতি

কিছু দিন আগে আমি সাইবার অপরাধীদের চক্রান্তের শিকার হয়েছি। একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের বাঘা যতীন শাখার সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে আমার দুই লক্ষ তেত্রিশ হাজার টাকা উধাও হয়ে যায়। ব্যাঙ্কের অফিসার পরিচয় দিয়ে আমার কাছে ফোন আসে এবং বলা হয় প্রবীণ নাগরিকদের বিশেষ পরিষেবার জন্য কিছু তথ্যের প্রয়োজন। আমি না বুঝে বিশ্বাস করে ফেলি এবং ওদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ফেলি। ব্যস, তার পর চোখের সামনে টাকাগুলো উধাও হয়ে যায়। এর পর সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়েছি। ন্যাশনাল ক্রাইম সাইবার সেল, স্থানীয় পুলিশ থানা ও তাদের সাইবার ক্রাইম শাখা এবং আমার ব্যাঙ্কের কাস্টমার কেয়ারের জালিয়াতি বিভাগে অভিযোগ দায়ের করি। সব জায়গা থেকে প্রাপ্তি সংবাদ পাই, আশ্বাস‌ও পাই। কিন্তু অদ্যাবধি কোনও সুরাহা বা বিন্দুমাত্র আশার আলো দেখতে পাইনি। আমার বয়স ৭৫ বছর। এই বয়সে ভুল হতেই পারে। বিশেষত, এখনকার পদ্ধতি আমাদের কাছে খুবই অচেনা। সরকার, প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আরও একটু সচেষ্ট না হলে, আমাদের মতো প্রবীণদের বেঁচে থাকাই দায় হবে।

অরুণ কুমার বসু, কলকাতা-৮৪

বাসস্টপ চাই

রাজ্য সরকারের পরিবহণ দফতরের অধীন এসবিএসটিসি পরিচালিত সল্ট লেক-করুণাময়ী ও বর্ধমান-আসানসোল-দুর্গাপুরের মধ্যে যাত্রী-পরিবহণকারী সরকারি বাসগুলি বর্ধমান থেকে করুণাময়ী ফেরার সময় বিভিন্ন স্টপের পাশাপাশি লেক টাউন ফুটব্রিজের কাছেও স্টপ দেয়। কিন্তু সল্ট লেক করুণাময়ী থেকে যাত্রা শুরু করে বর্ধমানের দিকে যাওয়ার সময় বাসগুলো লেক টাউনে কোনও স্টপ দেয় না। ফলে লেক টাউন, পাতিপুকুর, কালিন্দি, গ্রিনপার্ক ও বাঙুর অ্যাভিনিউ— এই বিস্তৃত এলাকার যাত্রীদের ওই বাসে চড়ার জন্য অনেক কষ্ট করে বাগুইআটি, নয়তো এয়ারপোর্ট এক নম্বর গেটের স্টপে পৌঁছতে হয়।

সল্ট লেক-করুণাময়ী থেকে যাত্রা শুরু করা এসবিএসটিসি বাসগুলো ধরতে লেক টাউনে স্টপের ব্যবস্থা করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।

সুদেব কুমার মল্লিক, কলকাতা-৮৯

জলের অপচয়

গোবরডাঙা পুরসভা থেকে কিছুটা দূরেই অবস্থিত গোবরডাঙা পুরাতন পুলিশ ফাঁড়ি এলাকায় একটি ট্যাপকল থেকে প্রতি দিন অনবরত জল পড়ে। ট্যাপকলটির হাতল খারাপ হয়ে যাওয়ার ফলে কলটি যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন, জল আসার নির্দিষ্ট সময়ে অনবরত জল পড়তেই থাকে। ফলে জল অপচয় রোধ করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা ট্যাপকলটির মাথায় একটি ইট চাপিয়ে রেখেছেন। কিন্তু তাতেও কোনও সুরাহা হয়নি। এমনিতেই গ্রীষ্মে বহু জায়গায় জলের হাহাকারের কথা শুনি। আগামী দিনে তা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা।

অনর্থক জল খরচ হওয়া আটকাতে এই ট্যাপকলটি অবিলম্বে ঠিক করা প্রয়োজন।

সৈকত কর্মকার, গোবরডাঙা, উত্তর ২৪ পরগনা

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja Religions

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy