Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
coronavirus

এত সাবধানী ছিলাম না, যতটা একটা ভাইরাস করে দিয়েছে

এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা ম‌‌নোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা ম‌‌নোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২০ ১৭:৩২
Share: Save:

স্বামীর কর্মসূত্রে গত দু’বছর আমরা থাকি ক্যালিফোর্নিয়াতে। গত ১৭ মার্চ থেকে শুরু হওয়া ‘শেল্টার ইন প্লেস’-এর কারণে আপাতত তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এখানে একপ্রকার ঘরবন্দি। প্রথমে ভেবেছিলাম আমি তো আর অফিস যাই না, এতে আমার আর কী বা এল-গেল, সপ্তাহান্তে রেস্তরাঁয় খাওয়াটা বন্ধ হবে এই যা! কিন্তু দেখলাম এর পরে অনেক কিছু বদলে গেল, আমাদের সবার অভ্যাসগুলোও।

এখানে সাধারণত রাস্তায়ে লোকজন কমই থাকে, তবে যে দিন থেকে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ জারি করা হল তার পর থেকে রাস্তাঘাটে লোকজন আরও কমে গেল মারাত্মক কিছুর আতঙ্কে। এখানে অবশ্য আমাদের বিকেলে হাঁটতে যাওয়া, সাইকেল চালানো, দৌড়দৌড়ি করে শরীরচর্চাতে কোনও বিধিনিষেধ নেই, খালি দুরত্ব বজায় রাখতে হচ্ছে অন্য মানুষের থেকে। আর লোকজন সবাই সেটা মেনেও চলছে। এতটাই মানছি যে একই ফুটপাত দিয়ে কাউকে আসতে দেখলে অপর জন ফুটপাত থেকে রাস্তায়ে নেমে পড়ছেন। খুব চেনা প্রতিবেশী বা বন্ধুদেরও দূর থেকে হাত নাড়ছি। বেশির ভাগ মানুষেরই মুখে মাস্ক।

‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণার কয়েক দিন পর থেকে ছোটদের খেলার পার্কগুলোতেও নোটিস ঝুলিয়ে লক করে দেওয়া হল। স্কুলের সব ক্লাস হচ্ছে অনলাইনে। ওইটুকু সময় বন্ধু আর শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দেখা, কথা বলাটাই বাচ্চাদের কাছে এখন অনেক। এই সময় ছোটরাও অনেক ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছে।

প্রথমে সবাই ভয়ই পেয়েছিল, খাবারদাবারের অভাব হবে না তো! অতঃপর প্রথম সপ্তাহেই খাবার মজুত করতে দৌড়লাম। বিশাল লাইনে ৩ ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে সবই পেয়েছিলাম যদিও। আমরা সৌভাগ্যবান যে এখনও খাবারের সঙ্কট আমাদের এই ছোট শহরে হয়েনি। বাঙালির ঘরে যা লাগে, সবই ইন্ডিয়ান স্টোরে আছে। নামী কিছু স্টোরে খাবার জিনিস, মুদির জিনিস থাকলেও ছিল না খালি টয়েলেট পেপার, টিস্যু পেপার, স্যানিটাইজার, ক্লিনিংয়ের জিনিসপত্র। তবে এখন এ সবের স্টক নতুন করে এসেছে আবার। এখন সব স্টোরেই ক্রেতা কম কিন্তু সচেতনতা অনেক বেশি। মুদির দোকানের মতো জায়গায় আমরা সবাই দূরত্ব বজায়ে রাখছি ৬ ফুট। সেখানে বয়স্ক মানুষদের কেনাকাটা করার জন্য আলাদা সময়ও বরাদ্দ করা হয়েছে।

আমি নিজেও আগে কখনও এত সাবধানী ছিলাম না, যতটা এই করোনাভাইরাস করে দিয়েছে। মুখে মাস্ক, পকেটে স্যানিটাইজার, ডিসইনফেকটিভ ওয়াইপস ছাড়া হাঁটতে বেরচ্ছি না। বাড়িতে নতুন নিয়ম হয়েছে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করতেই হবে। আমার চার বছরের ছোট মেয়েকে শিখিয়েছি সাবান দিয়ে কচলে হাত পরিষ্কার করতে, তার পরে জল দিয়ে ধুতে। সাবধানতার জেরে অনেক হাত ধোওয়ার ভিডিও দেখেছি এই ক’দিনে।

ভাবা যায়! এত সাবধানী!

স্বর্ণালী পাইক

ক্যালিফোর্নিয়া

ছবি: লেখক​

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

California Coronavirus Novel coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE