‘অজানা গ্যালাক্সিতে উড়ান মাটির সুপারহিরোর’ (আনন্দপ্লাস, ১৪-১১) প্রতিবেদন প্রসঙ্গে বলি, মার্ভেল কমিক্সের প্রাণপুরুষ হওয়ার পাশাপাশি, স্ট্যান লি অন্যান্য কমিক্স কোম্পানির সুপারহিরোদের ওপর কাজও করেছেন। যেমন অরণ্যদেব, জাদুকর ম্যানড্রেক, লোথার, ফ্ল্যাশ গর্ডন প্রভৃতি অতিমানবদের নিয়ে তৈরি ‘ডিফেন্ডার্স অব দি আর্থ’ অ্যানিমেটেড সিরিজ়-এর টাইটেল ট্র্যাক-এর গীতিকার স্ট্যান লি! আবার সেই সিরিজ়ের ভিত্তিতে লেখা কমিক্স-এরও আংশিক রচয়িতাও তিনি। এ ছাড়া প্রায় প্রত্যেকটি ‘মার্ভেল ইউনিভার্স’-এর ছবিতে স্ট্যান লি এক বার না এক বার মুখ দেখিয়েছেনই— কখনও বাসচালক কিংবা গ্রন্থাগারিক, কত কিসিমের চরিত্রে! সুরসিক স্ট্যান লি ২০১৫ সালের ফ্লপ ‘ফ্যান্টাস্টিক ফোর’ ছবি প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ছবিটি চলেনি একটিই কারণে, স্ট্যান এক বারের জন্যও সেই ছবিতে মুখ দেখাননি!
শঙ্খশুভ্র চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা-৭৮
নদী ও রাজনীতি
বোলান গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘নদীতে রাজনীতির জল বইছে’ (২৩-১১) নিবন্ধের সূত্রে, ভারতে প্রথম নদী বিক্রির গল্প বলি। ছত্তীসগঢ়ের দুর্গ জেলার শিউনাথ নদীর তীরবর্তী শিল্পাঞ্চলে নিয়মিত জল সরবরাহের জন্য, ১৯৯৮ সালে মধ্যপ্রদেশ সরকার একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে। চুক্তি অনুসারে কোম্পানিটি নিজেদের খরচায় ব্যারেজ বানিয়ে সরকার থেকে অর্থ প্রাপ্তির বিনিময়ে ওই শিল্পাঞ্চলে জলের সরবরাহ শুরু করে। চুক্তিটি সরকারের পক্ষে মোটেই সুবিধাজনক হয়নি, এর জন্য গ্রামবাসীদের বিস্তর ক্ষতি স্বীকার করতে হয়েছিল। কোনও ভাবেই তাদের নদীর জল ব্যবহার করতে দেওয়া হত না। হাজার নিষেধ বলবৎ হয়েছিল। নদীর ধারে কোনও নলকূপ বসাতেও দেওয়া হত না। নদী থেকে এক কিমি পর্যন্ত জায়গায় চাষ করতে দেওয়া হত না। লাগাতার আন্দোলনের ফলে ২০০৩ সালে মধ্যপ্রদেশ সরকার চুক্তিটি বাতিল করে। ভারতের একটি ছোট নদীতে দুই দশক আগে এই ভাবে রাজনীতির জল বয়ে গিয়েছিল।
রঞ্জিত কুমার দাস
বালি, হাওড়া
একটা গল্প
‘গাঁধী জয়ন্তী কবে থেকে জাতীয় ছুটি, নেই তথ্য’ (১-১১) শীর্ষক প্রতিবেদনে জানলাম, সরকারি ভাবে কবে থেকে গাঁধীকে ‘জাতির জনক’ বলা হয়, নেই সে তথ্যও। বহু পূর্বে পঠিত একটি উপাখ্যান পরিবেশনের প্রলোভন সামলানো দুষ্কর হল। ১৮৬০। বিসমার্ক প্রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত রূপে তৎকালীন জ়ার দ্বিতীয় আলেকজ়ান্ডারের সঙ্গে বসে কূটনৈতিক আলোচনায় রত, এমন সময় লক্ষ করলেন বাইরের তুষারসঙ্কুল প্রান্তরে প্রায় বিনা কারণেই যেন একটি প্রহরী দাঁড়িয়ে রয়েছে। কৌতূহলী হয়ে তিনি জ়ারকে জিজ্ঞাসা করে বসলেন, প্রহরীটি শূন্য প্রান্তরে ঠিক কী পাহারা দিচ্ছে। জ়ার বিব্রত হয়ে স্বীকার করলেন, তা তিনি জানেন না, তবে জন্মাবধি এই প্রথা দেখে আসছেন। লজ্জিত জ়ার তাঁর মন্ত্রী ও অন্য প্রাচীন রাজপুরুষদের এ সমস্যা সমাধানে আহ্বান করলেন। তাঁরাও অধোবদন হলেন। সংখ্যাতীত ধূসরিত নথি মন্থন করে দীর্ঘ তিনটি দিন পর একটি আশ্চর্য ইতিহাস আবিষ্কৃত হল। ১৭৮০ সালের কথা। জার্মান-দুহিতা ক্যাথরিন দ্য গ্রেট তখন রাশিয়ার সম্রাজ্ঞী। এক দিন ভোরে উঠে ক্যাথরিন জানালা দিয়ে দেখলেন সেই বসন্তে শীতের বরফ গলে গিয়ে মাঠের ঘাসের উপর সে বছরের প্রথম ফুলটি মাথা তুলেছে। পাছে কেউ না জেনে তাকে মাড়িয়ে চলে যায়, এই আশঙ্কায় রাজ্ঞী ক্যাথরিন তৎক্ষণাৎ এক সান্ত্রিকে ফুলটির প্রহরায় নিযুক্ত করলেন। কত দিন এ পাহারা থাকবে— সে কথা জানাতে তিনি ভুলেছিলেন। সে ফুল ঝরে গিয়ে কত বসন্ত চলে গেছে, ধু ধু প্রান্তরে একাকী প্রহরীটি এখনও দণ্ডায়মান। জ়ার দ্বিতীয় আলেকজ়ান্ডার অবশেষে প্রথাটি রদ করেন। ক্ষুদ্র কাহিনিটি আমি শৈশবে সাহিত্যিক গজেন্দ্রকুমার মিত্রের একটি গল্পিকা পাঠে জেনেছিলুম।
দীপঙ্কর চৌধুরী
শ্রীরামপুর, হুগলি
খাতার মূল্যায়ন
এ বছর স্ক্রুটিনি ও রিভিউয়ের মাধ্যমে অনেক পরীক্ষার্থীর নম্বর বৃদ্ধি পেয়েছে। পরীক্ষকদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। ভেবে দেখা দরকার, যে সময়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার খাতার মূল্যায়ন চলে, একই সঙ্গে স্কুলে ক্লাস চলে। বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শ্রেণিশিক্ষণ-সহ যাবতীয় দায়িত্ব পালন করার পর, বাড়িতে ফিরে সন্তানের দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গেই, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই খাতার মূল্যায়ন করতে হয়। সারা দিন ক্লান্তির পর খাতার মূল্যায়নে অনেক সময় ভুল হয়ে যেতে পারে। তাই যদি এক বা একাধিক স্কুলে পরীক্ষার সেন্টার তৈরি করে খাতার মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা যায়, অনেকে এক সঙ্গে মিলে খাতার মূল্যায়ন করতে পারলে, সমস্যার সমাধান সম্ভব হতে পারে। এতে পরীক্ষকগণও উৎসাহিত হবেন।
রীতা সেনগুপ্ত
কলকাতা-৭০
কী দরকার?
লেখক অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত বয়সকালে কিছু প্রেমপত্র লেখেন কলেজে পড়া এক তরুণীকে। সেই সব চিঠির কিছু অংশ খামচা ভাবে রবিবাসরীয়তে (৪-১১) প্রকাশিত হয়েছে। যৌনতায় ভরা। লেখক অচিন্ত্যর বহু অনবদ্য লেখা পাঠকমনে প্রোথিত হয়ে থাকবে। বর্তমান শিক্ষিত সম্প্রদায় অচিন্ত্যর লেখা পড়েন কি না জানি না। কিন্তু তাঁর সুনাম সর্বজনবিদিত। রবিবাসরীয়র এই নিবন্ধ পাঠককুলকে কোনও বৈকুণ্ঠধামে পৌঁছে দেবে না, বরং লেখক সম্বন্ধে একটা নেতিবাচক মানসিকতার উন্মেষ ঘটাবে। মুক্ত চিন্তা, খোলা বাজার, পাঠকের জানার অধিকার সবই মানা গেল। তা বলে ব্যক্তিমানুষের স্নানঘরের ছবি প্রকাশের অধিকার জন্মায় কি? অচিন্ত্যকে নিয়ে বিশ্লেষণমূলক কোনও গ্রন্থে এই চিঠির অংশ-বিশেষ প্রকাশিত হতে পারত, রবিবাসরীয়র স্বল্প পরিসরে নয়।
স্বপন কুমার ঘোষ
কলকাতা-৩৪
তরঙ্গ
‘তিন বছর বয়স থেকে অঙ্কে টান’ (৮-১১) শীর্ষক প্রতিবেদনটির প্রেক্ষিতে জানাই, গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভস বা মহাকর্ষ তরঙ্গ আইনস্টাইনের অনুমান ছিল না। মহাকর্ষ ক্ষেত্রেই এই তরঙ্গের উৎপত্তি যা আসলে শূন্যস্থানের প্রসারণ ও সঙ্কোচনের তরঙ্গাকারে বিস্তার। এই তরঙ্গের অস্তিত্বটি ক্ষেত্রসমীকরণগুলির মধ্যেই অন্তর্নিহিত ছিল কিন্তু আইনস্টাইন প্রথমে তা মানতে চাননি। এই ব্যাপারে আইনস্টাইন ও নাথান রোজ়েন ১৯৩৬ সালে একটি পেপার লিখেছিলেন, যার শিরোনাম ছিল ‘ডু গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভস এগজ়িস্ট’। বিশ্লেষণ করে তাঁরা দেখিয়েছিলেন এই ধরনের কোনও তরঙ্গের অস্তিত্ব নেই। মজার ব্যাপার হল, পেপারটিতে একটি গাণিতিক ভুল ছিল, যা পরে তাঁরা নিজেরাই সংশোধন করে প্রকাশ করেছিলেন। অর্থাৎ আগের ‘না’-টি হ্যাঁ হয়ে গেল। একেবারেই বিপরীত অবস্থান। মহাকর্ষীয় তরঙ্গের অস্তিত্ব আছে।
বরুণ কুমার দত্ত
চুঁচুড়া, হুগলি
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
ভ্রম সংশোধন
• ‘কমছে রান্নার গ্যাসের দাম’ শীর্ষক সংবাদ প্রতিবেদনে (পৃ ১, ১-১২, কিছু সংস্করণ) লেখা হয়েছে, ‘সিলিন্ডারের দাম ১৩৪.৫০ টাকার পরিবর্তে কমে হচ্ছে ৮৩৭ টাকা’। প্রকৃতপক্ষে ১৩৪.৫০ টাকা কমে সিলিন্ডারের দাম হচ্ছে ৮৩৭ টাকা।
• ‘আর-কমকে সায়’ শীর্ষক সংবাদ প্রতিবেদনে (ব্যবসা, পৃ ১০, ১-১২, কিছু সংস্করণ) ‘জিয়োর স্পেকট্রাম আর-কমকে’-র বদলে ‘আর-কমের স্পেকট্রাম জিয়োকে’ হবে।
অনিচ্ছাকৃত এই ভুলগুলির জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy