Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: কলাভবন ও কৌশিক

১৯৫১ সালে নন্দলালের অবসরের পর কলাভবনে উৎকর্ষের অধোগতি ঘটেছিল তা অস্বীকার করার উপায় নেই।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:১০
Share: Save:

কলাভবনের শতবর্ষ উপলক্ষে শান্তিনিকেতনের ‘নন্দন’ গ্যালারিতে ‘শিল্পভূমির স্তম্ভ’ শীর্ষক একটি প্রদর্শনী আয়োজিত হয়েছে। এই বিষয়ে প্রতিবেদন ‘‘সাত ‘স্তম্ভ’কে নিয়ে প্রদর্শনী কলাভবনে’’ (২-৯) এবং সেই উপলক্ষে লীনা ঘোষের ‘আরও স্তম্ভ’ চিঠির (১১-৯) পরিপ্রেক্ষিতে দুয়েকটি কথা। এটি কিউরেট করেছেন কলাভবনের প্রাক্তনী তথা প্রখ্যাত ভাস্কর কে এস রাধাকৃষ্ণন। তবে প্রদর্শনীটি ঘিরে যে বিতর্ক দানা বেঁধেছে তাও পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়ার নয়। কলাভবনের স্তম্ভ হিসেবে এখানে স্বতন্ত্র ভাবে চিহ্নিত হয়েছেন রবীন্দ্রনাথ, নন্দলাল, বিনোদবিহারী এবং রামকিঙ্করের পাশাপাশি সোমনাথ হোর, কে জি সুব্রহ্মণ্যন ও শর্বরী রায়চৌধুরী— যা নিয়ে কোনও তর্ক নেই। কিন্তু এই বিশেষ সারিতে দিনকর কৌশিকের নাম না থাকায় অনেকে আশ্চর্য হয়েছেন। একটু পিছন ফিরে কলাভবনের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে, ১৯৫১ সালে নন্দলালের অবসরের পর কলাভবনে উৎকর্ষের অধোগতি ঘটেছিল তা অস্বীকার করার উপায় নেই। আপন খেয়ালে নিমগ্ন রামকিঙ্কর কলাভবনে শিক্ষকতা করলেও প্রতিষ্ঠানের ভার নেওয়ার মতো বাসনা তাঁর কোনও দিনই ছিল না। ও দিকে নন্দলালের অবসরের আগেই বিনোদবিহারী কাজের সূত্রে শান্তিনিকেতন ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন এবং পুনরায় কলাভবনে ফিরে এসেছেন ১৯৫৮ সাল নাগাদ। কিন্তু চোখে অস্ত্রোপচারের পর বিনোদবিহারী তখন সম্পূর্ণ ভাবে দৃষ্টিশক্তিহীন। ইতিমধ্যে বিচিত্র দোলাচলের টানাপড়েনে রবীন্দ্রনাথ ও নন্দলালের হাতে গড়া কলাভবন ক্রমে তার উজ্জ্বলতা হারাতে বসেছে। হয়ে উঠছে ওরিয়েন্টাল আর্টের একপ্রকার ক্ষীণ প্রবাহের মতো। ১৯৬৬ সালে নন্দলালের প্রয়াণের পর দেশের প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্বভারতীর আচার্য ইন্দিরা গাঁধীর অনুরোধে কলাভবনের ভার নিয়ে শান্তিনিকেতনে আসেন দিনকর কৌশিক, সেটা ১৯৬৭ সাল। কৌশিক তখন প্রতিষ্ঠিত শিল্পী এবং ভবেশ সান্যাল-সহ ও অন্য শিল্পীদের নিয়ে ‘দিল্লি শিল্পচক্র’, ‘ত্রিবেণী কলা সঙ্গম’ ইত্যাদি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। দেশের বাইরে তাঁর ছবির প্রদর্শনী হয়েছে ইটালি, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, আমেরিকায়।

অধ্যক্ষ হিসেবে কলাভবনে যোগ দিয়ে দিনকর কৌশিক লক্ষ করেন দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দুই শিল্পী বিনোদবিহারী ও রামকিঙ্কর কলাভবনের সাধারণ শিক্ষকমাত্র, ‘প্রফেসর’ পদমর্যাদায় ভূষিত নন। কাজে যোগ দিয়ে তাঁর প্রথম প্রায়োরিটি ছিল তাঁদের যথাযথ সম্মানের সঙ্গে ‘প্রফেসর’ পদে উন্নীত করা। ক্রমে কলাভবনের শিল্পচর্চার কাঠামোকে নতুন করে সাজিয়ে, বিভিন্ন বিভাগকে তিনি যোগ্য শিল্পীদের এনে কলাভবনের কাজে নতুন জোয়ার এনেছেন। এই পর্বেই কলাভবনে যোগ দিয়েছেন সোমনাথ হোর, শর্বরী রায়চৌধুরী, অজিত চক্রবর্তী, সনৎ কর, জয়ন্ত চক্রবর্তী, সুহাস রায় প্রমুখ শিল্পী ও শিল্প-ইতাহসের অধ্যাপক। ভিজিটিং ফেলো হিসেবে এসেছেন কে জি সুব্রহ্মণ্যন, জয়া আপ্পাস্বামীর মতো শিল্পব্যক্তিত্ব। তাঁর পরিকল্পনা ও কর্মদক্ষতা ও বিপুল প্রয়াসে কলাভবন আজকের এই নতুন চেহারায় প্রতিভাত। তাই নিশ্চিত ভাবে শিল্পী, চিন্তক ও দক্ষ সংগঠক দিনকর কৌশিককে কলাভবনের নতুন রূপকার হিসেবে গ্রহণ করতে হয়। আজ কলাভবন যখন বিপুল আয়োজনে রচিত প্রদর্শনীতে তার সাতটি স্তম্ভের মধ্যে এই মানুষটিকে অস্বীকার করে, তখন সেই প্রদর্শনীর পরিকল্পনা ও ভাবনার নিরপেক্ষতা বা ইতাহাসের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বইকি!

প্রদর্শনী কক্ষে আলোকচিত্রের সঙ্গে দেওয়া বিবরণ এবং এই উপলক্ষে প্রকাশিত ঝকঝকে স্মার্ট ক্যাটালগে ছবিগুলির টাইটেলে ভুলের ছড়াছড়ি। এ দিকে প্রায় খেয়াল করাই হয়নি, তাই এক ছবি একাধিকবার দেখা মেলে বিবরণের ভিন্নতায়, এক শিল্পীর কাজ আর এক জনের নামে চিহ্নিত হয়।

সুশোভন অধিকারী

শান্তিনিকেতন

ভারমুক্ত
‘মিঠুনের পথে টাকা ফেরালেন শতাব্দীও’ (৫-৯) শিরোনামে সংবাদ প্রসঙ্গে দু’চার কথা। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজ্য রাজনীতিতে সর্বাধিক আলোড়ন সৃষ্টিকারী দুই ঘটনা হল ‘চিট ফান্ড কেলেঙ্কারি’ ও ‘নারদ কাণ্ড’। বস্তুত এই দুই জোড়া ফলায় বিদ্ধ হয়েও পুনরায় শাসন ক্ষমতা লাভ শাসক দলের অন্যতম সাফল্য বলে বিরোধীরাও মনে করে থাকেন। সারদার কাছ থেকে নেওয়া প্রায় দেড় কোটি টাকা ইডিকে ফেরত দিয়েছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। ২০১৫ সালে শিল্পী হিসেবে কাজ করে পাওয়া পারিশ্রমিক এ ভাবে ডিমান্ড ড্রাফ্টে মিটিয়েছিলেন তিনি। এ বার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে লব্ধ অর্থ ফেরত দিলেন শতাব্দী। বিবেকবোধের তাড়নায় চার বছর বাদে গরিব মানুষের টাকা ফেরত দিয়ে শতাব্দী নিশ্চিত ভাবে ভারমুক্ত হলেন। সারদা ও অনুরূপ চিট ফান্ডগুলি যদি ফ্লপ না হয়ে আরও ফুলেফেঁপে চলত, যদি সিবিআই বা অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা তদন্তে না নামত, তবে কি তাঁরা এ ভাবে পারিশ্রমিক ফেরত দিতেন? সারদায় প্রতারিত গরিব মানুষেরা কি ‘দিদিকে বলো’ নম্বরে ফোন করে কোনও সুরাহা পেতে পারেন?
রাজশেখর দাস
কলকাতা-১২২

শিখণ্ডী
‘বিচ্ছিন্ন উপত্যকা কী ভাবছে’ (১১-৯) শীর্ষক নিবন্ধের পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি। বামপন্থী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা অনুপ্রবেশের ব্যাপারে দক্ষিণপন্থীদের দোষ দিয়ে থাকেন। কিন্তু কিউবা বা উত্তর কোরিয়া থেকে কেন লোকজন প্রাণ বাঁচাতে অন্য দেশে পাড়ি দেয় সেটা ওঁরা দেখতে পান না। অনুপ্রবেশ হলে তাকে কী ভাবে আমন্ত্রণ জানাতে হয় সেটা দক্ষিণপন্থী দেশ বা দলগুলিকে রাশিয়া চিনের থেকে শিখতে বলেন না এই ভাগ্য। দুর্ভাগ্য এই যে, লেখাটির সঙ্গে যে ছবিটা দেওয়া হয়েছে সেটা নিয়ে এর আগেই অনেক অলোচনা হয়েছে। আর্মি বাঙ্কারের সামনে পাথড় ছোড়া ছেলেদের মুখে পেলেট গানের গুলি কেন লাগে, তা বোধ হয় এই ছবিটা দেখলে ভাল বোঝা যাবে। শিখণ্ডীর মতো একটা নিরীহ বাচ্চাকে জানালাতে দাঁড় করিয়ে রেখে পিছন থেকে আরও দুটো হাত প্ল্যাকার্ড ধরে রেখেছে, সেটা সবাই দেখতে পাচ্ছে।
বিভাস রায়চৌধুরী
হলদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর

উপহার দিতে
‘মাঝরাতে কেন আড্ডা থানায়!’ (২৭-৮) শীর্ষক সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে এই পত্র। মাননীয়া এটা জানেন না কেন আড্ডা থানায়? মাঝরাতে যায় নেতারা। বিভিন্ন মাপের নেতারা। কারও মদের ঠেক, কারও চুল্লুর ঠেক, কারও আবার সাট্টার ঠেক আছে। এরা রেড যাতে না-হয় টাকা পৌঁছতে আসে। সঙ্গে বোতল উপহার দিয়ে থাকে। আর যায় প্রোমোটারের সাহায্যকারী বোয়ালরা। কেউ পুকুর বোজানোর নিরাপত্তা চাইতে আসে। আবার কেউ লোককে বেঘর করে জমি দখল নেওয়ার ষড়যন্ত্র করতে।
রীতা পাল
কলকাতা-২৪

নরককুণ্ড
বেহালা শখেরবাজার এলাকার বাসিন্দা। মাঝেরহাট সেতু ভেঙে যাওয়ার পর আমার মতো অসংখ্য মানুষ মাঝেরহাট স্টেশনে নেমে বেহালা অঞ্চলে ফেরেন। কিন্তু স্টেশন থেকে তারাতলা টাঁকশাল পর্যন্ত রাস্তাটি প্রায় নরককুণ্ড হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া রাস্তায় কোনও আলো নেই। কলকাতার মেয়র তথা পুরমন্ত্রীর কাছে বিশেষ অনুরোধ, অবিলম্বে রাস্তাটি যাতায়াতের উপযুক্ত করুন।
সঞ্জয় ঘোষ হাজরা
কলকাতা-৬১

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Santiniketan Kalabhavan Exhibition
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE