Advertisement
১১ মে ২০২৪
lockdown

বহু বছর ভিন দেশে কাটিয়েও এ রকম কঠিন সময়ের সম্মুখীন হইনি

এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা ম‌‌নোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা ম‌‌নোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।

লকডাউন চলছে নেদারল্যান্ডসে। ছবি: লেখকের নিজস্ব।

লকডাউন চলছে নেদারল্যান্ডসে। ছবি: লেখকের নিজস্ব।

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২০ ২০:২০
Share: Save:

বর্তমানে আমার স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে নেদারল্যান্ডসের হার্লেম বলে একটি শহরে আছি। এটা আমস্টারডামের ভীষণ কাছে।

এমনিতে দেশ হিসাবে এটি খুবই সমৃদ্ধশালী। জীবনযাপনের মানও যথেষ্ট উন্নত। পরিবেশ দূষণ প্রায় নেই বললেই চলে। অজস্র খালবিল দিয়ে ঘেরা ছবির মতোই সুন্দর এই ঐতিহাসিক শহর।

ফেব্রুয়ারিতে শেষের দিকে বসন্ত আসতেই যখন আবহাওয়া ঝলমলে হতে শুরু করল, হঠাৎ সব এলোমেলো হয়ে গেল। জানা গেল, এখানেও কোভিড-১৯ বা করোনা ঢুকে পড়েছে। এত দিন শুনছিলাম চিনে হয়েছে, ইতালিতেও শুরু হয়েছে কিন্তু আমাদের শিয়রেও যে বিপদ চলে আসবে ভাবিনি!

সরকারের উপর ভরসা রেখেই চলছি, কিন্তু কোনও ভাল খবর পাচ্ছিলাম না। স্কুল-অফিস সব নিয়মমাফিক চললেও তার মাঝেই বিভিন্ন জায়গায় সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। আমরা বেশ ভয়েই দিন কাটাচ্ছি এবং প্রতি দিনই গড়ে ৫০০-১০০০ জন সংক্রমিত হতে শুরু করল আর শয়ে শয়ে মৃত্যু বাড়তে থাকল।

এর পর ১৬ মার্চ এখানকার প্রধানমন্ত্রী সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করলেন। স্কুল বন্ধ হল, বাড়ি থেকে অফিস শুরু হল। দেড় মিটার দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে, অতি প্রয়োজন ছাড়া বেরনো যাবে না— এ সব নিয়ম শুরু হল। শুরু হল ঘরবন্দি জীবন। যদিও পুরোপুরি লকডাউন জারি হল না। হলে যদিও ভাল হত, কারণ কিছু মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে অল্পবয়সিদের মধ্যে সচেতনতার খুব অভাব চোখে পড়ল।

৬ এপ্রিল অবধি প্রায় ১৮ হাজার সংক্রমিত হলেন। এদের মধ্যে মৃত প্রায় ১৮০০। এদের মধ্যে বয়স্ক মানুষেরই আধিক্য। হাসপাতালে জায়গার অভাব, পর্যাপ্ত টেস্ট কিট, ভেন্টিলেটরের অভাব প্রকট হতে শুরু করল। এ দিকে দেশে কলকাতায় পরিবার-পরিজন-বন্ধুবান্ধবদের ব্যাপারেও উৎকণ্ঠা তো সঙ্গে আছেই। তাও আমরা এপ্রিল মাসের দেশে ফেরার টিকিট ও বাতিল করলাম।

একমাত্র আশার ব্যাপার, খুব ধীরে হলেও বিগত দু’-তিন দিন ধরে এখানকার স্বাস্থ্য নিয়ামক দফতর ‘আরআইভিএম’ থেকে জানানো হচ্ছে যে সংক্রমণের হার এখানে এখন একটু কমছে। তবে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ জারি আছে 28 এ এপ্রিল অবধি।

স্বামীর চাকরিসূত্রে বহু বছর ভিন দেশে কাটিয়েও এ রকম কঠিন সময়ের সম্মুখীন হইনি। এই মহাসঙ্কট যে কবে কাটবে বুঝতে পারছি না!

মালবিকা আদক

হার্লেম, নেদারল্যান্ডস

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন,feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Netherlands COVID-19 Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE